মঙ্গলবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২
অস্ত্রের বৈধ লাইসেন্স কতটা নিরাপত্তা দেবে
প্রকাশ: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম |

অস্ত্রের বৈধ লাইসেন্স কতটা নিরাপত্তা দেবে
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রার্থীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার সম্ভাব্য নানা ধরনের প্রভাব ও চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নির্বাচন মানে তীব্র উত্তেজনা, সহিংসতার আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতাদের হাতে বৈধ অস্ত্র থাকা মানে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার গণ্ডি ছাড়িয়ে সহিংসতার সম্ভাব্য বিস্তার। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার যুক্তি এখানে শেষ পর্যন্ত সামষ্টিক নিরাপত্তার অবনমন ঘটাতে পারে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ পরিস্থিতিতে বৈধ অস্ত্রধারীদের উপস্থিতিও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে পারে। তাছাড়া যখন বৈধ অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয় তখন অবৈধ অস্ত্রধারীরাও একই সঙ্গে তাদের কার্যকলাপ বাড়িয়ে দিতে পারে, যা সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। তবে ইতিবাচক দিক হচ্ছে প্রার্থী বা রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সুরক্ষা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই নেতিবাচক বা ইতিবাচক নানা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের অনেকেরই ব্যক্তিগত অস্ত্র ছিল। কিন্তু ঘটনার সময় তিনি তা ব্যবহার করতে পারেননি। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিরাপত্তা কখনোই শুধু অস্ত্রের মাধ্যমে অর্জিত হয় না। নিরাপত্তা আসে বিশ্বাসযোগ্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, পেশাদার পুলিশি ব্যবস্থা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, নেতাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া রাষ্ট্রের সক্ষমতার প্রমাণ নয়। বরং এটি এক ধরনের স্বীকারোক্তি যে, রাষ্ট্র নিজেই তার নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের এই লাইসেন্স সবার জন্য নয়। নির্দিষ্ট কিছু মানুষের জন্য। সেখানেও যাচাই-বাছাই হবে। ফলে অপব্যবহারের আশঙ্কা তুলনামূলক কম। তাছাড়া সব অস্ত্রের মালিকই সরকার। তাই সরকার যখন চাইবে তখন অস্ত্রগুলো তুলে নিতে পারবে। এখানে অন্য কোনো আশঙ্কা বা নেতিবাচক কিছু দেখছি না। 
তবে অনেকেই পাল্টাপাল্টি মত-অভিমত ব্যক্ত করছেন এ নিয়ে। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক এ ব্যাপারে ভিন্নমত তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনের সময় সাধারণত বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়া হয়ে থাকে, যাতে নির্বাচনি মাঠে এসব অস্ত্র কোনো ধরনের ভীতির সৃষ্টি করতে না পারে। এই সময়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এবং প্রার্থীদের লাইসেন্স দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার বিষয়টি সরকারের দায়সারা কাজ হিসেবে মনে করি। কেননা প্রার্থী বা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। তাছাড়া সব প্রার্থী বা নেতার মানসিকতা একরকম নয়। পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ অনেক কিছু জড়িত আছে। অনেকেই বৈধ অস্ত্রের প্রভাব দেখাতে পারেন। সবমিলে এই সময়ে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি সরকারের অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত বলে মনে করি।
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাদের নিরাপত্তা শঙ্কার কথা ভেবে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও প্রকাশ হয়েছে। এ নীতিমালার আওতায় অনুমোদন করা লাইসেন্সের মেয়াদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ থেকে পরবর্তী ১৫ দিন হবে। ওই সময়ের পর এই জাতীয় লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। সরকার নাগরিকদের জননিরাপত্তার কথাটি মাথায় নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি যেন দীর্ঘমেয়াদে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি না করে, সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আশা করছি, সরকার রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।













http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
আড্ডার ঘরে রক্তের দাগ
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে কুমিল্লায় বিএনপির প্রস্তুতি সভা
আপনি যতবড় নেতাই হন তারেক রহমানের কাছে একজন কর্মী ছাড়া কিছুই না: জাকারিয়া সুমন
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ঠিক হয়নি বললেন- সাবেক মেয়র সাক্কু
কুয়েতে প্রবাসী যুবকের মৃত্যু, দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত হত্যা?
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় বিএনপির ৩ বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়ন সংগ্রহ
কুমিল্লায় ৫৪ টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
দেবিদ্বারে ২০০ নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান
কুমিল্লা-১০ আসনে নারী নেত্রী শিউলীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
অনলাইন-অফলাইনে পর্যবেক্ষণে প্রার্থীরা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২