নিজস্ব
প্রতিবেদক: ২০১৪ সালের ঐতিহাসিক ২৯ নভেম্বর। দিনটি ছিল শনিবার। কুমিল্লা
টাউন হল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মানুষের ঢলে। নগরীর আশপাশের সড়কগুলোতেও
উপচে পড়ে জনসমাগম। সকাল ১০টা থেকেই হাজারো নেতাকর্মী অপেক্ষায় ছিলেন আপসহীন
নেত্রী ও গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য শোনার জন্য। ঢাকা
থেকে সড়কপথে যাত্রা করে তিনি দুপুরের মধ্যেই কুমিল্লা সার্কিট হাউসে
পৌঁছান। বিকেলে টাউন হল মাঠের বিশাল জনসভায় উপস্থিত হয়ে দীর্ঘ প্রায় এক
ঘণ্টার বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী
বেগম খালেদা জিয়া।
বক্তব্যে তিনি দেশের ১৮ কোটি মানুষের পাওয়া-না পাওয়ার
বেদনা, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, গুম-খুন ও
গুপ্তহত্যা বন্ধ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি জাতীয়
নির্বাচনের দাবি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে কুমিল্লার গৌরবময় ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং
শিক্ষানগরী হিসেবে এর গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। উন্নয়ন থেকে
বঞ্চিত কুমিল্লাবাসীর কথাও উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে।
বক্তব্যের শুরুতে
কুমিল্লার সঙ্গে নিজের স্মৃতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর শহীদ
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পোস্টিং কুমিল্লা সেনানিবাসে থাকায় দীর্ঘদিন
এখানে বসবাস করেছেন তিনি। সেই সুবাদে কুমিল্লার মানুষের সঙ্গে তাঁর
হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই কুমিল্লায় এলেই তাঁর মনে হয় নিজের শহরে ফিরে
এসেছেন। তিনি বলেন, কুমিল্লা একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জনপদ, যেখানে বহু
গুণী মানুষের জন্ম হয়েছে। অথচ এই কুমিল্লাই দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার শিকার।
জাতীয়তাবাদী দল যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই কুমিল্লার উন্নয়ন কাজ করে। জনগণ
যা চায়, আমরাও তাই চাই। আল্লাহ তায়ালা সুযোগ দিলে কুমিল্লাকে একটি আধুনিক
শহরে রূপান্তর করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আইয়ুব খানের শাসনামলে কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।
পরবর্তীতে তাঁর সরকারের আমলেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। শুধু
তাই নয়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজও হয়েছে। এটাই
উন্নয়নের রাজনীতি, যেখানে জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্রই মূল লক্ষ্য। অথচ
বর্তমানে যারা ক্ষমতায় রয়েছে, তারা উন্নয়ন ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়, তারা
কেবল ক্ষমতার লোভেই রাজনীতি করে যাচ্ছে।
