কুমিল্লা-৪
দেবিদ্বার আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র প্রার্থী এবং দলটির দক্ষিণ
অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচনে আমি যদি ১০টা ভোটও
পাই-তবুওআমার এলাকা-দেবিদ্বার ছেড়ে যাব না। যদি হেরেও যাই তারপরও আমি
দেবিদ্বারের মানুষের সঙ্গে থাকব। এ দেবিদ্বার আমার অস্তিত্ব এখানকার
মাঠ-ঘাট, আলো-বাতাস আমার অক্সিজেন। আমি কাছে ভোট চাইতে আসেনি আমি এসেছি
সবার সঙ্গে পরিচিত হতে, দোয়া চাইতে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে
৭টার দিকে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ছোটনা গ্রামের
একটি পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে সুলতানপুর
ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় থেকে পদযাত্রা শুরু করেন তিনি। দিনব্যাপী এ
পদযাত্রায় সুলতানপুর ইউনিয়ন ও মোহনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের পথঘাট ও
বাড়ি বাড়ি ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পথসভায় এনসিপির এ
নেতা আরও বলেন, নেতৃত্বের ফয়সালা আসমান থেকেই আসে, জমিনে বসে কেউ তা
নির্ধারণ করতে পারে না। যারা নেতৃত্ব ঠিক করে দিতে চায়, তারা শত চেষ্টা
করেও জমিনের নেতৃত্ব নির্ধারণ করতে পারবে না, আমরা কেবলমাত্র উসিলা।
তিনি
বলেন, যুগ যুগ ধরে এই দেশের নেতৃত্ব গড়ে উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের হাত
ধরে। যারা শ্রমিক, যারা আমার বাবার মতো রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি ছিলেন
তাঁরাই নেতা বানিয়েছেন। অথচ সমাজের উচ্চশ্রেণীর কিছু মানুষ এসব পরিশ্রমী
মানুষকে মানুষই মনে করেন না, “কামলা” বলে অপমান করেন। আমি সেই অবহেলিত,
বঞ্চিত মানুষগুলোর সন্তান হিসেবেই আজ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আজ থেকে আমার
দায়িত্ব আপনাদেরকেই নিতে হবে। এখানে মায়েরা আছেন, আপনাদের দোয়ার শক্তিতেই
আমরা এগিয়ে চলেছি। জুলাই আন্দোলনের সময় এই মায়েরা জায়নামাজে দাঁড়িয়ে আমাদের
জন্য দোয়া করেছিলেন সেই মায়েদের আমার দায়িত্ব নিতে হবে। যারা মাঠে-ঘাটে
কাজ করে সংসার চালিয়েছেন, যারা ২০-৩০বছর প্রবাসে থেকে সংসার চালিয়েছেন,
আমার বাবার মতো রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি হিসেবে জীবন কাটিয়েছেন যাদের কোনো
বংশ পরিচয় নেই, যাদেরকে উঁচু শ্রেণীর মানুষরা মানুষই বলেই স্বীকৃতি দেয় না
আজ আমি সে অবহেলিত মানুষদের প্রতিনিধি হয়েই আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি।
আপনাদের যাকে পছন্দ তাকেই ভোট দিবেন কোন সমস্যা নেই, কিন্তু এ ভোট নিয়ে ঘরে
ঘরে কোন বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। ভোট একদিন হবে কিন্তু এ বিভেদ এক সময়
সহিসংসতায় রুপ নিবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, এখানে অনেক মা বোন
উপস্থিত আছেন। গতকাল এক মা আমার হাতে মুঠোয় কিছু টাকা দিয়ে বলেছেন, বাবা
নির্বাচনে তুমি খরচ করবা। এ মা-রাই আমার শক্তি-সাহস। অনেক ভাই বিদেশ থেকে
ফোন করছেন, বলছেন ভাই টাকা নিয়ে চিন্তা করবেন না, টাকা আমরা দেব আপনি
নির্বাচনে কাজ চালাই যান এ পরিশ্রমী ভাইদের উপহারটুকুই আমার শক্তি-সাহস।
মাগো আপনাদের দেওয়ার মত আমার কিছুই নেই, আমি আপনাদের কাছ থেকে নিতে এসেছি।
যেখানেই যাই এ মায়ের আমার মাথায় হাত বুলিয়ে যে দোয়া করছেন নির্বাচনে আমি
হারি বা জিতি তাতে কোন দুঃখ নেই।
তিনি আরও বলেন, এ দেশে নারীদের ঘরের
কোণে বন্দি রাখার প্রবণতা রয়েছে, যে ঘরের মা শিক্ষিত সে ঘর অন্য সব ঘরের
চেয়ে সুন্দর। আপনারা আপনাদের মেয়ে সন্তানদের পড়ালেখা করাবেন, অল্প বয়সে
বিয়ে দিবেন না। তাঁরা শিক্ষিত হলে দেশে শিক্ষার হার বাড়বে কারণ একজন মা-ই
পারে তাঁর সন্তানকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে। তিনি দেবিদ্বার প্রসঙ্গে বলেন, এ
দেবিদ্বারের সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা হচ্ছে মাদক সমস্যা। কয়েকদিন পর পর দেখি
এ নেতার কর্মীকে ধরে ওই নেতার কর্মীদের ধরে। এগুলো নেতাদের সেল্টারে হয়।
আমরা চাই এ যুব সমাজকে সাথে নিয়ে দেবিদ্বারে যে মাদকের বিস্তার রয়েছে তা
শক্ত হাতে প্রতিহত করতে। এটি আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। আপনাদের সাথে নিয়ে
তা প্রতিহত করা হবে।
