
চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অবৈধভাবে দলিল রেজিষ্ট্রি করতে রাজি না
হওয়ায় সাব রেজিষ্টার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) তারেক মাহমুদকে লাঞ্চিত ও অফিস থেকে
বের করে দিয়েছে ভেন্ডাররা। সোমবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ সাব
রেজিষ্ট্রি অফিসে এ ঘটনা ঘটে। সাব রেজিষ্ট্রার চলে যাওয়ায় দলিল করতে না
পেরে ফেরত গেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী ও পুরুষ। তারেক মাহমুদ মনোহরগঞ্জ
সাব রেজিষ্ট্রার হলেও চৌদ্দগ্রামে গত দুইদিন যাবৎ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন
করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম সাব রেজিষ্ট্রি
অফিসে আগের সাব রেজিষ্ট্রারের কথা উল্লেখ করে আইন না মেনে প্রয়োজনীয় কাগজ
ছাড়াই দলিল রেজিষ্ট্রি করতে চাপ দেয় ভেন্ডাররা। এরমধ্যে চৌদ্দগ্রাম দলিল
লিখক সমিতির সভাপতি শাহনেওয়াজ শাহীন ও স্ট্যাম্প ভেন্ডার কাউছার আহমেদ
অন্যতম। সাব রেজিষ্ট্রার তারেক মাহমুদ আইনের বাইরে কোন দলিল রেজিষ্ট্রি
করতে পারবে না বলায় ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে ভেন্ডাররা। পরে ধমক দিয়ে সাব
রেজিষ্ট্রার তারেক মাহমুদকে চেয়ার থেকে নামিয়ে বের করে দেন। তখন অফিসের
অন্যান্য অসাধু কর্মকর্তারা তাকিয়ে থাকলেও প্রতিবাদ করেনি। লাঞ্চিত হওয়ার
পর সাব রেজিষ্ট্রার চলে যাওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী-পুরুষ দলিল না করেই
বাড়ি ফিরে গেছেন। গত কয়েকবছর যাবৎ চৌদ্দগ্রামের সংঘবদ্ধ দলিল লিখক বা
ভেন্ডার চক্র তাদের কথামতো অনিয়মে রাজি না হলে সাব রেজিষ্ট্রারকে লাঞ্চিত
করেন। এরআগে সাব রেজিষ্ট্রার মেহেদী হাসানকেও লাঞ্চিত করেছিল ভেন্ডাররা।
মুন্সিরহাট
ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ মাওলানা নেছার উল্লাহ বলেন, নানার
বাড়ির হক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি কবলা নিতে আত্মীয় স্বজন সবাইকে অনেক কষ্টে
নিয়ে আসলাম। এখানে আসার পর শুনেছি, ভেন্ডারদের সাথে দ্বন্দ্বে সাব
রেজিষ্টার না থাকায় দলিল করতে পারিনি। এখন সবাই চলে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের
ব্যবসায়ী জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের গাংরার শাহ আলম বলেন, ক্রয় করা জমির কবলা
নিতে এসেছি। কিন্তু সাব রেজিষ্ট্রার-ভেন্ডারদের দ্বন্দ্বে সাব রেজিষ্ট্রার
চলে যাওয়ায় কবলা নিতে না পেরে চট্টগ্রাম ফিরে যাচ্ছি।
স্ট্যাম্প
ভেন্ডার কাউছার আহমেদ বলেন, সাব রেজিষ্টার তারেক মাহমুদ কাগজপত্র নিয়ে
ঝামেলা করেছে। আজকে ওনি চলে গেছে। পরে এসে দলিল করবে বলে আমাদেরকে
জানিয়েছে। ওনাকে আমার পক্ষ থেকে লাঞ্চিত করা হয়নি।
চৌদ্দগ্রাম দলিল
লিখক সমিতির সভাপতি শাহনেওয়াজ শাহীন বলেন, পাওয়ার রেজিষ্ট্রি সাব কবলা দলিল
নিয়ে একটি ঝামেলা হয়েছে। ওনি আইন দেখিয়ে করতে রাজি হয়নি। আগের সাব
রেজিষ্ট্রার এসব দলিল করতো। কিন্তু তারেক মাহমুদ আর্থিক কিছু চাচ্ছেন, না
দেওয়াতে দলিল না করেই চলে গেছে।
চৌদ্দগ্রাম সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিষ্ট্রার তারেক মাহমুদ বলেন, ঝামেলার বিষয়টি অফিসিয়াললি দেখা হবে।
সোমবার
বিকেলে কুমিল্লা জেলা রেজিষ্ট্রার আনোয়ারুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সাব
রেজিষ্ট্রার তারেক মাহমুদ মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেছে। লিখিত অভিযোগ
দাখিল করবে। তারপর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
