শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের স্বপ্নভঙ্গ
প্রকাশ: সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪, ১:০২ এএম |

মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের স্বপ্নভঙ্গ
বাংলাদেশসহ কর্মী জোগানদাতা ১৪টি দেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া গতকাল শনিবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট বা চক্রের নির্মম দুর্নীতির চিত্র। কয়েক দিন আগে ঢাকায় কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিকাব সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকায় মালয়েশীয় হাইকমিশনার হাযনাহ মো. হাশিম এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ঘিরে সক্রিয় সিন্ডিকেটগুলো বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সম্প্রতি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার চক্র হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে দেশের সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হয় না।
চক্রে থাকা এজেন্সিগুলো বসে বসে প্রতি কর্মীর বিপরীতে মোটা অঙ্কের টাকা ‘চক্র ফি’ পায়। এই টাকার একটি অংশ চলে যায় মালয়েশিয়ার চক্র নিয়ন্ত্রকদের কাছে। এই চক্রের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে প্রতারিত হয়েছেন হাজারো কর্মী। এসব কর্মীর মধ্যে বেশির ভাগই জমি বা শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে ও চড়া সুদে মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার টাকা জোগাড় করেন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা) বলছে, ৩১ তারিখে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জেনে তারা সরকারকে বলেছিল কূটনৈতিকভাবে আলাপ-আলোচনা করতে। বায়রা মনে করে, অধিকসংখ্যক চার্টার্ড ফ্লাইট করা গেলে এ সমস্যা অনেক আগেই দূর করা যেত। তারা মনে করছে, সরকারের উদ্যোগের অভাব ছিল। যাঁরা ভিসা পেয়েছেন, সরকারই কূটনৈতিকভাবে তাঁদের যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে বলে মনে করে বায়রা।
এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, কত মানুষ যাবে, কিভাবে যাবে, সেই তালিকা বায়রার কাছে চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা কোনো তালিকা দিতে পারেনি। এর ফলে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যাঁরা ভিসা পেয়ে মালয়েশিয়ায় আসতে পারেননি, তাঁদের নিয়ে আসার ব্যাপারে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে, যেন তাঁদের দ্রুত নিয়ে আসা যায়। ঢাকায় মালয়েশীয় হাইকমিশনার বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের সবার চাকরি নিশ্চিত করতে চায় মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার যেন দুর্নীতির আখড়া।
সরকার অভিবাসন খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করলেও কর্মীরা জনপ্রতি সাড়ে চার থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। আইনে নিষিদ্ধ হলেও ভিসা কেনাবেচার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি ভিসা ন্যূনতম ছয় হাজার রিঙ্গিত করে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কিনেছে।
নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের হোতাদের কর্মীপ্রতি এক লাখ ৪২ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিপরীতে সেখানে যাওয়া কর্মীরা পাননি কোনো কাজ। বেতন ও কাজ না পাওয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন লাখো কর্মী। মালয়েশিয়ায় গিয়েও অনেকে বেকার থাকছেন, সেটা সরকারও স্বীকার করে। দুই দেশে সিন্ডিকেটের তৎপরতার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে চাহিদার চেয়ে বেশি কর্মী গেছেন মালয়েশিয়ায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর জানুয়ারিতে মালয়েশিয়া সরকার ঘোষণা করে ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নেওয়া হবে না। জানুয়ারি থেকে মে-পাঁচ মাস সময় পেয়েও কেন সময়টা কাজে লাগানো হলো না? অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মালয়েশিয়ায় ৩১ মের মধ্যে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া আরো দ্রুত করার প্রয়োজন ছিল। আবার যাঁরা যেতে পেরেছেন, তাঁরা সবাই যে কাজ পাবেন, তারও নিশ্চয়তা নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি মনিটর করা প্রয়োজন। পাশাপাশি সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহির মধ্যে রাখতে হবে।












সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্দালিভ রহমান পার্থ ৫ দিনের রিমান্ডে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft