নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা নগরের রেসকোর্স এলাকায় মিলন আক্তার (৫৪) নামে এক নারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর উত্তর রেসকোর্সের কাঠেরপুল এলাকার মজুমদার ভিলার দ্বিতীয় তলার ডানপাশের ফ্ল্যাট থেকে খাটের নিচ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মিলন আক্তারের বাড়ি বুড়িচং উপজেলার নিমসার (শিকারপুর) গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রেসকোর্স মজুমদার ভিলায় একাই বসবাস করতেন।
খবর পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, র্যাব ও পিবিআই। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে লাশটি একদিন প‚র্বের এবং গলাকাটা। মরদেহে শরীরে কিছুটা পচন ধরেছে তাই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কুমিল্লা সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল মালিক জানান, ধারণা করা হচ্ছে লাশটি একদিন পুরনো। বিছানার চাদর দিয়ে মুড়িয়ে খাটের নিচে ফেলে রাখায় লাশে কিছুটা পচন ধরেছে। যে কারণে শরীরে কোন আঘাত আছে কিনা তা ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে। পুলিশ আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। তদন্ত চলমান আছে।
প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের স‚ত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে মিলন আক্তারের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে রেসকোর্সে মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। গত চার থেকে পাঁচ দিন আগে তার মা নোয়াখালীতে চিকিৎসার জন্য যান। এ সময় তিনি একাই বাসায় ছিলেন। তার তিন মেয়ের মধ্যে একজন ইউরোপে স্বামীর সঙ্গে থাকেন। আরেকজন বিবাহস‚ত্রে নোয়াখালীতে বসবাস করেন। আর তানজিনা আক্তার নামে আরেক মেয়ে রেসকোর্স এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
মেয়ে তানজিনা আক্তার জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ফোন করলে পাওয়া যায়নি। পরে নিজেই বাসায় এসে দরজা খুলে দেখতে পান মায়ের অনুপস্থিতি। খাটের নিচে রক্ত দেখে তিনি হকচকিয়ে থাকেন এবং দ্রæত পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাতিজা মো. মাসুদ বলেন, গতকাল সকালে আমার সঙ্গে ফুফুর কথা হয়েছিল। আজ শুনছি ফুফু মারা গেছে। খাটের নিচে লাশটি কিভাবে গেল, এটি নিশ্চয়ই হত্যাকাÐ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি হত্যাকাÐের সম্ভাবনা হিসেবে ধরা হচ্ছে। তবে বিস্তারিত তদন্তের পরই চ‚ড়ান্ত তথ্য জানা যাবে। নিহতের ঘরে ঢুকে দেখা গেছে, আর আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তবে কিছু লুটপাট হয়েছে কিনা সেগুলো তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
ওসি আরও বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনার কারণ নির্ণয় এবং তদন্তে তৎপর রয়েছে।