নেপালে
প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর আন্দোলনরত জেন জি
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন কাঠমান্ডুর
মেয়র বালেন্দ্র শাহ। তিনি সবার কাছে ‘বালেন শাহ’ নামেই পরিচিত। সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে তাকে অন্তর্র্বতী প্রধানমন্ত্রী করার দাবিও ছড়িয়ে
পড়েছে।
কে এই বালেন্দ্র শাহ?:
বালেন্দ্র শাহর জন্ম ১৯৯০ সালের ২৭
এপ্রিল। তিনি পেশায় একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, একই সঙ্গে র্যাপার,
গীতিকার, কবি ও রাজনীতিক। ২০২২ সালের স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী
হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচিত হন বালেন্দ্র শাহ, যা নেপালের ইতিহাসে
প্রথম।
রাজনীতিতে আসার আগে তিনি নেপালের হিপহপ ঘরানার সংগীতশিল্পী
হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। ২০১৩ সালে ইউটিউব সিরিজ ‘র বার্জ’–এ অংশ নিয়ে
আলোচনায় আসেন। প্রকৌশলে পড়াশোনা শেষে স্থানীয় সরকারে যোগ দেন এবং দুর্নীতি ও
অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন।
মেয়র হিসেবে অবদান:
মেয়র হওয়ার পর থেকেই বালেন্দ্র শাহ বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় আসেন।
যেমন-
* সিটি কাউন্সিলের সভা সরাসরি সম্প্রচার শুরু করেন।
* অবৈধ স্থাপনা ভাঙার উদ্যোগ নেন, যদিও এ নিয়ে আদালত ও সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়।
* কাঠমান্ডুর ময়লা-আবর্জনা সংকট সমাধানে সরাসরি বেসরকারি সংস্থাকে কাজে লাগান।
* নদী দখলমুক্ত করার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
বিক্ষোভে সমর্থন:
জেন
জি আন্দোলনের শুরু থেকেই তরুণ প্রজন্মের পাশে ছিলেন বালেন্দ্র শাহ।
প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায়
বিক্ষোভকারীদের সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মেয়র বলেন, প্রিয় জেন জি,
সরকারের পদত্যাগের দাবি পূরণ হয়েছে। এখন সংযত হওয়ার সময়। দেশের সম্পদ নষ্ট
হওয়া মানে আমাদেরই ক্ষতি। নতুন প্রজন্মের দায়িত্ব নেপালের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব
গঠন করা।
তিনি আরও জানান, সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা আছে। তবে তা কেবল পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরই হতে পারে।
কেন আলোচনায়?:
ওলির
পদত্যাগের পর দেশজুড়ে অন্তর্র্বতী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নিয়ে
অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আস্থাহীন তরুণ প্রজন্ম এখন
বিকল্প নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বালেন্দ্র শাহকে সামনে আনছে। তার
জনপ্রিয়তা, সাহসী পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে থেকে উঠে আসা পরিচয়
তাকে এ মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত নাম বানিয়েছে।
