বাংলাদেশকে
অস্থিতিশীল করতে ভারত সব আয়োজন করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়
নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি
বলেন, যারা অস্থিশীল করতে চায়, যারা হত্যাকারী, খুনি, যারা গত ১৭ বছর ধরে
ভোট হতে দেয় নাই, যারা গত ১৭ বছর ধরে বলত, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ স্বামী-স্ত্রীর
সম্পর্ক। আমরা তো স্ত্রীকে পাঠাই দিছি তাহলে তো সে সম্পর্ক আর থাকার কথা
নয়। এখন সম্পর্ক হবে রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক।
বুধবার (১৭
ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ
ইউনিয়নের উটখারা গ্রামের পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পদযাত্রা
শেষে একটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
হাসনাত
আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, ওনারা যদি আমাদের
সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাইতো তাহলে যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে
চায় যারা বাংলাদেশের শত্রু, তাদেরকে আমাদেরকে কাছে হস্তান্তর করে বিচারের
মুখোমুখি করে দিত। কিন্তু তারা সেটির পরিবর্তে আমাদের দেশে অস্থিতিশীল করার
চেষ্টা করছে। ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি আওয়ামীলীগের দৃষ্টিতে
বাংলাদেশ দেখবে নাকি জনগণের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ দেখবে। আমরা বারবার বলছি,
ভারতের জনগণ ও সার্বভৌমত্বের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই। আমাদের শত্রুতা
ভারতের পলিশির সাথে। গুজরাট কসাই হাসিনা কসাইকে জায়গা দিয়েছে।
আপনাদের
বাংলাদেশে যে নীতিমালা রয়েছে, সেটা দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে। আপনাদের
সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনারা কি আওয়ামীলীগের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ দেখবেন নাকি
জনগণের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ দেখবেন। বাংলাদেশের জনগণের সাথে ভারতের জনগণের
সম্পর্ক রাখতে চান তাহলে এ সম্পর্ক হবে সবচেয়ে সমৃদ্ধ একটি সম্পর্ক। আর যদি
শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের সঙ্গে সম্পর্ক চান তাহলে এ সম্পর্ক আরও বেশি তিক্ত ও
অন্ধকার হবে। সে জন্য আমি ভারতকে বলব আপনারা জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক
সৃষ্টি করুন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, বাংলাদেশে পরবর্তীতে যে সংকট
আসতে যাচ্ছে সে সংকটের নেতৃত্ব দিবে তরুণ প্রজম্ম। এর সমাধানের দায়ভারও এ
তরুণ প্রজম্মের। আমাদের এ তরুণ প্রজম্মকে প্রস্তুত থাকতে হবে, তাদের
আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। কেবলমাত্র ভারতবিরোধীতা নয়, আমাদের
কম্পিউটার প্রযুক্তিতে শিক্ষিত হতে হবে, বিজ্ঞান, অর্থনীতি শক্তি, সামরিক
শক্তি রাজনৈতিক শক্তি ও সাংস্কৃতিক শক্তিতে আমাদের সক্ষম হতে হবে।
কেবলমাত্র স্বনির্ভশীল নীতিই পারে ভারতের আধিপত্য থেকে আমাদের মুক্তি
দিতে।
ভারত বছরের পর বছর চায়নি আমাদের চিকিৎসাখাত উন্নতি হোক। কারণ
আমাদের চিকিৎসাখাতে উন্নতি হলে ভারতের চিকিৎসাখাত ভেঙে পড়বে। তারা বছরের
পর বছর যুগের পর যুগ চেয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যেন ঘুরে না
দাঁড়ায়।
হাসনাত আরও বলেন, আমি এই গ্রামবাসীকে বলব, আপনারা যে মার্কায়
খুশি সে মার্কায় ভোট দিন, যাকে খুশি তাকে ভোট দিন, তবে বিবেককে প্রশ্ন করে
আপনারা ভোট দিবেন। আপনারা বিবেককে প্রশ্ন করবেন কারা দেশকে সমৃদ্ধ করবে
সর্বপুরি এই দেবিদ্বারকে সমৃদ্ধ করবে। বিবেক যে সিদ্ধান্ত দিবে আপনারা
সেটাই করবেন। নির্বাচন ফলাফল আপনার সাথে আমার সম্পর্ক নির্ধারণ করবে না,
ফলাফল যাই হোক না কেন, আন্তরিকতা সম্পর্ক সব সময় থাকবে। আপনি যেন আমার
বিরুদ্ধেও স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে পারেন সেটার সুব্যবস্থাও আমি আপনার
জন্য করে দেব।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, দেবিদ্বার উপজেলা জাতীয় নাগরিক
পার্টির প্রধান সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল
ইসলাম শামীম, শামীম কাউছার, মাও. রায়হান সিদ্দিকী প্রমুখ।
