বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫
১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
অস্বাভাবিক দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ জরুরি
প্রকাশ: রোববার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১:৩১ এএম |

অস্বাভাবিক দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ জরুরি
বাজারে চামড়ার দাম কম থাকলেও চামড়ার তৈরি পণ্যে অস্বাভাবিক মুনাফা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সাধারণত মাঝারি আকারের চামড়া ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রক্রিয়াকরণের পর তা থেকে ২০ বর্গফুটের মতো চামড়া পাওয়া যায়। এই চামড়া থেকে অন্তত পাঁচ জোড়া জুতা প্রস্তুত হয়। দেশের নামিদামি জুতা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এক জোড়া জুতা বিক্রি করছে ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায়।
বাংলাদেশে কাঁচা চামড়ার দাম বছরের পর বছর ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। প্রতিবছর ঈদুল আজহার সময় চামড়ার সমস্যা প্রকট হয়। সরকার কাঁচা চামড়ার দাম বেঁধে দিলেও বাজারে সে দামে বিক্রি হয় না। সরকার পরিবর্তনের পর এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ২৬ মে পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোরবানির পশুর দাম যতটা বেড়েছে, সে তুলনায় কাঁচা চামড়ার দাম নেমে এসেছে অর্ধেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি শ্রমিক অসন্তোষ এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার কারণে অতিমুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। পাদুকাশিল্পে উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, সেই সঙ্গে চ্যালেঞ্জও অনেক।
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, ৫০০ টাকার একটি গরুর চামড়ায় লবণ লাগে ১০ থেকে ১১ কেজির মতো। প্রতি কেজির দাম ১৩ টাকা ধরলে ১৪০ টাকার লবণ লাগে। প্রতি পিস কাঁচা চামড়া লবণ লাগাতে শ্রমিককে মজুরি দিতে হয় ৫০ থেকে ৮০ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খরচ তো রয়েছেই। এভাবে এক পিস চামড়া সংগ্রহ করার পর ট্যানারিতে ফিনিশড প্রোডাক্ট বা চূড়ান্ত পর্যায়ে পর্যন্ত আসতে খরচ হয় ২ হাজার ৬৫০ টাকা। নামিদামি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য ভালো ডিজাইনার, দক্ষ  কারিগরও রাখেন। পণ্যের মূল্য নির্ধারণের সময় ভাড়া ও সেলসম্যানের বেতনও ধরা হয়। 
এ জন্য সেই কোম্পানিগুলো প্রোডাক্টের দাম বেশি রাখে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারি মোড়েও অরিজিনাল চামড়া দিয়ে জুতা-স্যান্ডেল তৈরি হচ্ছে। এগুলোর কোয়ালিটিও ভালো। অথচ সেগুলোর দাম অনেক কম। এ ক্ষেত্রে কেমিক্যালের দাম কমলে চামড়া পাকাকরণের খরচ অনেক কমে যাবে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের কারখানা চালু এবং ফুটওয়্যার কারখানার কারিগরদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে ভালো মানের পণ্য উৎপাদন হবে। এতে করে চামড়ার তৈরি জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, মানিব্যাগও ভোক্তারা কম দামে পাবেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের (এমআরপি) চেয়ে বেশি দাম নিলে আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়। এপেক্স, বাটা বা কোনো কোম্পানি তাদের পণ্যে যে দাম নির্ধারণ করে, এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে তারা এটা করছে। শিল্পনীতিতে দাম নির্ধারণে হয়তো কোনো কিছু বলার নেই। তাই যেকোনো কোম্পানি পণ্যের উৎপাদন খরচের সঙ্গে লাভ যোগ করে এমআরপি নির্ধারণ করে। কেউ সেটা বেশি দাম মনে করলে কিনবে না।
পাদুকাশিল্প দেশের একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। এ শিল্পকে টেকসইকরণে সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। চামড়াজাত দ্রব্য থেকে উৎপাদিত পণ্যে অস্বাভাবিক দাম নির্ধারণ করছেন কতিপয় ব্যবসায়ী। এ ক্ষেত্রে সরকারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে ভোক্তা সচেতনতা বাড়াতেও পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রত্যাশা করছি, সরকার পাদুকাশিল্পে অতিমুনাফা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হবে।












http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
আসন বিন্যাসের খসড়ায় কার লাভ, কার ক্ষতি
যা আছে খসড়া পুন:বিন্যাসে
সীমানা নির্ধারণে দাবি-আপত্তির সুযোগ ১১ দিন
তিতাসে ১৫ দিন যাবৎ দলিলের নকল সরবরাহ বন্ধ : ভোগান্তি দুই হাজার গ্রাহক
কুঁচিয়া বিক্রির টাকায়সংসার চলে নরেশের
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
আসন বিন্যাসের খসড়ায় কার লাভ, কার ক্ষতি
মহাসড়কের কুমিল্লায় ডাকাত ও ছিনতাইকারীর আতঙ্ক
কুমিল্লায় ঘর থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার
দাউদকান্দিতে সরকারী মার্কেটের জায়গা অবৈধ দখলের মহোৎসব
ভারতে অনুপ্রবেশের অপরাধে বাংলাদেশী যুবক আটক
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২