শুক্রবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১২ পৌষ ১৪৩২
এক নবীর সুসংবাদ, আরেক নবীর বিশ্বজয়
ঈসা (আ.) ছিলেন মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের সুসংবাদদাতা
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:০৭ এএম |



 ইসলামী আকিদা ও বিশ্বাসের অন্যতম স্তম্ভ হলো সব নবী-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। উলুল আযম বা দৃঢ় সংকল্পধারী রাসুলদের মধ্যে ঈসা (আ.) ছিলেন অন্যতম একজন। পবিত্র কোরআনের বর্ণনা ও ইসলামী ইতিহাস অনুযায়ী, ঈসা (আ.)-এর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ছিল তাঁর পরবর্তী ও শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের সুসংবাদ প্রদান করা। 
পবিত্র কোরআনের ঘোষণা
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ঈসা (আ.) কর্তৃক শেষ নবীর সুসংবাদ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
ইরশাদ হয়েছে : ‘স্মরণ করো, যখন মারইয়াম-তনয় ঈসা বলল, হে বনি ইসরাঈল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রাসুল। আমি আমার পূর্ববর্তী তাওরাত কিতাবের সত্যায়নকারী এবং আমার পরে আহমদ নামে যে রাসুল আসবেন, আমি তাঁর সুসংবাদদাতা।’ (সুরা : আস-সফ, আয়াত : ০৬) এই আয়াতে ‘আহমদ’ নামটি আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম নাম, যা আসমানি কিতাবসমূহে পূর্বেই উল্লেখিত ছিল। 
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিজের বক্তব্য 
স্বয়ং নবী করীম (সা.) নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে ঈসা (আ.)-এর সুসংবাদের কথা উল্লেখ করেছেন।
একটি প্রসিদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সাহাবিগণ তাঁর নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে বললে তিনি বলেন, ‘আমি আমার পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া, আমার ভাই ঈসা (আ.)-এর সুসংবাদ এবং আমার মায়ের দেখা সেই নূর, যা আমার জন্মের সময় তাঁর থেকে নির্গত হয়ে শামের (সিরিয়া) প্রাসাদসমূহকে আলোকিত করেছিল।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৭১৬৩, হাকেম: ৪১৭৫; আলবানী হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন) 
হাদিসের আলোকে দুই নবীর সম্পর্ক 
ঈসা (আ.) এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে আদর্শিক ও আত্মিক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সহিহ বুখারিতে এসেছে— মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি দুনিয়া ও আখিরাতে মারিয়ামপুত্র ঈসার সবচেয়ে নিকটবর্তী মানুষ। নবীরা সবাই বৈমাত্রেয় ভাই; তাঁদের ধর্ম এক, কিন্তু মা ভিন্ন (অর্থাৎ শরিয়তের শাখা-প্রশাখায় ভিন্নতা ছিল)।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৪৩) 
ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা
বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) তাঁর ‘তাফসিরুল কুরআনিল আজিম’-এ লিখেছেন : ‘ঈসা (আ.) ছিলেন বনি ইসরাঈল বংশীয় সর্বশেষ নবী। তিনি তাঁর কওমকে সরাসরি সম্বোধন করে বলেছেন যে, তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবে না, কেবল ‘আহমদ’ (মুহাম্মদ সা.) ছাড়া। তিনি তাঁর নবুওয়াতের দায়িত্বের একটি অংশ হিসেবেই শেষ নবীর আগমনের পথ প্রশস্ত করে গেছেন।’ 
মুফতি মুহাম্মদ শফি (রহ.) তাঁর ‘মাআরিফুল কুরআন’ তাফসিরে লিখেছেন : “ঈসা (আ.)-এর মাধ্যমে মুহাম্মদ (সা.)-এর সুসংবাদ দেওয়ার বিশেষ তাৎপর্য হলো— ঈসা (আ.) হলেন আসমানি কিতাবধারী সর্বশেষ নবী, যিনি মুহাম্মদ (সা.)-এর ঠিক আগে এসেছেন। ফলে তাঁর সাক্ষ্য ও সুসংবাদ-পরবর্তী উম্মতের জন্য দলিল হিসেবে কাজ করে।
ঈসা (আ.) শুধু একজন নবীই ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন বিশ্বনবীর আগমনের অগ্রদূত। ২৫ ডিসেম্বর বা বড়দিনকে কেন্দ্র করে যখন খ্রিস্টীয় বিশ্বে উৎসব চলে, তখন একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো ঈসা (আ.)-এর প্রকৃত শিক্ষা এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের সেই মহান সুসংবাদকে মানুষের সামনে তুলে ধরা। কিয়ামতের আগে তাঁর পুনরায় আগমন ঘটবে এবং তিনি আমাদের নবীর (সা.) আদর্শেরই অনুসরণ করবেন; যা দুই নবীর মধ্যকার চিরন্তন বন্ধনেরই বহিঃপ্রকাশ।

















http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
মাতৃভূমিতে তারেক রহমান
‘যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে’
দেশে নেমেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ
দেশবাসীর প্রতি তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
আই হ্যাভ এ প্ল্যান: তারেক
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
দেশে ফিরে তারেক রহমান তিন দিন কোথায় যাবেন, কী করবেন
জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কুমিল্লা সদরে হাজী ইয়াছিনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ
১০ হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে এলডিপি ছেড়ে বিএনপিতে ড. রেদোয়ান
দেশের পথে তারেক রহমান
লালমাইয়ে দুই ইটভাটায় অভিযান, জরিমানা ৪ লাখ টাকা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২