বাংলাদেশ
ইসলামী ছাত্রশিবির কেন্দ্রীয় সভাপতি মু. জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, আবরার
ফাহাদের হত্যাকাÐের মাধ্যমে যেটা প্রকাশিত হয়েছে ক্যাম্পাস নির্যাতনের
দীর্ঘদিনের চিত্র ফুটে উঠেছিল। তাঁর হত্যাকাÐের মধ্য দিয়ে ভারতীয়
আধিপত্যবাদ আমাদের দেশে কতটা শিকড় গেড়ে ছিল তা স্পষ্ট হয়েছিল।
আজ
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে নগরীর টমছমব্রীজ এলাকার ইবনে
তাইমিয়া স্কুলের অডিটরিয়ামে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রশিবির আয়োজিত ক্যারিয়ার
গাইডলাইন প্রোগ্রাম ও সিরাতপাঠ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান শেষে এসব কথা
বলেন তিনি।
মু.জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, আবরার ফাহাদের এই শাহাদাতের
মধ্য দিয়ে পুরো একটা প্রজম্ম জেগে উঠেছিল। শুধুমাত্র বুয়েট নয়, বাংলাদেশের
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সকল শ্রেণীপেশার মানুষ এবং দেশের
বাহিরে অনেক মানবাধিকার সংস্থা থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। আবরার ফাহাদ
আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যায়নি তাঁর জীবনের যে সেক্রিফাইস এটার মধ্যে দিয়ে
আমাদের প্রজম্মের চোখ খুলে দিয়েছেন। সে চেতনাবোধকে ভবিষ্যত প্রজম্ম ধারণ
করবে। অদ‚র ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসে এবং কোথাও কোন ধরণের নিপীড়ন, আধিপত্যবাদ
বিরাজ করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি।
ছাত্রলীগ ও
আওয়ামীলীগ প্রসঙ্গে শিবির সভাপতি বলেন, সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি ঢাকাসহ
বিভিন্ন জেলা শহরে তারা গোপনে ঝটিকা মিছিল করছে। আমরা জানতে পেরেছি যে,
পাশ্ববর্তী একটি রাষ্ট্র থেকে তাদের পিছনে হিউজ পরিমাণ টাকা-পয়সা ইনভেস্ট
করা হচ্ছে এবং প্রশাসনের মধ্যেও একটি গ্রুপকে তারা তাদের মত করে ব্যবহার
করার চেষ্টা করছে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। যারা জুলাই-আগষ্টে প্রায় ১৫শ
শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে হত্যা করেছে
তারা এই হত্যাকাÐের পর এখন পর্যন্ত নুন্যতম অনুশোচনা করতে আমরা দেখিনি।
তাদের আবার বাংলাদেশে নতুন করে রাজনীতি করা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া
হবে না। যারা জুলাইযোদ্ধা, আহত ও শহীদ পরিবার রয়েছেন আমরা এ বিষয়ে সচেতন
আছি। পাশপাশি সরকারের প্রতি আমরা অনুরোধ করব, তারা তাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও
গোয়েন্দা নজরদারী আরও বেশি সচেতন ও তৎপর থাকবে যেন তারা কোন ধরণের
বিশৃঙ্খলা তৈরী করতে না পারে। আশা করি এ বিষয়গুলো নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন
করবে।
শিবির সভাপতি আরও বলেন, জুলাই আগষ্ট আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছে
তাদের বিচার প্রক্রিয়া আরও তরিৎগতিতে হওয়া দরকার ছিল, এখন পর্যন্ত যে গতিতে
অগ্রসর হচ্ছে সেটা খুব একটা দৃশ্যমান হয়নি, খুবই ধীরগতিতে হচ্ছে। আমরা
প্রত্যাশা করব, দ্রæত গতিতে বিচার কার্যক্রম শেষ হবে। অন্তবর্তীকালীন
সরকারের কাছে আমাদের তিনটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি ছিল যে তাঁরা তাদের
সময়ের মধ্যেই এই গণহত্যার বিচার কাজ শেষ করবে। এ বিষয়ে সরকার কার্যকর
পদক্ষেপ গ্রহন করবে বলে প্রত্যাশা করছি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে
বক্তব্য দেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী
অধ্যাপক শফিকুল আলম। কুমিল্লা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয়
কার্যকরী পরিষদ সদস্য হাসান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত
ছিলেন মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি নাজমুল হাসান পঞ্চায়েত, ভিক্টোরিয়া
কলেজ শিবির সভাপতি মনির হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।