সন্তানের স্বপ্ন পূরণে আবারও নজির গড়লেন এক প্রবাসী বাবা। প্রিয় ছেলেকে খুশি রাখতে বিয়ের দিন হেলিকপ্টারে করে বরযাত্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন তিনি। বর আর কনের বাড়ির দূরত্ব দশ কিলোমিটার হলেও সন্তানের স্বপ্ন পুরনে এ কাজটি করেন বাবা। ব্যতিক্রমী এই আয়োজন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী জালাল আহমেদের ২য় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে পার্শ্ববর্তী নোয়াখালি জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী বোরহান উদ্দিন চৌধুরীর একমাত্র কন্যা রাবেয়া চৌধুরী জান্নাত এর সাথে সামাজিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন। শুক্রবার নিজ বাড়িতে বৌ-ভাত অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। জালাল আহমেদের পূর্বপূরুষদের নিবাস ছিল পার্শ্ববর্র্তী মনোহরগঞ্জ উপজেলার ভোগই গ্রামে।
ছেলের ছোটবেলার একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে নিজ উদ্যোগে এই আয়োজন করেন তিনি। এর আগেও বড় ছেলে জাকির হোসেনের বউকেও হেলিকপ্টারে বাড়ি আনেন তিনি।জালাল আহমেদ দীর্ঘ ৩৫ বছর কুয়েতে ব্যবসা করেন। বার বার হেলিকপ্টারে বাড়িতে আসায় এলাকায় তিনি হেলিকপ্টার জালাল নামে পরিচিত হয়ে উঠেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল হেলিকপ্টারে করে গিয়ে বিয়ে করব এবং বউকে ঘরে তুলব। কখনো ভাবিনি সেটা সত্যি হবে। আব্বুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা নেই।”
এদিকে, বিয়ের দিন দুপুরে হেলিকপ্টারটি বরবাহী দল নিয়ে কনের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। আকাশে চক্কর দিতে দিতে হেলিকপ্টারটি যখন নির্ধারিত জায়গায় অবতরণ করে, তখন স্থানীয় মানুষ ও উৎসুক দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়। অনেকেই স্মার্ট ফোনে সেই মুহূর্ত ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
স্থানীয়দের কেউ কেউ জানান, এর আগে এমন আয়োজন কখনও দেখেননি তারা। এটি এলাকায় এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করে।প্রতিবেশীরা জানান, জালাল উদ্দিন তার বড় ছেলের বউকেও হেলিকপ্টারে চড়িয়ে ঘরে তুলেন। তার শখ পুত্র বধুদের এভাবে বরণ করা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর (বুধবার) হেলিকপ্টারে চড়িয়ে কনের বাড়িতে বরযাত্রী নিয়ে বড় ছেলে জাকির হোসেনের বিয়ে দেন প্রবাসী জালাল আহমেদ। ওই কনের বাড়ি ছিল একই ইউনিয়নের ধামুরপাড় গ্রামে। ওই গ্রামের ডা. গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে ফারজানা আঁখির সঙ্গে বিয়ে হয় জাকিরের।