মালয়েশিয়ার
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি কেলেঙ্কারির দ্বিতীয়
বড় মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট শুক্রবার রায়ে
তাকে অর্থপাচারের ২১টি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের চারটি অভিযোগে দোষী ঘোষণা
করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আদালতের
রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম সম্পদ তহবিল ওয়ানএমডিবি থেকে অবৈধভাবে ২
দশমিক ২ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ৫৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার) নাজিবের
ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
বিচারক কলিন লরেন্স সেকেরাহ
বলেন, অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, নাজিবের এমন দাবি নাকচ হয়ে
গেছে। নাজিব নিজের ক্ষমতাশালী অবস্থানের অপব্যবহার করেছেন।
প্রতিটি অভিযোগে ১৫ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে চূড়ান্ত সাজা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
প্রসিকিউশন
পক্ষ জানায়, প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও ওয়ানএমডিবির উপদেষ্টা বোর্ডের
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নাজিব বিপুল অঙ্কের অর্থ তহবিল থেকে
নিজের হিসাবে সরিয়েছিলেন। এর আগে ২০২০ সালে ওয়ানএমডিবির প্রায় ৯৯ লাখ ডলার
আত্মসাতের দায়ে তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা পরে কমিয়ে ছয় বছর করা
হয়।
এবারের মামলাটি নাজিবের দ্বিতীয় বিচার এবং এটিকে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কারণ, এতে সরাসরি ওয়ানএমডিবি সংশ্লিষ্ট
সংস্থা ও অনেক বড় অঙ্কের অর্থ জড়িত। সাত বছর ধরে চলা এই দীর্ঘ
বিচারপ্রক্রিয়ায় ৭৬ জন সাক্ষ্য দেন, তাদের মধ্যে নাজিব নিজেও ছিলেন।
গত
বছর ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি সামলাতে ব্যর্থতার জন্য নাজিব দুঃখ প্রকাশ করলেও
সাম্প্রতিক বিচারে তিনি দাবি করেন, পলাতক মালয়েশীয় অর্থলগ্নিকারী জো লোর
কারণে তিনি বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। জো লো ২০১৬ সাল থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে
পলাতক হিসেবে অভিযুক্ত। তবে বিচারক সেকেরাহ বলেন, প্রমাণে নাজিব ও জো লোর
মধ্যে অস্পষ্ট নয়, বরং স্পষ্ট সম্পর্ক ও যোগাযোগ পাওয়া গেছে এবং জো লো
নাজিবের প্রক্সি ও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতেন।
আদালত নাজিবের সেই
দাবিও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে অবৈধভাবে পাওয়া কিছু
অর্থ সৌদি রাজপরিবারের অনুদান বলে তিনি মনে করেছিলেন।
২০১৫ সালে
প্রকাশ্যে আসা ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বড় মোড় নেয়। এই
কেলেঙ্কারিই ২০১৮ সালে ছয় দশকের শাসন শেষে ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল
অর্গানাইজেশনকে (উমনো) ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা রাখে।
