চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দেশ বরেণ্য আলেমদের মেহমান উল্লেখ করে
বেশ কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাফসির মাহফিলের পোষ্টার ছড়িয়ে
চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কামরুল হাসান ও আবদুর রউপ কাশফুল গংয়ের বিরুদ্ধে। এ
ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে কালিকাপুর ইউনিয়নের কিং ছুপুয়া রহমানীয়া
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে লিখিত
বক্তব্য পাঠ করেন মাদরাসা প্রধান ও কমিটির সেক্রেটারী হুসাইন মোর্শেদ। এ
সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ জিয়া মোঃ শহীদুল ইসলাম, হানিফ
মিয়া, ফটিক বাচ্চু, আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, মোস্তফা ড্রাইভার, মোঃ
মাহবুব, হাসান মোর্শেদ, আবু বকর, আবু তাহের, মহিন মিয়া, জয়নাল আবেদীন, মোঃ
মাছুম, মোঃ খলিল প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগে করা হয়, কিং ছুপুয়া
গ্রামবাসীর উদ্যোগে গত ১৩ ডিসেম্বর এক বিশাল ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু হঠাৎ করে কামরুল হাসান নামীয় একটি ফেসবুক আইডি থেকে কিং ছুপুয়া
রহমানীয়া মাদরাসার উদ্যোগে ২৬ ডিসেম্বর তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের প্রচারণা
চালানো হয়। মাহফিলের মেহমান হিসাবে দেশবরেণ্য আলেম শায়েখ আহমদ উল্লাহ ও
মুফতি আমির হামজার নাম প্রচার করা হয়। সভাপতি হিসেবে বিশিষ্ট সমাজসেবক ডাঃ
আবদুল গফুরের নাম দিয়ে একই আইডি থেকে মাদ্রাসার উন্নয়ন ও ওয়াজের খরচের জন্য
দেশ-বিদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন জনের নিকট থেকে তাঁর দেশে অবস্থানরত ছোট ভাই
আবদুর রউপ কাশফুলের বিকাশ নাম্বারে চাঁদা কালেকশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করা
হয়। বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ স্থানীয়
গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও সামাজিকভাবে কাউকে
না জানিয়ে মাহফিলের নামে প্রতারণা করে কেন চাঁদা সংগ্রহ করা হচ্ছে? এর
প্রতিকারে সামাজিক ও স্থানীয়ভাবে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলোচনাক্রমে
দাওয়াতী মেহমানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে শায়েখ আহমদ উল্লাহ ও মুফতি আমীর
হামজা মাহফিলে দাওয়াত পাননি বলে নিশ্চিত করেন।
গ্রামবাসীর
সিদ্ধান্তক্রমে বিদেশে অবস্থানরত কামরুল হাসান ও দেশে থাকা তার আপন ভাই
আব্দুর রউফ কাশফুল গত ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সংগ্রহকৃত অর্থ মাদরাসার
ফান্ডে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও অদ্যাবদি অর্থ জমা দেয়নি। টাকা জমা না দিয়ে
অসৎ উদ্দেশ্যে পারিবারিক ওয়াজ এর নাম করে আবদুর রউপ কাশফুল পূনরায় সুকৌশলে
আগামী ৪ জানুয়ারি তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের পোষ্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
প্রচার করে। সেই পোস্টারে মাদরাসার নাম নেই, সভাপতি তার আপন বড় ভাই
কাওসার, সার্বিক ত্বত্তাবধানে আপন ছোট ভাই আবদুর রউফ, প্রচারে আপন ভাই
কামরুল হাসান। প্রচারণামূলক এসব পোস্টার বা ফেস্টুনে বারবার ওয়ায়েজিনদের
নাম পরিবর্তন করতেও দেখা যায়। গ্রামবাসীকে অসম্মানকারী সহোদর ভাইগণ
প্রতারনামূলক মাহফিল আয়োজন করে মাদরাসার টাকা আত্মসাৎ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত
রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। শিগগিরই প্রতারণামূলক মাহফিল বন্ধ ঘোষনা করে
উত্তোলনকৃত সকল অর্থ মাদরাসা ফান্ডে জমা করাসহ সামাজিক শৃংখলা ও
স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জোর দাবি জানান গ্রামবাসী।
একটি পোস্টারে
মাহফিলের সভাপতি ডাঃ আবদুল গফুর বলেন, ‘আমাদের গ্রামে তাফসিরুল কোরআন
মাহফিল হয়েছে গত ১৩ ডিসেম্বর। নতুন করে প্রচারিত মাহফিলের ব্যাপারে আমি
কিছুই জানি না। তাফসির মাহফিলের নামে প্রতারণা করাই কামরুল হাসান গংয়ের
উদ্দেশ্য। গ্রামবাসী তাদের প্রতারণার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। তবে কামরুল হাসান
গং শিগগিরই সংগ্রহকৃত টাকা জমা না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
সোমবার
রাতে কিং ছুপুয়া গ্রামের আবদুর রউপ কাশফুলের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত
বিকাশ নাম্বার ও মুঠোফোনে কল করলে তিনি উপযুক্ত প্রমাণসহ সবাইকে জানাবেন
বলে মন্তব্য করেন। তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
