চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাত চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আদালতের
নির্দেশে ২৭ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)
মামলাটি করেন বলে চাঁদপুর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের নাজির ফখরুদ্দিন
আহমেদ স্বপন জানান।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল হাসান
মঙ্গলবার বলেন, ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন নির্যাতন ও হেফাজতে
মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলাটি করেছেন। মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছে থানার এসআই আরিফ ইফতেখারকে।
ভুক্তভোগী মো. খোকন ফরিদগঞ্জ উপজেলার
গুপ্টি সরদার বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে ফরিদগঞ্জ
থানায় চারটি মামলা আছে।
মামলার বরাতে জানা যায়, ২৮ নভেম্বর একটি
ডাকাতির ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন উপজেলার
গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সাইসাঙ্গা গ্রামের মিজি বাড়ির রহিম বাদশার স্ত্রী
পেয়ারা বেগম। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন খোকনসহ তিনজন।
মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ১৬ ডিসেম্বর তিন আসামিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম
আমলি আদালতে হাজির করেন এবং খোকনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির
আবেদন করেন। জবানবন্দির সময় আসামি তার উপর পুলিশি নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
বিচারক
আসামিকে পরীক্ষা করে নির্যাতনের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করেন। একই
সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের
মধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকে মামলার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আসামিকে ২৪
ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে
নির্দেশ দেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর আসামির স্বাস্থ্য পরীক্ষা
করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রানা সাহা ও আসিবুল হাসান চৌধুরী
প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামির উভয় পায়ের উরুর ওপর একাধিক
নীলাফুলা জখম রয়েছে; যা আসামির বর্ণনামতে চার দিন আগের।
এদিকে আদালতের
মামলা দায়েরের নির্দেশের পর ২৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ
সার্কেল) মুকুর চাকমা ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতার কথা বলে তদন্তের জন্য
১৫ দিনের সময় প্রার্থনা করেন। তবে, বিচারক তা নামঞ্জুর করেন। তারপরই
মামলাটি করা হয়।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার রবিউল হাসান বলেন, মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
