বাংলাদেশের
ফুটবলে নতুন করে জোয়ার এসেছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে খেলা ফুটবলার
হামজা দেওয়ান চৌধুরি বাংলাদেশের হয়ে খেলার পর থেকেই মূলত এই স্রোতের শুরু।
আজ ট্রায়ালের শেষ দিনে গ্যালারি ছিল উন্মুক্ত। এতে কয়েক শ সমর্থক মাঠে
এসেছিলেন। প্রবাসী ফুটবলারদের পরিবার, ফুটবলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের
সম্মিলনে আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে হাজার দু'য়েক লোকের সমাগম হয়েছে।
ফুটবলের
প্রাণ সমর্থকরা। ট্রায়ালে আসা প্রবাসী ফুটবলাররা বাংলাদেশে এখনো সেভাবে
পরিচিত নন। এরপরও খেলা শেষের পর গ্যালারী টপকে সমর্থকরা ফুটবলারদের
সান্নিধ্যা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কেউ সেলফি তুলেছেন আবার কেউ কোলাকুলি করে
শখ মিটিয়েছেন। লাল-সবুজ জার্সি আদৌ পড়া হবে কিনা জানেন না অনেকে কিন্তু
বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের ভালোবাসাই তাদের কাছে অনেক। সাংগঠনিক দৃষ্টিকোণ
থেকে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা হলেও দিন শেষে জয় যেন ফুটবল
ভালোবাসারই।
আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইতালি, সুইডেনসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত
থেকে ৪৯ জন প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কোচদের সামনে
বসেছিলেন পরীক্ষায়। সোমবার ট্রায়ালের শেষ দিনে হয়েছে দুটি ম্যাচ। তিন দিনের
ট্রায়ালের ফল ফুটবলার ও অভিভাবকরা কবে জানতে পারবেন সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।
বাফুফের পক্ষ থেকে আজ এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বার্তাও আসেনি।
ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর সাইফুল বারী টিটু ট্রায়াল প্রক্রিয়া নিয়ে মিডিয়ায়
ব্রিফ করার কথা থাকলেও সেটি আর হয়নি।
প্রথম ম্যাচটি হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯
দলের। ঐ খেলায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিটোশোক চাকমা বিশেষ নজর কেড়েছেন। সাদা
চুলের এই তরুণের শারীরিক গড়ন ভালো, বল নিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটতে পারেন। গোলও
পেয়েছেন একটি। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের খেলায় গোল না হলেও গোছালো হয়েছে। রক্ষণ ও
আক্রমণ দুই বিভাগেই কুশলী ফুটবলার দেখা গেছে। লেফট ব্যাক খেলা আমেরিকান
প্রবাসী জায়ানের ওভারল্যাপ ও গতি খানিকটা চোখে পড়েছিল। ভিআইপি গ্যালারিতে
তাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য ২২ নম্বর জার্সিও ছিল।
বাংলাদেশ দলে খেলার লক্ষ্য
নিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তারা এসেছিলেন। অনেক ফুটবলারদের সঙ্গে
তাদের বাবা-মাও এসেছিলেন। এতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর বিপরীতে
সমর্থকদের আজকের ভালোবাসা, জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা ছাড়া তেমন প্রাপ্তি নেই
প্রবাসী ফুটবলারদের। বাফুফের পক্ষ থেকে ট্রায়াল আয়োজন করলেও বিশেষ কোনো
ব্যবস্থা ছিল না। তিন দিনের ট্রায়াল দিয়ে অনেক ফুটবলারই হয়তো আবার
ইউরোপ,আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। অপেক্ষায় থাকবেন কখন সুখবর আসে সেই
আশায়। বাফুফে প্রবাসী ফুটবলার ও অভিভাবকদের কত দিন অপেক্ষায় রাখে সেটাই
দেখার বিষয়।