কুমিল্লার
মুরাদনগরে যৌতুকের দাবিতে তানজিনা আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূকে প্রকাশ্য
দিবালোকে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তার স্বামী। মঙ্গলবার দুপুরে
উপজেলা সদরের গোমতী ব্রিজের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের
ঘটনা ঘটে। ঘাতক স্বামী আবদুল কুদ্দুস ওরফে রুবেলকে (২৫) ঘটনাস্থল থেকে আটক
করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
নিহত তানজিনা উপজেলার ধামঘর
ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের তাজুল ইসলামের মেয়ে। ঘাতক রুবেল নবীপুর পশ্চিম
ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে। তানজিনার পরিবার এই ঘটনার
সুষ্ঠু বিচার ও ঘাতক রুবেলের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর মধ্যে এই
ঘটনায় চরম ক্ষোভ ও শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা
যায়, প্রায় এক বছর আগে পারিবারিক ভাবে রুবেলের সাথে তানজিনার বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকেই রুবেল ও তার পরিবার তানজিনাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে।
তানজিনার দরিদ্র বাবা সাধ্যমতো চেষ্টা করলেও রুবেলের লোভের অবসান হয়নি।
যৌতুকের টাকা না পেয়ে প্রায়ই তানজিনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত
রুবেল। নির্যাতনের মাত্রা সইতে না পেরে গত রবিবার তানজিনা নিজেই বাদী হয়ে
মুরাদনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
থানায় অভিযোগ দেওয়ায় রুবেল আরও
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার দুপুরে কৌশলে গোমতী ব্রিজের বেড়িবাঁধ এলাকায়
তানজিনাকে ডেকে আনে। সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রুবেল তার সাথে থাকা
ধারালো ছুরি দিয়ে জনসম্মুখে তানজিনাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। তানজিনার
আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসার আগেই তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গভীর
ক্ষত সৃষ্টি করে রুবেল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তানজিনার মৃত্যু
হয়।
হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে ঘাতক
রুবেলকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ
দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধারপূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
মুরাদনগর থানার অফিসার
ইনচার্জ (ওসি) হাসান জামিল দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, ঘাতক স্বামী
বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা
হয়েছে। এই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।
