যাঁরা
একসময় একই বেঞ্চে পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করতেন, স্কুলজীবনের সেই বন্ধুরা আজ
চল্লিশের কোঠায় পা রেখেছেন। জীবনের ব্যস্ততায় অনেক দূরে সরে গেলেও আজ
স্মৃতির টানে ফিরে গেছে তাদের মন। চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই চেনা স্কুল
আঙিনা, সকালবেলার সমাবেশ, শিক্ষকদের কড়া শাসন আর বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো
অমূল্য সময়। মঞ্চে বসা সেই সম্মানিত শিক্ষকদের দিকে তাকিয়ে একে একে মনে
পড়ছে শাসনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা স্নেহ আর আদর্শের কথা। যাঁদের কঠোর
নির্দেশনা আর নিরন্তর তত্ত্বাবধানেই গড়ে উঠেছিল শৃঙ্খলা, পরিশ্রম আর
দায়িত্ববোধ। আজ জীবনের নানা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সবাই বুঝতে পারছেন-সেই
কড়া শাসনই ছিল তাদের এগিয়ে যাওয়ার শক্ত ভিত। সময়ের স্রোতে বয়স বেড়েছে,
দায়িত্ব বেড়েছে, বদলেছে জীবন। কিন্তু স্কুলজীবনের সেই বন্ধুত্ব,
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক আর শৈশবের স্মৃতিগুলো আজও রয়ে গেছে ঠিক আগের
মতোই অমলিন ও প্রাণবন্ত।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) কুমিল্লার দীর্ঘ ২৮ বছর
আগের স্কুল আঙ্গিনায় তৈরী করা পুনর্মিলনীর মঞ্চে দাঁড়িয়ে একে একে স্মৃতিময়
দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার
বড়শালঘর ইউ.এম.এ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৭ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। দিনভর
নানা আয়োজনে, আড্ডায় খুঁজে ফিরেছেন সে কালের শিক্ষার্থীরা। সঙ্গে ছিলেন
স্ত্রী ও সন্তানেরাও। প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর মিলনমেলায় মুখরিত হয়ে ওঠে
স্কুল মাঠের আঙ্গিনার মঞ্চ। সুদৃশ্য পাটের ব্যাগে টি-শার্ট, চাবির রিংসহ
নানা গিফট দেওয়া হয় সদস্যদের। স্কুলের নাম ও লোগো মগে প্রিন্ট করে উপহার
পাওয়া ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়।
সকাল ১০টার দিকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের
মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এরপর প্রয়াত শিক্ষক ও বন্ধুদের স্মরণে এক
মিনিট নীরবতা পালনসহ প্রিয় স্কুল আঙ্গিনায় বৃক্ষ রোপন, র্যালি, ও বিশাল
একটি কেক কাটা হয়। কেকে লেখা ‘৯৭ ব্যাচ পুনর্মিলনী’। মধ্যাহ্নভোজের পরে চলে
নাচ, গান, আবৃত্তি, বেলুন ফোটানো, ঝুঁড়িতে বল নিক্ষেপ, র্যাফেল ড্রয়ের
পুরস্কার বিতরণ, মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষা বৃত্তি প্রদান সহ নানা আয়োজন।
অনুষ্ঠান
সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিনের সঞ্চালনায় ২৮ বছর
আগের পুরানো দিনের স্মৃতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, ১৯৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ অলিউল্লাহ তুহিন, মো.সাজ্জাদুর রহমান মাসুদ,
ডা. ইসরাফিল সরকার, ডা. মো. মনিরুল ইসলাম, এ কে এম মমিনুল ইসলাম, হামিদা
আক্তার, সালাউদ্দিন বেলাল, মো. সাইফুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবু ইউসুফ।
