তীব্র
শীত আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে কুমিল্লা। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা
না মেলায় হিমেল হাওয়ায় জেলাজুড়ে হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। সর্বোচ্চ ও
সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ
করে শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষজন।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আবহাওয়া
ইনচার্জসৈয়দ আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) জেলায়
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রিসেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ
তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৭.৫ ডিগ্রিসেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে,
গত বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও বিপত্তি
ঘটিয়েছে কুয়াশা। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার আগে সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে দিনের
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়তে পারেনি, যার কারণে দিনভর তীব্র শীত অনুভূত
হয়েছে।
বর্তমানে কুমিল্লায় কারিগরিভাবে কোনো শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও
শীঘ্রই জেলাটি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইনচার্জসৈয়দ আরিফুজ্জামান জানান, "সাধারণত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০
ডিগ্রিসেলসিয়াসে নামলে আমরা সেটিকে শৈত্যপ্রবাহ বলি। বর্তমানে কুমিল্লায়
শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও এর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের জন্য
ইতিমধ্যেশৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।"
আগামী ৩ দিনের
পূর্বাভাস আগামী ৭২ ঘণ্টা বা ৩ দিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে,
কুমিল্লার আবহাওয়ায় বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে বর্তমান
শীত ও কুয়াশার পরিস্থিতি আরও কিছুটা বাড়তে পারে। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে
তিন দিন সারাদিন কুয়াশাচ্ছন্ন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণত রাত ১০টার পর
থেকে কুয়াশা শুরু হয়ে পরদিন সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্তস্থায়ী হচ্ছে।
হঠাৎ
শীতের তীব্রতা বাড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যানবাহন চলাচল
বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে
দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক। অন্যদিকে, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলা ও
উপজেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা
নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
শহরের
বাজারগুলোতে গরম কাপড়ের চাহিদা তুঙ্গে থাকলেও বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। কাজ
না পেয়ে অনেককে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
