
মোহাম্মদ
সালাহকে ঘিরে বিতর্ক চলছিল ম্যাচের আগেই। দল থেকে বাদ পড়ার অভিযোগে তিনি
নিজেই যখন ক্লাব-কোচ সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন, লিভারপুলের
প্রস্তুতিতেও যেন চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়ে যায়। তবে মাঠে নামার পর সেই
অস্থিরতার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। বরং সালাহবিহীন লিভারপুলই সান সিরোতে
চোখে পড়ল আরও সংগঠিত, আরও ক্ষুধার্ত।
শেষ মুহূর্তের পেনাল্টি থেকে
দোমিনিক শোবোস্লাইয়ের সুনিপুণ গোলেই ইন্টার মিলানকে ১–০ গোলে পরাজিত করে
গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট তুলে নিয়েছে আর্নে স্লটের দল। ৮৮তম মিনিটে ভিডিও
অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির দীর্ঘ পর্যালোচনার পর নিশ্চিত হওয়া সেই পেনাল্টিই
বদলে দেয় ম্যাচের গতিপথ।
বক্সের ভেতর ফ্লোরিয়ান ভির্টজের জার্সি ধরে
টানেন আলেসান্দ্রো বাস্তোনি। ঘটনাটি ক্যামেরায় ধরা পড়তেই রেফারি সিদ্ধান্তে
দৃঢ় হন। সোমার সঠিক দিক আন্দাজ করেও শোবোস্লাইয়ের জোরালো শট ঠেকাতে ব্যর্থ
হন।
এই জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের লিগ পর্বে ছয় ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে
শীর্ষ আটে জায়গা করে নিয়েছে লিভারপুল। বিপরীতে, নিজেদের মাঠে টানা ১৯ ম্যাচ
অপরাজিত থাকার পর অবশেষে ইউরোপীয় অঙ্গনে হার দেখল ইন্টার মিলান। শেষবার
এমনটা ঘটেছিল ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে।
ম্যাচের
প্রথমার্ধে বল দখল থেকে আক্রমণ; সবখানেই এগিয়ে ছিল লিভারপুল। ৩২তম মিনিটে
ইব্রাহিমা কোনাতের গোলটি বাতিল হয়ে যায় হ্যান্ডবলের কারণে। কর্নার থেকে
হুগো একিতিকের হাতে লেগে বল তার দিকেই ফিরে আসায় ভিএআর গোলটি প্রত্যাখ্যান
করে।
এ সময় কার্টিস জোন্স, শোবোস্লাই ও একিতিকেকে একাধিকবার পরীক্ষা
দিতে হয় ইন্টারের গোলরক্ষক ইয়ান সোমারকে। প্রথমার্ধেই ইনজুরিতে পড়ে বের হয়ে
যেতে হয় ইন্টারের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় পিওতর জিলিনেস্কি ও ইয়ান
বিসেককে।
গোল বাতিল হওয়ার পর ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরে আসে ইন্টার।
বারেল্লার ফ্রি-কিক অল্পের জন্য বাইরে যায়, আর লাউতারো মার্টিনেজের হেড
চমৎকার দক্ষতায় রুখে দেন অ্যালিসন বেকার।
দুই দলের আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে
ম্যাচ যখন গোলশূন্যের দিকেই যাচ্ছিল, তখনই আসে নাটকীয় সেই মুহূর্ত। বদলি
নামা ভির্টজের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে বাস্তোনির টান দেখে ভিএআর
পেনাল্টির পরামর্শ দেয়। আর সেখান থেকেই ম্যাচের সমাপ্তি লেখেন শোবোস্লাই।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোল পাওয়া এই হাঙ্গেরিয়ান মিডফিল্ডার লিভারপুলের বর্তমান রূপান্তরেরও প্রতীক হয়ে উঠছেন যেন।
