প্রতিবছরের
ন্যায় মহরমের ৭ তারিখ বাদ জোহর শাহপুর দরবার শরীফ থেকে কুমিল্লা শহরের
প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা দারগা বাড়ি শাহ আব্দুল্লাহ
কাদেরী গাজীপুরী মাজার শরীফ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে হাজার
হাজার আহলে বাইত প্রেমিকের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য মিছিল অত্যন্ত
শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়। শাহপুর দরবার শরীফের পীর সাহেব আলে রাসুল,
আওলাদে গাউছে পাক শেখ শাহজাদা সৈয়দ গোলাম মুহাম্মদ আব্দুল কাদের কাওকাব আল
কাদেরী পীর সাহেব কেবলা পবিত্র হজব্রত পালনে বর্তমানে মদিনা শরীফে রয়েছেন।
পীর সাহেব কেবলার এজাজত ক্রমে মিছিলের নেতৃত্ব প্রদান করেন শাহপুর দরবার
শরীফের সংগঠন জিকরুল্লাহ ইসলামিক কমিটি কুমিল্লা মহানগর এর সভাপতি ও
সেক্রেটারি যথাক্রমে আলহাজ্ব ডাক্তার মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন আল কাদেরী এবং
আলহাজ্ব মোঃ শরিফুল ইসলাম আল কাদেরী এবং শাহপুর দরবার শরীফের বিশিষ্ট
খাদেম আলহাজ্ব আতাউর রহমান (আতা হুজুর) , আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মিজানুর
রহমান আল-কাদেরী। মিছিলটির সমন্বয় করেন চকবাজার কাঁচা বাজারের সাবেক সভাপতি
মোঃ গোলাম জিলানী।
এ মিছিল কোনভাবেই তাজিয়া মিছিল নয় এবং তাজিয়া করা
সমর্থন করে না। “কারবালার শিক্ষা নামাজ, নামাজ“ ‘‘ইয়া হোসেন শাহ হোসেন লাখো
সালাম“ ইত্যাদি স্লোগানে আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। মূলত ইসলামের জন্য
শুহাদায়ে কারবালার অতুলনীয় ত্যাগ ও মহিমা এবং শুহাদায়ে কারবালার শিক্ষা ও
দর্শন বিষয়ে মুসলিম সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এ মিছিল পালন করা হয়।
শাহপুর দরবার শরীফ মুহররমের ১০ দিন রোজা পালন করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব
দেয়। অনেকে রোজা রেখে মিছিলে ১০কিমি পায়ে হেটে অংশ গ্রহণ করেন। মিছিলে
বিভিন্ন ধরনের নিশান প্লেকার্ড ব্যনার প্রদর্শন করা হয়। যেখানে শোহাদায়ে
কারবালা ও ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালামের মাহাত্ম্য ও স্লোগান লেখা ছিল।
আয়োজক কমিটি এমিছিলকে সারা বিশ্বে সুন্নি মুসলমানদের বৃহত্তম শুহাদায়ে
কারবালা মিছিল বলে দাবি করেন। মিছিলটি কালা পীরের মাজার, বকশিয়া দরবার শরীফ
, টিক্কারচর কবরস্থান অতিক্রম করার সময় সেখানে দাড়িয়ে যিয়ারত করেন।
বিভিন্ন দরবার, খানেকা, মসজিদের ইমাম, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের, বাংলাদেশ
ইসলামী ছাত্রসেনা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ
রাজনৈতিক, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, ইসলামিক চিন্তাবিদ, আলেম-ওলামা মিছিলে
অংশগ্রহণ করেন। কেউ কেউ দরদী কন্ঠে বাংলা উর্দু আরবি ভাষায় শুহাদায়ে
কারবালার মরমি গজল পরিবেশন করেন। বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট, অফিস আদালত থেকে
মানুষ সুন্দর এই মিছিলটি দেখার জন্য বেরিয়ে পড়েন। কোন কোন জায়গায় স্থানীয়
লোকজন গোলাপজল মিশ্রিত পানি মিছিলের উপর ছিটিয়ে দিয়ে ঠান্ডা পরশ দেন।
সার্বিক সহযোগিতার আয়োকজ কমিটি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। মিছিলটি
কুমিল্লা দারোগাবাড়ী শাহ আবদুল্লাহ কাদেরী এর মাজার শরীফে এসে আসরের নামাজ
পড়ে দরুদ-কিয়াম শরীফ ও শাহ আব্দুল্লাহ কাদেরী রাঃ এর জিয়ারত করে সমাপ্ত হয়।
১০ ই মুহররম আশুরার রাতে শাহপুর দরবার শরীফে ১০০০ সুরা ইখলাস এর মধ্যমে
১০০ রাকাত সালাতুল খায়ের নামাজ পড়া হয়। ১৭ মুহররম (১৩ জুলাই) কুমিল্লা
শিল্পকলা একাডেমিতে ড. আহমদ পেয়ারা বাগদাদী (রা) এর স্মরণে বাগদাদী
কানফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে।