হোমনা
প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শাহ আলমের পরিবারের সংসার
চলে সেলাইয়ের কাজ করে । জুলাই অভ্যুত্থানের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহ আলম
প্রাণ হারালেও, তার আত্মত্যাগের স্মৃতি বুকে ধারন করে তার স্ত্রী শিল্পী
বেগম এখনও উত্তর বাড্ডায় সেই ভাড়া বাসায় থাকেন এবং নিজে দর্জির কাজ করে
দুই ছেলে ও এক মেয়েকে লেখাপড়া সহ সংসার চালানোর সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছেন।
জানাগেছে,
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার রামপুরায় টিভি সেন্টারের নিকটে গুলিবিদ্ধ হন
গার্মেন্টকর্মী শহীদ শাহ আলম। দীর্ঘ ২৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে
১৩ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শাহ
আলম কুমিল্লার হোমনা উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের রেনু মিয়া
ও সাফিয়া বেগমের ছেলে। জীবিকার তাগিদে তিনি ঢাকার ‘জান গার্মেন্টসে’
চাকরি করতেন এবং উত্তর বাড্ডা এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
শিল্পী
বেগম মুঠোফোনে যুগান্তরকে জানান, শহীদ পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি
সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্র পেয়েছেন।এ ছাড়া
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এককালীন ২০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে। ইউএনও
স্যার মাঝে মধ্যে ফোন করে আমার পরিবারের খবরা খবর নেন। তাঁর বড় ছেলে ১০ম
শ্রেণিতে, দ্বিতীয় ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে এবং মেয়ে মাদ্রাসায় ২য় শ্রেণিতে
পড়েন। বর্তমানে সংসার ও তাদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
শিল্পী
বেগম আরো বলেন, আমার স্বামী দেশের সংকটকালে প্রাণ দিয়েছেন। সরকার আমাদের
পাশে দাঁড়িয়েছে—এ জন্য সরকারের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
স্থানীয়
জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তাইজুল ইসলাম জানান,শাহ আলমের পরিবার
দেশে থাকে না। আগে থেকেই ঢাকায় থাকে। এখানে কোন বাড়িঘরও নাই। তারা স্ব
পরিবারে ঢাকায় থাকতো তবে শাহ আলমের দাফন কাফন অনন্তপুর কবরস্থানে
হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার( ইউএনও)ক্ষেমালিকা চাকমা
জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ শাহ আলমের পরিবারকে ৩ কিস্তিতে ৩০ লাখ
টাকার সঞ্চয় পত্র দেয়া হবে। ইতোমধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্র দেয়া হয়েছে।
কয়েক দিনের মধ্যে ২য় কিস্তিতে আরো ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাবে। তা ছাড়া
ডিসি স্যার সহ বাড়িতে গিয়ে কবরজিয়ারত করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০
হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।