টানা
বর্ষণে জলাবদ্ধ হয়ে পড়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রী শাখাট
কক্ষেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে অন্তত পাঁচ
শতাধিক শিক্ষার্থী। গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে নিমজ্জিত হয় ভিক্টোরিয়া
সরকারি কলেজের প্রতিটি ভবনের নিচ তলা। শনিবার সকাল ১০ টা থেকে জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় সেসব নিমজ্জিত কক্ষেই পরীক্ষা দিতে
হয়েছে শিক্ষার্থীদের। ভোগান্তি ও দুর্ভোগের মাঝেই এসব কক্ষে পানিতে পা
ভিজিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাদের। এ কারণে পরীক্ষাশ মনোযোগ হারিয়েছেন অনেক
শিক্ষার্থী।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা আসা জয়নাল আবেদীন নামে এক
শিক্ষার্থী বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজের কলাভবনের নিচ তলায় পরীক্ষা দিয়েছি।
বেশিরভাগ সময়ে পা পানিতেই ছিল। আর উপরে তুললেই পা চুলকিয়ে বিরক্তিকর
পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী নাদিয়া
ইসলাম বলেন, যে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম, পরিবেশের কারণে সব
গুলিয়ে গিয়েছে।
জামাল উদ্দিন নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে
পরীক্ষা দিতে এসেছি চৌদ্দগ্রাম থেকে। এসে দেখি জলাবদ্ধ রুমের মধ্যে তার সিট
পড়েছে। কিছুই করার নেই - পানিতে পা রেখেই এক ঘণ্টার মতো পরীক্ষা দিতে
হয়েছে।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হয় দক্ষিণ পূর্ব বাংলার
অন্যতম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। এক দশক ধরে এই কলেজের জলাবদ্ধতায়
নিরষনে নানান পরিকল্পনা হলেও কখনোই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২৯ হাজার
শিক্ষার্থীর এই বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উচ্চ মাধ্যমিক শাখা এবং ডিগ্রি
শাখা দুটিই জলাবদ্ধতার শিকার হয়। শুধুমাত্র ডিগ্রি শাখাতেই বিভিন্ন ভবনের
৩৩ টি শ্রেণীকক্ষ জলাবদ্ধ থাকে বিভিন্ন সময়। এছাড়াও ছাত্রদের কাজী নজরুল
ইসলাম হল এবং ছাত্রীদের নবাব ফয়জুন্নেছা ছাত্রী নিবাসের নিচতলা জলাবদ্ধ হয়ে
থাকে প্রায়ই। শ্রেণিকক্ষ এবং ভবনের মত কলেজের মাঠ এবং চলাচলের রাস্তাগুলোও
নিমজ্জিত হয়ে থাকে পানিতে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ
প্রফেসর মোঃ আবুল বাশার ভূঁইয়া বলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের
ডিগ্রী শাখার জলাবদ্ধতা বিগত ২০ বছরের সমস্যা। কলেজের পাশে বিসিক শিল্পনগরী
এলাকা এবং অন্যান্য আবাসিক এলাকার পানি ক্যাম্পাসের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে উদ্যোগ নেওয়ার
কথা জানানো হলেও তারা জলাবদ্ধতা নিরসনে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। যে
কারণে এ বছরের পর বছর ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে কলেজের শিক্ষার্থী ও
শিক্ষকদের।
ক্ষোভ প্রকাশ করে অধ্যক্ষ আবুল বাশার ভূঁইয়া আরো বলেন, এই
কলেজের প্রিন্সিপাল আসে প্রিন্সিপাল যায় - কিন্তু সমস্যার সমাধান হয় না।
আমিও এসে উদ্যোগ গ্রহন করলাম। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অনেক
শিক্ষার্থী শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় আছে - তারা চাইলেও কলেজটির দিকে
নজর দিতে পারেন। এখানকার শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও হোস্টেলে থাকার ভোগান্তি
আসলেই চরমে পৌঁছে যাচ্ছে।