
বাংলাদেশ
ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ৩৯ বছরের
গৌরবময় যাত্রায় যারা নিজেদের সাফল্যে আলো ছড়িয়েছেন, তেমন ৫০ জন লিজেন্ডারি
খেলোয়াড়ের নাম উন্মোচন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে এ উপলক্ষে বিকেএসপির অডিও-ভিজ্যুয়াল সেন্টারে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল মো. মুনীরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন লিজেন্ডদের হাতে সম্মাননা
ক্রেস্ট ও বিকেএসপির ঐতিহ্যবাহী উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। পরে বের করা হয়
একটি বর্ণাঢ্য র্যালি। র্যালিটি বিকেএসপির বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে
প্রশাসনিক ভবনের বিপরীত পাশে স্থাপন করা ‘বিকেএসপি লিজেন্ডস’ নামক ফলটির
সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ফলকটি উন্মোচন করা হয়।
৫০
জনের তালিকায় স্থান পেয়েছেন একসময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, দেশের অন্যতম
সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও। ৫০ জন লিজেন্ডারি ক্রীড়াবিদের মধ্যে রয়েছে
যাদের নাম
আর্চারি: মো. হাকিম আহমেদ রুবেল, মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান, দিয়া সিদ্দিকি, আব্দুর রহমান আলিফ ও মো. সাগর ইসলাম।
অ্যাথলেটিক্স: বিমল চন্দ্র তরফদার, ফৌজিয়া হুদা জুঁই, মেজবাহ আহমেদ, মো. জহির রায়হান ও শিরিন আক্তার।
ক্রিকেট:
এএম নাইমুর রহমান দুর্জয়, মুশফিকুর রহিম, আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান,
শারমিন আক্তার সুপ্তা, ফারজানা হক পিংকি, মুমিনুল হক সৌরভ, লিটন দাস ও
মারুফা আক্তার।
ফুটবল: মো. মাসুদ রানা, হাসান আল মামুন, মো. মনোয়ার
হোসেন, ফিরোজ মাহমুদ টিটু, মো. জাহিদ হাসান এমিলি, মো. জাহিদ হোসেন, মো.
মামুনুল ইসলাম, হেমন্ত ভিন্সেন্ট বিশ্বাস, আঁখি খাতুন, মো. রহমত মিয়া,
ঋতুপর্ণা চাকমা, আফাইদা খন্দকার ও শেখ মোরসালিন।
হকি: আ ন ম মামুন-উর
রশীদ, মোহাম্মদ আলমগীর আলম, টুটুল কুমার নাগ, মো. মাহাবুবুল এহসান রানা,
রাসেল মাহমুদ জিমি ও মো. মামুনুর রহমান চয়ন।
শুটিং: আসিফ হোসেন খান, শারমিন আক্তার ও আব্দুল্লাহ হেল বাকি।
সাঁতার: মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মাহফিজুর রহমান সাগর ও মাহাফুজা খাতুন শিলা।
বাস্কেটবল: মিঠুন কুমার বিশ্বাস, মো. সামসুজ্জামান খান ও মো. খালেদ মাহমুদ আকাশ।
বক্সিং: মো. আব্দুর রহিম।
টেনিস: এস কে. মহিউদ্দিন ওয়ালিউল্লাহ ঝিলান।
এমন
উদ্যোগ বর্তমান শিক্ষাণার্থীদের অনুপ্রাণিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে
উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বিকেএসপির খুদে খেলোয়াড়রা। তারা সাকিব আল
হাসানে নাম দেখেও স্বস্তি প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক
খেলোয়াড় বলেন, ‘বিকেএসপিকে ধন্যবাদ। সাকিবের খারাপ সময়ে তাকে ভুলেনি তার
সাবেক প্রতিষ্ঠান। যখন থেকে আমরা শুনেছি এমন লিজেন্ড খেলোয়াড়দের তালিকা
হচ্ছে, তখনই মনে করেছিলাম সাকিব থাকবে না। তবে এখন দেখছি সাকিবের নাম আছে,
যা ইতিবাচক। কারণ খেলা আর রাজনীতি আলাদা বিষয়।’
আর যাদের ঘিরে এ আয়োজন,
সেসব লিজেন্ডরা নিজ প্রতিষ্ঠানে এমন সম্মান পেয়ে বেশ খুশি। এক সময়কার হকি
মাঠ কাঁপানো রাসেল মাহমুদ জিমি বলেন, ‘এত বছর নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে এমন
সম্মানিত হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আমি এই প্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত
তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
আরেক হকি খেলোয়াড় মামুনুর রহমান চয়ন
বলেন, ‘জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। এটা সবচেয়ে গর্বের বলে আমি মনে করি।
আশা করি এতে আগামীর খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হবে।’
এই আয়োজনে লিজেন্ডরা
শুধু বিকেএসপিকেই নয়, দেশকে আলোকিত করেন বলে মনে করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুনীরুল ইসলাম। সাকিব ইসুতে তিনি জানান, খেলোয়াড়
সাকিবকেই মূল্যায়িত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক
পর্যায়ে ক্রীড়া সাফল্য এনে দেওয়া সাবেক শিক্ষার্থীদের সম্মান জানাতেই এই
লিজেন্ড তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে এ প্রথম এত বড়
পরিসরে লিজেন্ডদের নাম একসঙ্গে উন্মোচন করা হলো।’
