নির্বাচনি আমেজে মাঠে-ঘাটে, বাজার-হাটে, দোকানপাটে যেমন নানান আলোচনা সমালোচনা ও কর্মসূচি চলছে; তেমনি সামাজিক যোগাযোগ্য মাধ্যম ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউবেও প্রার্থীরা তাদের কার্যক্রম ও কর্মসূচি প্রতিনিয়ত প্রচার ও প্রকাশ করছেন। প্রার্থীর নিজস্ব ফেসবুক একাউন্ড, পেইজ কিংবা ইউটিউবে- তাদেও কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও শেয়ার হচ্ছে প্রতিদিনই। তাদের সমর্থকরাও ইচ্ছেমত তাদের প্রিয় নেতা বা প্রার্থীর ছবি, লেখা, ভিডিও প্রকাশ করে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার প্রতিপক্ষকে নিয়েও করছেন আলোচনা-সমালোচনা। নানান অনুষ্ঠানের লাইভ ভিডিও প্রচার করছেন কেউ।
তবে সেক্ষেত্রে আচরণবিধি মেনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা বা কনটেন্ট আপলোড করার আহ্বান জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান।
নির্বাচন আচরণবিধিতে উল্লেখ রয়েছে, ক্ষতিকর কন্টেন্ট নিয়ে নিষেধাজ্ঞা, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য ও নির্বাচন সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ সকল প্রকার ক্ষতিকর কন্টেন্ট বানানো ও প্রচারণা নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া প্রতিপক্ষ, সংখ্যালঘু বা অন্য কোন জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণাত্মক, বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উষ্কানিমূলক ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ, নির্বাচনি স্বার্থ হাসিল করার জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভুতির অপব্যবহার নিষিদ্ধ। এছাড়াও সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কন্টেন্ট শেয়ার ও প্রকাশ করার পূর্বে সত্যতা যাচাই করতে হবে, ভোটারদের বিভ্রান্ত করার করার জন্য তৈরী করা পক্ষপাতমূলক কনটেন্ট প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত নির্বাচনের ৪৮ ঘন্টা পূর্বে সকল প্রকারের অনলাইন প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে।
রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মু. রেজা হাসান জানান, প্রার্থীদের অনলাইন এবং অফলাইনে পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। তবে আমরা এখনো এমন কোন (অনলাইনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের) অভিযোগ পাইনি। আমরা যদি এমন কোন অভিযোগ পাই তাহলে নির্বাচন আচরণবিধিতে যা লেখা আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।
রিটার্নিং অফিসার মু. রেজা হাসান বলেন, ইতোমধ্যে যারাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তাদেরকে আচরণবিধি মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে এবং কি করতে পারবে-কি করতে পারা যাবে না তা বলা হচ্ছে। তবে আমরা এখনো অনলাইনে আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণার আগে তাদের একাউন্ট আইডি ও শনাক্তকরণ আইডি রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিল করতে হবে, এটাই নির্বাচনি আচরণবিধি আইনে উল্লেখ করা আছে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পোষ্টার ব্যানার অপসারণের কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। মাঠে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদেও পর্যবেক্ষণে এখনো তা চলমান আছে। প্রার্থীরাও নিজেদের উদ্যোগে কিছু কিছু পোষ্টার ব্যানার সরিয়ে আচরণবিধির প্রতি সম্মান রেখেছেন। আমরা আশা করবো সকল প্রার্থীরা আচরণবিধি মেনে চলে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিবেন।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর থেকে কুমিল্লা জেলার ১১টি আসনে মোট ৫৪ টি মনোনয়নন সংগ্রহ হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সর্বাধিক মনোনয়ন সংগ্রহ হয়েছে বিএনপি থেকে ১৯ টি। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর ৯ টি, এনসিপির ১টি, ইসালামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩ টি, জাতীয়তাবাদী কৃষক দল ১টি, খেলাফত মজলিস ৩ টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ২ টি, এলডিপি ১টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস ১ টি, গণফ্রন্ট ১টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি ১টি, গণ অধিকার পরিষদ ১টি, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১ টি এবং স্বতন্ত্র হিসেবে ১০ টি মনোনয়নপত্র জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা গেছে, একজন প্রার্থীর পক্ষে তার সমর্থকরা একাধিক মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন। নিরাপত্তার কারণে হিসেবে কেউ কেউ একই আসনে একাধিক মনোনয়পত্র সংগ্রহ করেছেন বলেও জানা গেছে। তবে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই ও প্রত্যাহার শেষেই জানা যাবে কোন দল থেকে কোন আসনে কে চুড়ান্ত প্রার্থী হচ্ছেন।
