জাতীয়
স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের এক কোণায় মুহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম। যেখানে
বছরের বেশির ভাগ সময় কাটে নিস্তব্ধতায়। জাতীয় বক্সিংয়ে বক্সারদের পদচারণা
হলেও গণমাধ্যমের তেমন ভিড় থাকে না। তবে এবার আমেরিকান প্রবাসী জিনাত ফেরদৌস
জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ায় মিডিয়ার আগ্রহ ব্যাপক।
গত পরশু শুরু
হয়েছে জাতীয় বক্সিং প্রতিযোগিতা। আজ দুপুরে রিংয়ে নেমেছিলেন জিনাত ফেরদৌস।
৫২ কেজি ওজন শ্রেণীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আসিয়া খাতুনের মোকাবেলা করেন
তিনি। স্বাভাবিকভাবেই জিনাত এই লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রথমবার
রিংয়ে নামার পর জিনাতের অনুভূতি, ‘ভালো লাগছে, এই প্রথম বাংলাদেশে খেললাম।
সবাই অনেক উৎসাহ দিয়েছে। মেয়েটা (আসিয়া) ভালোই ফাইট করার চেষ্টা করেছে।
মাইন্ড সেট স্ট্রং, গিভ আপ (ম্যাচ ছেড়ে দেওয়া) করেনি। টেকনিক্যালি একটু
পিছিয়ে তবে সাহস আছে।’
ফুটবল ও ক্রিকেট ছাড়া দেশের অন্য খেলাগুলো সব দিক
থেকেই পিছিয়ে। ভালো মানের ভেন্যু ও অনুশীলন সুবিধাও পান না ক্রীড়াবিদরা।
তবে বক্সিং স্টেডিয়ামের রিং নিয়ে সন্তুষ্টিই প্রকাশ করলেন জিনাত, ‘সমস্যা
হয়নি। ভালোই লেগেছে।’
৫২ কেজি ওজন শ্রেণীতে নারী বক্সার ছিলেন ৬ জন।
জিনাত প্রথম পর্যায়ে বাই পান। আজ তিনি সরাসরি সেমিফাইনালে খেলেন। আসিয়াকে
হারিয়ে আগামীকাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়বেন। আজ অনুষ্ঠিত আরেক
সেমিফাইনালে বাংলাদেশ আনসারের আফরা খন্দকার তূর্য বক্সিং ক্লাবের অন্তরা
আক্তার বৃষ্টিকে পরাজিত করেন। আগামীকাল আফরা জিনাতের বিরুদ্ধে লড়বেন।
বিকেএসপির
সাবেক শিক্ষার্থী আফরার আরেকটি পরিচয় তিনি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের
অধিনায়ক আফিদা খন্দকারের বড় বোন। আফরা কয়েক বছর ধরে বক্সিং করলেও আফিদা
খন্দকার কয়েক মাস আগে জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক হওয়ার পরই মূলত তিনি
আলোচনায় এসেছেন। আগামীকাল ফাইনাল নিয়ে আফরার মন্তব্য, ‘জিনাত অনেক ভালো
মানের বক্সার। আশা করি আগামীকাল একটি উপভোগ্য ফাইনাল হবে।’
জিনাত
আমেরিকার নিউইয়র্কে থাকেন। গত দুই বছর বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে
খেললেও ঢাকায় অংশগ্রহণ এই প্রথম। তাই তার বাংলাদেশের বক্সারদের সম্পর্কে
ধারণা কম। ফাইনালের প্রতিপক্ষ আফরাকে নিয়ে জিনাতের মন্তব্য, ‘আসলে আমি
প্রতিপক্ষ নিয়ে সেভাবে চিন্তা করি না। যে-ই হোক, নিজের খেলাটা খেলে জিততে
চাই। বাংলাদেশে প্রথমবার খেলতে এসেছি, চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্মরণীয় করতে চাই।’
বক্সিং
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশের মহাদেশীয় গেমস পর্যায়ে এখন
পর্যন্ত একমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য বক্সিংয়ে। কয়েকটি জেলায় বক্সিংয়ের বেশ
চর্চা থাকলেও খেলাটি তেমন বিকশিত হতে পারেনি। নারী প্রবাসী বক্সার জিনাতের
আগমনে একটু আলোচনায় এসেছে। বক্সাররাও তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। আজ
বক্সিং রিংয়ের সামনে সবাই তার সঙ্গে ছবি তুলতে ও পরামর্শ নিতে ব্যস্ত
ছিলেন।