
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার
মুরাদনগরে ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই নারীবাড়ি থেকে
অন্যত্র চলে গেছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের
বাড়িতে দেখা যায়নি। এমনকি ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে
গিয়েও বাড়িতে পাননি মুরাদনগরের সাবেক এমপি শাহ মোফাজ্জল হোসেইন কায়কোবাদ।
তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তবে পুলিশ
বলছে, ঘটনার পর প্রতিদিনই তাঁদের বাড়িতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন ভিড়
করছেন। এ ছাড়া গণমাধ্যমকর্মী ও ইউটিউবারদের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে দিতে তাঁর
জীবন ‘দুর্বিষহ’ হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে তিনি বাড়ি ছেড়ে গেছেন।
গত
২৬ জুন দিবাগত রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ
ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক
নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ধর্ষক ও ভুক্তভোগী নারীকে
বিবস্ত্র করে নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে
দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরই মধ্যে পুলিশ ধর্ষণে অভিযুক্ত একই গ্রামের
বাসিন্দা ফজর আলী ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চার যুবককে গ্রেপ্তার
করেছে।
স্থানীয় সূত্র বলছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই নারী ও তার
পরিবারের সদস্যদের আর বাড়িতে দেখা যায়নি। সোমবার বিকেলে তাঁর স্বামীর বাড়ি
যাবেন বলে বাবার বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। এরপর তাঁর মা-বাবাসহ পরিবারের
লোকজনও অন্যত্র চলে যান।
এ অবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার তাঁদের বাড়ি আসেন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল
হোসেন কায়কোবাদ। তিনি এসেও ওই নারী কিংবা তার পরিবারের সদস্যদের কাউকে
বাড়িতে পাননি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কায়কোবাদ বলেন, ‘আমি এখানে
এসেছিলাম সকলের সাথে দেখা করতে, কথা বলতে। ভুক্তভোগী ও নারী ও তার পরিবারের
সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতে। কিন্তু আমি এসে তাদের পেলাম না। পুলিশ ও
আমাদের মাননীয় ‘শিশু উপদেষ্টা’ ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে এখান থেকে দূরে নিয়ে
গেছে। আমি জানতে চাই, তাদের উদ্দেশ্য কি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ওই নারী তার শ^শুর বাড়িতে গেছেন।
তিনি যেতেই পারেন, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রতিদিন কতো মানুষ তার
বাড়িতে আসে, নানা কথা জানতে চায়। সে যদি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন
অবশ্যই তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’
কায়কোবাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে
চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়, রাজনীতিবিদরা কতো কথাই বলেন। এটা তার
ব্যক্তিগত মতামত। একজন নারী ধর্ষিত হয়েছেন, আমরা তার আইনগত দিকগুলো দেখছি,
এতো আমাদের কোনো ঘাটতি আছে কি-না সেটা বলেন। এর বাইরে কে কি বললো তাতে
আমাদের কিছু যায় আসে না।’