দারুণ চিপ শটে দলকে এগিয়ে নিলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। বাম পায়ের দৃষ্টিনন্দন বাঁকানো শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ১৫ মিনিটের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা বাহরাইন হয়ে পড়ল কোণঠাসা। তহুরা খাতুন ও কোহাতি কিসকুও পেলেন জালের দেখা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে উড়িয়ে এএফসি উইমেন’স এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে দুর্দান্ত শুরু পেল বাংলাদেশ।
মিয়ানমারের ইয়াংগুনে রোববার নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে ৭-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে ৫টির পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুইবার গোলের আনন্দে মাতে মেয়েরা।
‘সি’ গ্রুপে দ্বিতীয় ম্যাচে বুধবার মিয়ানমারের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে বাছাইয়ে যাত্রা শুরু করেছে স্বাগতিকরা।
কিক অফের পর প্রথম মিনিটেই আক্রমণ শাণায় বাংলাদেশ। বাম দিক থেকে দূরপাল্লার শট নেন ঋতুপর্ণা, গোলকিপার লাফিয়ে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বল গ্লাভসে জমান। গত উইমেন’স সাফে প্রায় একই জায়গা থেকে দূরপাল্লার শটে নেপালের জালে গোল করেছিলেন ঋতুপর্ণা।
চাপ ধরে রেখে দশম মিনিটে গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। মাঝমাঠ থেকে আসা লম্বা ক্রস দারুণ ক্ষিপ্রতায় অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারের ওপর দিয়ে চিপ শটে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড।
পঞ্চদশ মিনিটে ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। স্বপ্না রানীর আড়াআড়ি ক্রস ধরে বক্সে ঢুকে বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন ঋতুপর্ণা। ম্যাচে চালকের আসনে বসে যায় বাংলাদেশ।
একের পর এক আক্রমণে ২৪তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ পান মনিকা চাকমা। কিন্তু, গোলরক্ষককে একা পেয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে নিজেকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। হতাশায় ঢাকেন মুখ।
৩২তম মিনিটে আফঈদা খন্দকারের ক্রসে তহুরা হেডে জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে হয়নি গোল। একটু পর শামসুন্নাহার জুনিয়র ছোট বক্সে বল পায়ে ঢুকেও তালগোল পাকিয়ে নিতে পারেননি শট। ৩৫তম মিনিটে বক্সের ভেতরে তহুরার শট প্রতিহত হয় ডিফেন্ডারের গায়ে।
পোস্টে অলস সময় কাটছিল রুপনা চাকমার। ৩৭তম মিনিটে বিপদ আঁচ করতে পেরে এক ছুটে বক্সের বাইরে এসে জোরালে শটে বল ক্লিয়ার করেন দুটি সাফ জয়ী গোলকিপার। একটু পর পায়ের কারিকুরিতে বল বের করে মারিয়ার নেওয়া শট অল্পের জন্য যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
৪০তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। মনিকার কর্নারের পর মারিয়া বল ধরে অনেকটা এগিয়ে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান বক্সে, তা ক্লিয়ার করতে পারেনি বাহরাইনের ডিফেন্ডাররা। বরং এক জনের পায়ে লেগে বল চলে যায় কোহাতির কাছে। জটলার মধ্যে টোকায় জালে বল পাঠান এই ডিফেন্ডার।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জোড়া গোলের আলো ছড়ান তহুরা। প্রথমটি তিনি করেন বক্সের ঠিক ওপরে মনিকার চার্জে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার বল হারানোর পর; তার শট গোলকিপারের গ্লাভস ছুঁয়ে ঠিকানা খুঁজে পায়। বিরতির বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে শামসুন্নাহার জুনিয়রের কাটব্যাক পেয়ে নিখুঁত টোকায় করেন দ্বিতীয় গোলটি।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই ছন্দে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ৬০তম মিনিটে সতীর্থের ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়র টোকা দেওয়ার পর রাওয়ান আল আলির পা হয়ে বল জালে জড়ায়।
৭৪তম মিনিটে এক ছুটে বক্সে ঢুকে বডি ডজে এক ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়ে নিচু শটে স্কোরলাইন ৭-০ করেন মুনকি আক্তার।
বদলি ফরোয়ার্ড সাগরিকা ৮৬তম মিনিটে জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে হয়নি গোল। একটু পর তহুরার শট ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরলে ব্যবধান আর বাড়েনি।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে বিশাল জয়ের আনন্দ সঙ্গী করে মিশন শুরু হলো বাংলাদেশের।.