যুক্তরাজ্যে দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ঢাকায় নামার পর তারেক রহমানের বাড়ি পৌঁছাতে লেগে গেল প্রায় ৯ ঘণ্টা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানে ১৯৬ নম্বর বাড়িতে পৌঁছান তিনি। পাশের বাড়ি ‘ফিরোজা’ মা খালেদা জিয়ার আবাসস্থল। এদিন বেলা পৌনে ১২টায় শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইট। তাতে তারেক রহমান তার সহধর্মিণী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান। সেখানে উষ্ণ অভ্যর্থনা শেষে বেলা সাড়ে ১২টায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বাসে চেপে ৩০০ ফিটের পথে রওনা হন বিএনপি নেতা। খুব ধীরগতিতে চলা গাড়িবহর সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে লেগে যায় সোয়া ৩ ঘণ্টা। এসময় বাসের সামনে দাঁড়িয়ে তারেক রহমান হাত নেড়ে সড়কের দুই পাশে অপেক্ষমান নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। সমাবেশ মঞ্চে উঠে বিশেষ চেয়ার সরিয়ে সাধারণ চেয়ারে বসেন তারেক রহমান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে ১৫ মিনিটের মত বক্তব্য দেন তারেক।
এরপর বিকাল সোয়া ৪টায় তিনশ ফিট হয়ে পাশের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে। সেখানে মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখে গুলশানের বাড়ির পথে রওনা হন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। এরপর এক ঘণ্টায় তারেক এবং পরিবারের সদস্যরা পৌঁছান গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে। তারেকের বাবা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তার মাকে বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। মাস কয়েক আগে এ বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজু।
এদিন পূর্বাচলের তিনশো ফিটে গণসংবর্ধনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন- বিভিন্ন আধিপত্যবাদ শক্তির গুপ্তচরেরা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে এখন লিপ্ত রয়েছে। আমাদেরকে ধৈর্যশীল হতে হবে; আমাদেরকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। “বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের যে সদস্যরা আছেন, আপনারাই আগামী দিন দেশকে নেতৃত্ব দেবেন, দেশকে গড়ে তুলবেন; এই দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মের সদস্যদেরকে আজ গ্রহণ করতে হবে, যাতে করে এই দেশকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারি। শক্ত ভিত্তির উপরে—গণতান্ত্রিক ভিত্তি, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপরে যাতে এই দেশকে আমরা গড়ে তুলতে পারি।”
যুক্তরাজ্যে দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে ঢাকার তিনশ ফিটে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তারেক রহমান।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “প্রিয় ভাই-বোনেরা, কয়েকদিন আগে এই বাংলাদেশের চব্বিশের আন্দোলনের এক সাহসী, প্রজন্মের এক সাহসী সদস্য ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে, ওসমান হাদি শহীদ হয়েছে। প্রিয় ভাই-বোনেরা, ওসমান হাদি চেয়েছিল-এদেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। এই দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক।
“আজ চব্বিশের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, ওসমান হাদিসহ, একাত্তরে যারা শহীদ হয়েছেন, বিগত স্বৈরাচারের সময়ে বিভিন্নভাবে গুম খুনের শিকার হয়েছেন, এই মানুষগুলোর রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয়-আসুন, আমরা আমাদের সেই প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেখানে আমরা সকলে মিলে কাজ করব; যেখানে আমরা সকলে মিলে আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে গড়ে তুলব।“
বিমানবন্দর থেকে সোয়া ৩ ঘণ্টায় সমাবেশস্থলে তারেক:
দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেই ঢাকার ৩০০ ফিট সড়কে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে বিএনপি নেতা তারেক রহমান। সেখানে দলের তরফে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে; নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন বিএনপি নেতা। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টায় তারেক রহমান ও তার পরিবারকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইট ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে উষ্ণ অভ্যর্থনার পর বেলা সাড়ে ১২টায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বাসে চড়ে তিনি ৩০০ ফিটের পথে রওনা হন। খুব ধীরে চলা গাড়িবহরটি বিকাল পৌনে ৪টায় সমাবেশস্থলে পৌঁছায়।
বিশেষ চেয়ার সরিয়ে সাধারণে তারেক:
দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন পেরিয়ে দেশে ফিরেই তারেক রহমান যে মঞ্চে বক্তৃতা করেছেন, সেই মঞ্চে উঠে বিশেষ চেয়ার সরিয়ে সাধারণ চেয়ারে বসে পড়েন বিএনপি নেতা।
এদিন বেলা পৌনে ১২টায় শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছার পর তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সোয়া ৩ ঘণ্টায় তিনি বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিটের সমাবেশস্থলে পৌঁছান তিনি। সেখানে বক্তৃতা করে এভারকেয়ার হাসপাতালে মাকে দেখতে গেছেন তারেক রহমান।
