কবির হোসেন, তিতাসঃ
কুমিল্লার
তিতাসে পাবলিক টয়লেটে নকলনবিশ কর্মচারীদের কার্যালয় করায় ১৫ দিন ধরে
দলিলের নকল লিখা বন্ধ রেখেছে নকলনবিশ কর্মচারীরা। এতে প্রায় ২ হাজার গ্রাহক
ভোগান্তিতে পড়েছে। পাবলিক টয়লেট এখন নকলনবিশ কর্মচারীদের কার্যালয় এমন খবর
দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন পোর্টালসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ
হলে, সাব-রেজিস্টারকে কারণ দশানো নোটিশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসক। অপরদিকে
দলিলের নকল লেখা বন্ধ রাখায় একজন নকলনবিশকে শোকজ করেছে জেলা রেজিস্ট্রার।
সরেজমিনে
গিয়ে দেখা যায়, চারতলা ভবনের নীচতলার দক্ষিণ সারির অফিসের জন্য চারটি কক্ষ
রয়েছে। পশ্চিম দিকের পাবলিক টয়লেটের পরে চারটি কক্ষের মধ্যে
মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস, সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাস, সিড়িঁ সংলগ্ন মোটর সাইকেল
রাখার গ্যারেজ ও নকলনবিশদের কক্ষ। নকলনবিশদের কক্ষের মধ্যে পাটিশন দিয়ে
ছোট্ট আরেকটি কক্ষ রয়েছে, এটি সাব-রেজিস্ট্রারের খাস কামরা হিসেবে ব্যবহৃত
হয়ে আসছিল। গত জুন মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নিজস্ব ভবনে চলে
জান, মোটর সাইকেলের জন্য আলাদা গ্যারেজ তৈরী হওয়ায় উক্ত দুটি কক্ষ খালি হয়।
পরে জুন মাসের উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় উক্ত দুটি কক্ষের মধ্যে
একটি প্রাণিসম্পদ অফিসের মিনি ল্যাব ও আরেকটি সাব রেজিস্ট্রারের কাছে ভাড়া
দেওয়া হয়। এদিকে, সাব রেজিস্ট্রার নকলনবিশদের কক্ষটি খালি করে তাদেরকে
পাশ্ববর্তী পাবলিক টয়লেটের অবকাঠামো পরিবর্তন করে নকলনবিশদের স্থানান্তর
করে। যে কক্ষটিতে নকলনবিশরা এতদিন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল সেটি খাস কামরা
হিসেবে ব্যবহারের জন্য মাঝের দেয়াল পরিবর্তন করে সাব রেজিস্ট্রার একটি নতুন
টয়লেট নির্মাণ করেন। নকলনবিশদের ব্যবহৃত পাবলিক টয়লেটে স্থানান্তর করায় গত
১৬ জুলাই থেকে ১৫জন নকলনবিশ তাদের দলিলের নকল লেখা বন্ধ রেখেছে।
সাব
রেজিস্ট্রার অফিসের একাধিক নকলনবিশ জানান, আগের কক্ষটি অনেক বড় ছিল। তারপরও
সেখানে ১৫জন কাজ করা কঠিন ছিল। আমাদের দাবি ছিল আমাদের কক্ষ বড় করে দেওয়া
কিন্তু সাব রেজিস্ট্রার আমাদেরকে একটি পাবলিক টয়লেটে স্থানান্তর করেছে।
কক্ষটিতে ৫জন বসা অসম্ভব, সেখানে ১৫জন কিভাবে কাজ করবো? তাই আমরা দলিলের
নকল কপি লেখা বন্ধ রেখেছি। তারা অভিযোগ করেন, জেলা সাব রেজিস্ট্রার আমাদের
মানবিক দিক না দেখে একজনকে শোকজ করেছে। তারা জানান, গত ১৫ দিনে প্রায় ২
হাজার দলিলের নকলের আবেদন জমা পড়েছে।
দলিল লিখক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি
মো.জাকির হোসেন বলেন,নকল না লিখার কারনে আমরা খুব সমস্যায় আছি এবং অনেক
গ্রহীতা তারা নকল না পাওয়ার কারনে জমি খারিজ করতে পারছেনা। এবিষয়টি দ্রুত
সমাধান করা দরকার।
এবিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো: শরীফুল ইসলাম নিকট
মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এটা আমাদের ইন্টারনাল বিষয়,আগের কক্ষে
সংস্কার কাজ চলছে, ২০/২৫ দিন পর এসে খবর নিয়েন তিনি আরও বলেন আমাদের কাকে
কোথায় বসতে দিব সেইটা আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ আছে।
উপজেলা নির্বাহী
অফিসার সুমাইয়া মমিন জানান, ভবনের নীচতলার দুটি কক্ষ খালি হওয়ায় একটি
প্রাণিসম্পদ অফিস ও অপরটি সাব রেজিস্ট্রার অফিসকে সরকারি বিধি মোতাবেক ভাড়া
দেওয়া হয়েছে। পাবলিক টয়লেট অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য কাউকে অনুমতি
দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আমাদের নজরে আসায় সাব রেজিস্ট্রারের নিকট ব্যাখ্যা
চাওয়া হয়েছে।
ছবির ক্যাপশনঃ তিতাস উপজেলা সাব-রেজিস্টার আওতাভুক্ত নকলনবিশ কর্মচারীরা নকল লিখা বন্ধ রেখে এইভাবেই বসে ছোট্ট একটি কক্ষে।