কুমিল্লার
দেবিদ্বারে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামে ৬ বছরের এক শিশুকে
ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগে ৮ দিন পার হলেও মামলা দায়ের হয়নি থানায়। স্থানীয়দের
অভিযোগ, প্রভাবশালীদের চাপে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার এখনো থানায় মামলা করতে
পারেনি। উল্টো পরিবারটি রয়েছে আত্মগোপনে। ধর্ষণের ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত
আরমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধেও কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় নি। এ
ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদ এবং দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারের দাবিতে
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর)
বিকালে সর্বস্তরের জনতার আয়োজনে রসুলপুর ইউনিয়নের গোপালনগর সিংগাপুর
মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে মক্তবে
আরবী পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই শিশুকে ফুঁসলিয়ে একটি নির্মাণাধীন নির্জন
বাড়িতে নিয়ে আরমান হোসেন জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
অভিযুক্ত আরমান হোসেন
ভূঁইয়া (১৭) দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের ইউনিয়ন
আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে।
বিক্ষোভ
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অভিযুক্ত আরমান ভূঁইয়াকে বাঁচাতে একটি প্রভাবশালী
চক্র চেষ্টা করছেন। চক্রটি তিন লক্ষ টাকায় সমঝোতা করতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে
চাপ প্রয়োগ করছেন। শিশুটির পরিবার ভয়ে ৮দিনেও মামলা করতে পারেনি। প্রথমে এ
ঘটনাটি ধামাচাপ দিতে
এলাকাবাসী জানায়, শিশুটি বাড়িতে ফিরে বিষয়টি
তার মাকে জানালেও প্রভাবশালী একটি মহলের চাপের মুখে পরিবারটি বিষয়টি গোপন
রাখতে বাধ্য হয়। এমনকি দুই দিন শিশুটি বিনা চিকিৎসায় বাড়িতে যন্ত্রণায়
কাতরালেও তাকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়। পরে ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে
শিশুটির প্রতিবেশী দাদাসম্পর্কের দাদা মোয়াজ্জেম হোসেন স্বপন ভূঁইয়া খবর
পেয়ে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মানববন্ধনে
বক্তব্য রাখেন, সমাজকর্মী বুলবুল আহমেদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর রসুলপুর
ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা কাজী হাসান আহমাদ, ইউছুফপুর ইউনিয়নের ৩নং
ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ হাসান ও ছাত্রশক্তি নেতা শামছুদ্দিন প্রমূখ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আল আমিন, প্রবাসী বিল্লাল, নাঈম, হিমেল চৌধুরী ও
মুক্তার হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সমাবেশ থেকে হুশিয়ারি দেওয়া
হয় যে, দ্রুত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা
করা হবে।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অনেক চেষ্টা করেও
ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিন। পরে পুলিশ ভুক্তভোগীর
শিশুর বাড়িতে গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখে ফিরে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু না
বললে আমরা কি করতে পারি ? তারা হয়তো কোথাও আত্মগোপনে আছে। আমরা চেষ্টা
করছি ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
