কুমিল্লার
বুড়িচং উপজেলার কোরপাই- মনঘাটা - আবিদপুর সড়কটির ৭ কিলোমিটার এর মধ্যে ৩
কিলোমিটার অংশজুড়ে অসংখ্য খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়া প্রতিদিন যানবাহন চলাচলে
চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে হাজার হাজার মানুষসহ কৃষকরা তাদের উৎপাদিত
পণ্য বাজারজাত করণে চরম অসুবিধা ছাড়াও বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে প্রতিদিন।
এছাড়া বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে চোট বড় পুকুরের মত হয়ে যায়। বিগত ৮ বছরে
ধরে এ সড়কে কোন উন্নয়ন বা সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। যার ফলে দিন সড়কটি
বেহাল দশায় পতিত হচ্ছে।
সরজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয় লোকজন জানান , জেলার
বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের এ কোরপাই- মনঘাটা- আবিদপুর এলাকায়। প্রায় ৭
কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির কোরপাই পোষ্ট অফিস ,কাকিয়ারচর,মনঘাটা পর্যন্ত প্রায়
৩ কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘ ৮ বছরের অধিক সময় ধরে সংস্কারের অভাবে যান
চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে উল্লেখিত
গ্রামগুলো ছাড়াও পাশ্ববর্তী লোয়ারচর, আবিদপুর,মিথলমা, ভারেল্লা, দেবিদ্বার
উপজেলার ব্রাহ্মনখাড়া ,প্রেমূ , ছোটনা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চলাচলে
চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অন্যদিকে নিমসার রয়েছে জুনাব আলী কলেজ, তাহেরা
জুনাব আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নিমসার উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বেসরকারি
বিভিন্ন বিদ্যালয় সহ ব্যাংক বীমা অফিস আদালত এবং আবিদপুর রয়েছে স্কুল কলেজ,
মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন হাট বাজার। এসমস্ত সড়ক দিয়ে ওই সমস্ত এলাকার শত শত
ছাত্র ছাত্রী, সাধারণ মানুষ সহ ব্যবসায়ীরা যান বাহনে করে চলাচল করতে পোহাতে
হচ্ছে বেঘাত। এছাড়া এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিভিন্ন যান বাহনে করে
হাসপাতালে নিতে নিতে অনেক রোগী মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়ে। সেই ভাবে গর্ভবতী
মহিলাদের কে হাসপাতালে নিতে নিতে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও কৃষি
অধ্যূষিত এসব গ্রামের শত শত কৃষক তাদের উৎপাদিত তরিতরকারী এই সড়ক পথে
ট্রাক্টর, সিএনজি অটোরিক্সা,ইজিবাইক,ভ্যানযোগে প্রতিদিন দেশের অন্যতম বৃহৎ
পাইকারী কাঁচাবাজার নিমসারে এই সড়ক পথেই নিয়ে আসে। সড়কটি খানাখন্দকে ভরা
থাকায় কৃষকদের কাছ থেকে যানবাহন চালকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। উল্লেখ্য এই
সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ হাজারেরও বেশী লোকজন চলাচল করছে। এর মাঝে
স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবি,ব্যবসায়ী,কর্মজীবি শ্রমিক রয়েছে।
মিথলমা গ্রামের কৃষক জসিম, আনিস,রশিদ প্রমূখ জানান, রাস্তাটি ভাঙ্গাচোরা
হওয়ায় উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করণে দুর্ভোগের পাশাপাশি বাড়তি ভাড়া গুণতে
হয়। আবার অনেক সময় সড়কটিতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে মালামাল পরিবহনে
বাধাগ্রস্থ হয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বিকল্প সড়ক পথে পণ্য নিয়ে আসতে হয়
বাজারে বিক্রির জন্য। এতে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে। সড়কটিতে
নিয়মিত যাত্রী পরিবহনে নিয়েজিত সিএনজি অটোরিক্সা চালক কাকিয়ারচর এলাকার
জলিল ,মিথলমা গ্রামের নাসিরসহ একাধিক বিভিন্ন শ্রেনীর যানবাহন চালক জানান,
সড়কটি বহুদিন ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে যাত্রীদের পাশাপাশি
আমাদেরও দুর্ভোগ হচ্ছে। এছাড়াও খানাখন্দকে পড়ে প্রায়ই ছোট-খাটো দুর্ঘটনা
ঘটছে। এঅবস্থায় তারা দ্রুত সড়কটির সংস্কারের দাবী জানায়। এদিকে নাম প্রকাশে
অনিচ্ছুক কাকিয়ারচর গ্রামের একাধিক লোক জানান, সড়কটির এই গ্রামের একটি
অংশের দু’পাশে পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না রেখে একাধিক বাড়ি-ঘর
নির্মানের কারণে অল্প বৃষ্টিতেই সড়কটিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসময়
যানবাহনের যাত্রীদের পাশাপাশি পথচারীদেরও দুর্ভোগ চরমে উঠে।
স্থানীয়
কাকিয়ায় চর গ্রামের সিএনজি চালক আব্দুল জলিল জানান এসড়ক দিয়ে মারাত্মক
ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রতিদিনই ছোট খাট দুর্ঘটনা ঘটে। নিয়মিত ভাবে
সিএনজির যন্ত্রাংশ মেরামত করতে হয় । প্রায় অটোরিকাশ যাত্রী ও মালামাল নিয়ে
সড়কের মধ্যে উল্টে পড়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
এব্যপারে
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আলিফ আহাম্মদ জানান যে কোরপাই - মনঘাটা- আবিদপুর
সড়কের বিষয়ে আমরা জানা আছে। সড়কটির জন্য আমরা ইস্টিমিট চেয়ে পাঠিয়েছি।
ইস্টিমিট পাস হয়ে আসলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সড়কের কাজ ধরব।