শুক্রবার ৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২
শিবনারায়ণ দাশের চোখে আলো দেখছেন মশিউর-আবুল কালাম
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪, ১:২৩ এএম |


 শিবনারায়ণ দাশের চোখে আলো দেখছেন মশিউর-আবুল কালাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রথম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবনারায়ণ দাশের দান করা চোখের কর্নিয়ায় আলো দেখছেন মশিউর রহমান ও আবুল কালাম। গত ১৯ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মারা যান শিবনারায়ণ দাশ। তার মৃত্যুর পর বিএসএমএমইউ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষু ডোনেশন সোসাইটি তার চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে রংপুরের মশিউর রহমান এবং চাঁদপুরের আবুল কালাম নামের দুইজনের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ফলে এই দুইজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তি তাদের চোখের দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন।
এ উপলক্ষে সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ সময় বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, ‘দেশের মানুষের চোখের কর্নিয়া দান করার ব্যাপারে কুসংস্কার কাজ করে। মানুষ মনে করে পুরো চোখ উঠিয়ে ফেলবে, চেহারা বিকৃত হবে, যা আত্মীয়স্বজনরা মেনে নিতে পারে না। কিন্তু বিষয়টা এমন নয়। চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করতে চেহারা বিকৃত হয় না। মাত্র ১০ মিনিট সময়ে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়। তবে মানুষ এখন আস্তে আস্তে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।’
উপাচার্য বলেন, ‘শিবনারায়ণ দাশ কর্নিয়া দান করে গেছেন। তার দেহও দান করে গেছেন। এক চোখের কর্নিয়া চাঁদপুরের মশিউর রহমানের চোখে প্রতিস্থাপন করেছি। অন্য চোখের কর্নিয়া রংপুরের আবুল কালামের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিসহ অসংখ্য বড় বড় মানুষ মরণোত্তর চক্ষুদানের জন্য অঙ্গীকার করেছেন। এটা আমাদের জন্য সম্মানের। এতে করে অসংখ্য মানুষ মরণোত্তর চক্ষুদানে উৎসাহীত হবেন। এমনকি কর্নিয়া দান কার্যক্রমও এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, অনেকেই শুরুতে চক্ষুদানে আগ্রহী হোন, পরে যখন আমরা চক্ষু সংগ্রহ করতে যাই, তখন আর তাদের পরিবার দিতে চান না। কিন্তু শিব নারায়ণ দাশের ছেলে নিজ থেকে আমাদের কাছে এসেছেন এবং চক্ষুদানে সহযোগিতা করেছেন। শিব নারায়ণ দাশের মতো এমন ক্ষণজন্মা মানুষের আরও অনেক জন্ম হোক।
দানকৃত চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করেছেন বিএসএমএমইউর চিকিৎসক রাজশ্রী দাশ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘শিবনারায়ণ দেশকে একটি লাল-সবুজের পতাকা দিয়েছেন। মৃত্যুর পর দেহ ও চোখ দুটোও দান করেছেন। মরণোত্তর চক্ষুদানে মহত্ত্ব আছে। ১৯ এপ্রিল মারা যান তিনি। তার কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয় ১৯ এপ্রিল। পরের দিন ২০ এপ্রিল আমরা দুটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করি। মৃত্যুর ৬ ঘণ্টার মধ্যে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে হয়। কর্নিয়া সংগ্রহ করতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে।’
চোখের আলো ফিরে পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন মশিউর রহমান ও আবুল কালাম। মশিউর রহমান বলেন, ‘আগের থেকে ভালো দেখতে পাচ্ছি। আমার চোখে সমস্যা ছিল জন্ম থেকেই। শিবনারায়ণ দাশের পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই। চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে। দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি ফিরে পেলে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’
আবুল কালাম বলেন, ‘আমি ছোট বেলা থেকে বাম চোখে দেখতাম না। কর্নিয়া লাগানোর পর এখন দেখতে পাই। আমার ভালো লাগছে খুব। অপারেশনের আগে চোখে নানান সমস্যা ছিল। এখন নেই। সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন হয়েছে আমার।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিবনারায়ণ দাশের স্ত্রী গীতশ্রী চৌধুরী ও তার ছেলে অর্ণব আদিত্য দাশ।
গীতশ্রী চৌধুরী বলেন, ‘মৃত্যুর পর তার (শিবনারায়ণ দাশ) শেষ ইচ্ছে পূরণ করা আমাদের দায়িত্ব। যদিও আমার আত্মীয়স্বজনরা এটা মেনে নিতে পারেননি। তারা মনে করেছিলেন হয়তো অর্থকষ্টে দেহ দান করে গেছেন। কিন্তু না, তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন মৃত্যুর পর দেহ ধূলিসাৎ হয়ে যাবে...। আমাদের ছেলে ও আমারও দেহ দান করার ইচ্ছে আছে। আমার ৫৩ বছরের সাথীকে হারিয়েছি, আমি কিছু বলতে পারছি না। তিনি সারাজীবন দেশের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।’
অর্ণব আদিত্য দাশ বলেন, ‘আমার বাবা বেঁচে থাকবেন মানুষের মাঝে। তার চোখের কর্নিয়ায় দুজন আলো দেখছেন, তাদের মধ্যে বাবা বেঁচে থাকবেন।’
















সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম গ্রেপ্তার
নাগরিক সেবার ফি ৫ গুণ বৃদ্ধি করল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল
কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুলপরিমাণ মাদকসহ আটক ৪
কুমিল্লায় বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী পালিত
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেন হচ্ছে আধুনিক ডিসি পার্ক
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম গ্রেপ্তার
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী আজ
কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আয় হলেও চালু হচ্ছে না অভ্যন্তরীণ রুট
নাগরিক সেবার ফি ৫ গুণ বৃদ্ধি করল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২