স্টাফ
রিপোর্টার।। লন্ডনস্থ বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিসমিল্লাহ
গ্রুপের কর্ণধার এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত প্রবাসী রাজনীতিবিদ
আবদুল্লাহ আল মামুন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
করে বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনও শেখ হাসিনার
সর্বশেষ বিতর্কিত নির্বাচনের মতোই অশুভ পরিণতি ডেকে আনতে পারে এবং দেশকে
নতুন করে অস্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত করতে পারে।
দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে
দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে
যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তা নতুন করে জাতিকে সংকট, অনিশ্চয়তা
ও রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। তাঁর মতে, এই নির্বাচন যদি
জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণ ছাড়া হয়, তবে এ নির্বাচন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা
হয়ে থাকবে এবং তার ফলাফল দেশকে আরও বিভক্ত ও অস্থিতিশীল করে তুলবে।
তিনি
আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত
চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন ঝুঁকির মুখে রয়েছে। একই সঙ্গে দেশের
গণতন্ত্র, যা ইতোমধ্যে আইসিইউতে রয়েছে, তা পুনরুদ্ধার নাও হতে পারে।
তিনি
আরো বলেন, জুলাই আন্দোলনের সাহসী যোদ্ধারাও জীবনঝুঁকির মধ্যে আছে, যা
দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাঁর
ভাষায়, যদি কোনো জাতি তার বিবেকবান তরুণদের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে
সেই রাষ্ট্র কখনোই সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশে এগোতে পারে না।
আবদুল্লাহ আল
মামুন মনে করেন শুধু নির্বাচন নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংকট,
প্রশাসনিক অস্বচ্ছতা এবং অর্থনীতির উপর ক্রমবর্ধমান চাপ—সব মিলিয়ে দেশ এক
অনিশ্চিত সেতুপথে দাঁড়িয়ে আছে। তাই আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেশের
রাজনৈতিক অঙ্গন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্র কিংবা সামগ্রিক গণতান্ত্রিক
প্রক্রিয়া—কোন ক্ষেত্রেই অর্থবহ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
লন্ডন প্রবাসী হলেও
আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশের রাজনীতি ও উন্নয়নের প্রতি গভীরভাবে
সম্পৃক্ত। তিনি কুমিল্লা-১০ (লালমাই-নাঙ্গলকোট) আসন থেকে জাতীয় নির্বাচনে
অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন
এবং বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন। তিনি
বলেন, তাঁর স্বপ্ন তাঁর জন্মভূমির উন্নয়নকে ঘিরে এবং তিনি চান শিক্ষা,
স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, কৃষি ও স্থানীয় অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে আরও
শক্তিশালী করতে কাজ করতে।
তিনি মনে করেন রাজনীতি হলো মানুষের সেবা এবং সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতৃত্বই কোনো অঞ্চলের বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে।
সাক্ষাৎকারের
শেষ মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,
একটি দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করে জনগণ, আর জনগণ যদি ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে
না পারে তাহলে দেশ তার প্রকৃত গণতান্ত্রিক গন্তব্যে কখনো পৌঁছাতে পারবে
না। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তরুণ প্রজন্মই ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি এবং তাদের
আত্মবিশ্বাস, নিরাপত্তা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে দেশের অগ্রগতি থমকে
যাবে। তাঁর মতে, দেশের সংকট কাটিয়ে উঠতে এখন সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে একটি
নিরপেক্ষ পরিবেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, বিরোধী দলের স্বাধীন মতপ্রকাশের
সুযোগ এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
