কুমিল্লায় ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে চারউপজেলা থেকে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (৮ জুন) দুপুর থেকে সোমবার (৯জুন) দুপুর পর্যন্ত জেলার তিতাস, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং,মুরাদনগর এবং হোমনা উপজেলা থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে তিতাস উপজেলায় তিনজন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় তিনজন, বুড়িচং উপজেলায় একজন এবংমুরাদনগর উপজেলা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া ৮ জুন দুপুরে হোমনা উপজেলায় সিএনজি অটোরিকশার ধাক্কায় এক শিশুর মৃত্যু হয়।
সংশ্লিষ্ট থানা, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সূত্রে মরদেহগুলো উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সোমবার (৯ জুন) সকালে তিতাস উপজেলার তুলাকান্দি গ্রামে দুই বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মনু মিয়া নামে এক বাক প্রতিবন্ধী বাবা। তার খাওয়ানো কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশু কন্যা মারা যায়। তারা হচ্ছে-মনিরা (১০) এবং ফাতিহা (৬)। তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদ উল্লাহ এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাবা মনু মিয়া এবং মেয়ে মনিরা ও ফাতিহা তিনজনই প্রতিবন্ধী। এর মমেধ্য দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। 
একইদিন একই উপজেলার মাছিমপুরে ঋণের বোঝা সইতে না পেরে মুর্শিদ মিয়া নামে ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। মুশির্দ মিয়া তিতাস উপজেলার মাছিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার  মৃত তাজির মিয়ার ছেলে। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 
অপরদিকে সোমবার (৯ জুন) বিকালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গুনজর গ্রামে গোমতী নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, "গোমতী নদী থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।"
এদিকে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় রবিবার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত সময়ে নারী-শিশুসহ তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উপজেলার শিদলাই এলাকা থেকে অন্তরা আক্তার নামে প্রবাস ফেরত এক তরুণীর ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। অন্তরা আক্তার ভ্যানচালক কামাল হোসেনের মেয়ে। একই গ্রামে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে টুটুল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত টুটুল দুলালপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের সিংগারচরা এলাকার মোস্তফার ছেলে। পেশায় অটোচালক ছিলেন। 
আগের দিন রবিবার দুপুরে একই উপজেলার টাকই গ্রামে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ১৬ মাস বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। হোসাইন ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিন মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) টমাস বড়ুয়া। 
অপরদিকে, সোমবার দুপুরে বুড়িচংয়ের বাকশিমুল ইউনিয়নের বাকশিমুল পূর্বপাড়া এলাকা থেকে রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরের অনেক অংশই পচে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানার উপরিদর্শক মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান।  
এদিকে, ৮ জুন (রবিবার) দুপুরে কুমিল্লার হোমনায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মোঃ রিফাত (১০) নামের এক শিশুর মৃ'ত্যু হয়েছে। ওইদিন উপজেলার দুলালপুর-রামকৃষ্ণপুর সড়কের দৌলতপুর গ্রামে এ দুর্ঘ'টনা ঘটে। নি'হত শিশুটি দৌলতপুর গ্রামের মোঃ লিটন মিয়ার ছেলে। 
স্থানীয়সূত্রে জানাযায়,মো. রিফাত দুপুর ২ টার দিকে বাই সাইকেল চালিয়ে দুলালপুর বাজারের দিকে যাচ্ছিল। এমন সময় রামকৃষ্ণপুর থেকে বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলা একটি  সিএনজি অটোরিক্সা  তাকে পিছন থেকে ধাক্কা দিলে সে বাইসাইকেল থেকে ছিটকে  পড়ে  মগজ বের হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা শিশুটি কে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আ'শংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাড়ে ৩ টার দিকে সে মৃত্যুবরণ করে।