
জুলাই
বিপ্লব সহ সকল গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী
লীগ কর্তৃক দেশে নাশকতা সৃষ্টির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও
সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগর শাখা। গতকাল
বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ
সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজগঞ্জ মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা "ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই,
শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই" এবং "এই দেশ আমার দেশ- বাংলাদেশ বাংলাদেশ" ইত্যাদি
স্লোগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মহানগর ছাত্রশিবিরের
সভাপতি হাসান আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান ফয়সাল এবং কেন্দ্রীয়
ছাত্রশিবিরের একজন নেতা সহ মহানগরীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মীরা। বিক্ষোভ
মিছিল শেষে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসান আহমেদ তার বক্তব্যে
বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস-এর প্রতি দ্রুত বিচার
কাজ সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "জুলাই বিপ্লবের দেড় বছর
অতিবাহিত হওয়ার পরেও আমরা দেখতে পাচ্ছি ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা ২৮ অক্টোবর
২০০৬ সাল থেকে ২৪শে'র জুলাই আন্দোলন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষকে হত্যা
করেছে। দেড় বছর পরও আমরা কোনো খুনিকে ফাঁসি দিতে দেখিনি।" তিনি আরও বলেন,
"আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস'কে বলে দিতে চাই, আগামী ত্রয়োদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই সকল গণহত্যা এবং জুলাই আন্দোলনে সকল শহীদদের
হত্যাকারীদের খুব দ্রুত বিচার করতে হবে।" প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন
তোলেন, "আওয়ামী লীগ কিভাবে এই দেশে কর্মসূচি দেয়?" এবং এদের নাশকতামূলক
কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান। বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত
কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবির নেতা তার বক্তব্যে জুলাইয়ে সংগঠিত গণহত্যার তীব্র
নিন্দা জানান। তিনি বলেন, "জুলাইয়ে গণহত্যা চালিয়ে দুই শতাধিকের অধিক
ছাত্র-জনতাকে মেরে এখনো তোমাদের কোনো অনুশোচনা হয়নি। এই খুনি আওয়ামী লীগকে
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ রাখতে হবে এবং এদেরকে বাংলাদেশে কোনোভাবেই চলতে দেওয়া
যাবে না।"
তিনি হুঁশিয়ারি করে বলেন, "যারা এই খুনি আওয়ামী লীগের
রাজনীতিকে আবার বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করছেন, তাদেরও শেষ রক্ষা হবে না।
তোমরা যদি জুলাইয়ে আহত, নিহত ও সাধারণ জনগণের সাথে বেইমানি করো, তোমাদের
জবাব বাংলাদেশের জনগণ দিবে।" দ্রুত বিচার বিলম্বিত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি
কিছু মহলের উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন "সরকারকে যারা অন্যায়ভাবে প্রেশার
দিচ্ছে, তাদেরকেও হুশিয়ার করে দিতে চাই। আমাদের কাছে স্পষ্ট কারা সরকারকে
অন্যায়ভাবে প্রেশার দিচ্ছে, জুলাই নিয়ে তালবাহানা করছে।" এছাড়া, তিনি একটি
রাজনৈতিক দলকে বলেন, "আজকে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কর্মসূচি দিয়েছে, আর একটি
দলের নেতৃবৃন্দ লন্ডনে বসে আলু এবং পেঁয়াজের গল্প শোনাচ্ছে। আমি তাদেরকে
বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের জনগণ আর আলু-পেঁয়াজের গল্প শুনতে চায় না।
বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে শিখেছে, এদেশের মানুষ রাজপথে নেমে জীবন
দিতে শিখেছে। শেষে তিনি বলেন আমরা এই নতুন বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ সোনার
বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।"
