৯জুন সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয় পাশের্^র বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট, বিশেষ করে অমিক্রন এল,এল.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এন.বি ১.৮.১-এর সংক্রমন ছড়াচ্ছে। আইইডিসিআর এর উপদেষ্টা ডা: মোশতাক হুসেন করোনা বৃদ্ধিকে বলেছেন- মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা। তিনি বলেন, কভিড যে কোন মৌসুমে বাড়তে পারে। এখন বাড়ছে, তবে এটা এমন কোন ভেরিয়েন্ট নয় যে প্রাণঘাতী। তবে সাবধানতার কোন বিকল্প নেই। কারণ যে কোন ভাইরাস পুরোনা বা নতুন মিউটেশনের মাধ্যমে প্রাণঘাতী হতে পারে। দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৮০ জন হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনের। আর এ পর্যন্ত সুস্থ্য হল ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৮ জন। (১০.০৬.২৫ অব্দি)
সংক্রমন প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছেন- সাতবার প্রয়োজনমত সাবান দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত: ২৩ সেকেন্ড)। নাক, মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকুন। অপরিস্কার হাতে চোখ, কান ও মুখ স্পর্শ করবেন না। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক, মুখ, ঢেকে রাখুন। দেশের বিভিন্ন স্থল, নৌ ও বিমান বন্দরগুলোতে আইএইচ আর (ওঐজ-২০০৫) স্বাস্থ্য ডেস্কগুলোতে সতর্ক থাকা, হেলথ স্ক্রিনিং এবং সার্ভেইল্যান্স জোরদার করতে হবে। দেশের প্রবেশপথগুলোতে থার্মাল স্ক্যানার / ডিজিটাল হ্যান্ডহোল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন-টাচ টেকনিকে তাপমাত্রা নির্ণয় করতে হবে। স্বাস্থ্য কর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে মাস্ক, গ্লাভস এবং রোগ প্রতিরোধী পোষাক মজুদ করতে হবে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫টি নির্দেশনা-(১) কভিড-১৯ প্রটোকল অনুসরণ বাধ্যতামূলক। (২) করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড করে হাত ধুতে হবে। (৩) জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে এবং বাইরে বের হলে মাক্স পরতে হবে। (৪) হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু অথবা কুনই দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে। (৫) ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি শেষে আগামী ১৫জুন থেকে কলেজ, ২২ জুন থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৪জুন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলবে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরে যাত্রীদের হেলথ স্ক্রীনিং এর জন্য ইমিগ্রেশন এলাকায় প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট বসানো হয়েছে। মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক থার্মাল স্ক্যানার। চট্টগ্রামে এবছরে প্রথমবারের মত তিন জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে তাঁরা কোন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত তা এখনো নিশ্চিত করতে পারা যায়নি।
নতুন সাব-ভেরিয়েন্টের এমন সংক্রমনের আশংকায় দেশের বাইরে না যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনা ঝুঁকি মোকাবেলায় দেশের সব স্থল ও বিমান বন্দরে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।  
**আমরা আবার মাস্ক পরার দিকে ফিরে যাচ্ছি। 
ঈঙঠওউ-ঙসরপৎড়হ ঢইই অতীতের থেকে আলাদা কারণ এটি মারাত্মক এবং সনাক্ত করা সহজ নয়, তাই সকলকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 
১। নতুন ঈঙঠওউ-ঙসরপৎড়হ ঢইই এর লক্ষণগুলি হল:
র) কাশি নেই।
রর) জ্বর নেই। বেশিরভাগ লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:-
ররর) জয়েন্টে ব্যথা।
রা) মাথাব্যথা।
া) গলা ব্যথা।
ার) পিঠে ব্যথা।
ারর) নিউমোনিয়া।
াররর) নাটকীয়ভাবে ক্ষুধা হ্রাস পেয়েছে।
২। এছাড়াও, ঈঙঠওউ-ঙসরপৎড়হ ঢইই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং এর মৃত্যুর হারও বেশি।
৩। অতি অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষণগুলি অত্যন্ত তীব্র হয়ে উঠবে এবং স্পষ্ট লক্ষণগুলির অনুপস্থিতিতেও পরিবর্তন ঘটবে।
৪। তাই আপনাকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
* এই রূপটি  তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে এটি সরাসরি ফুসফুসের "জানালা" প্রভাবিত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখাতে শুরু করে। 
৫। ঈঙঠওউ-ঙসরপৎড়হ ঢইই-তে সংক্রামিত অল্প সংখ্যক রোগীকে জ্বর-মুক্ত এবং ব্যথা-মুক্ত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়,  তবে এক্স-রে তে  হালকা নিউমোনিয়া দেখা যায়। 
এছাড়াও, নাকের গহ্বরের মধ্য দিয়ে তুলার সোয়াব পরীক্ষা করে ঈঙঠওউ-ঙসরপৎড়হ ঢইই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং  নাসোফ্যারিঞ্জিয়াল পরীক্ষার সময় মিথ্যা নেতিবাচক পরীক্ষার উদাহরণ বাড়ছে। 
তাই এই ভাইরাসটি খুবই ধূর্ত। এর ফলে, ভাইরাসটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। সরাসরি মানুষের ফুসফুসকে সংক্রামিত করে, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে  এবং তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করে।
এটি ব্যাখ্যা করে যেকোন ঈঙঠওউ -ঙসরপৎড়হ ঢইই এত সংক্রামক এবং মারাত্মক হয়ে উঠেছে।
৬।  যতটা সম্ভব জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন,  খোলা জায়গায় এমনকি ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন,  মাস্কের উপযুক্ত স্তর পরুন এবং লক্ষণ ছাড়া কাশি বা হাঁচি না দিলে  ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন। 
এই  ঈঙঠওউ-ঙসরপৎড়হ ঢইই "ডঅঠঊ" প্রথম ঈঙঠওউ-১৯ মহামারীর চেয়েও মারাত্মক। 
* অতএব, বিচক্ষণ, বৈচিত্রময় এবং নিবিড় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। 
[বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সাথে এই বিভাগটি শেয়ার করতে ভুলবেন না]। 
অনুগ্রহ করে আপনার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের যতটা সম্ভব বলুন। 
নিরাপদ থাকার জন্য বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরতে ভুলবেন না।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ