কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের একাধিক নেতা-কর্মী রয়েছেন। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান।
তিনি জানান, সম্প্রতি বিদেশে পলাতক ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি সংগঠনের কয়েকজন নেতা তাদের অনুসারীদের মাধ্যমে দেশে সরকারের পতনের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তারা বিদেশ থেকে অর্থ পাঠিয়ে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে লোক জোগাড় করে ছোট ছোট ঝটিকা মিছিল, গোপন সভা এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির কাজ করাচ্ছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে সংগৃহীত ভাড়াটে লোকজনকে নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ১ মিনিটের ঝটিকা মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি হঠাৎ শুরু হয়ে দ্রুত শেষ হয়, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌঁছানোর আগেই সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশ মুখে মাস্ক ও রুমাল বেঁধে পরিচয় গোপন রাখে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও একাধিক বিদেশি আইডি থেকে মিছিলে অংশ নিতে উস্কানি ও অর্থের প্রলোভন দেওয়া হয়।
পুলিশের দাবি, এই সংগঠনটি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এ ঘটনায় কুমিল্লা জুড়ে গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
আটক ৪৫ ব্যক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের কোতোয়ালি উপদেষ্টা পাপন লাল (৫৫), দাউদকান্দি উপজেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহাগ মিয়া (৪০), একই উপজেলার আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুকবিল হোসেন (৫৮), বুড়িচং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর নুর তুষার (২৮) ও কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শের এ আলম।
কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও উস্কানিমূলক কার্যক্রমের অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা টাকার বিনিময়ে মিছিলে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। মামলা শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
