ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনাম কর আহরণ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে। এটা সম্ভব হয়েছে সেসব দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার উদ্যোগের দ্রুত বাস্তবায়নের কারণে। যেমন- ভারত ১৯৬১ সালে, মালয়েশিয়া ১৯৬৭ সালে ঔপনিবেশিক আমলের আয়কর আইনকে যুগোপযোগী করে নেয়। ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া কয়েক বছর পরপর তাদের আয়কর আইনকে রীতিমতো ঢেলে সাজায়। একই সমতলে অবস্থানরত কমনওয়েলথ সদস্য দেশ বাংলাদেশে আয়কর আইনের আধুনিকতম সংসকরণ ১৯৮৪ সালে, তাও অর্ডিন্যান্স আকারে। তা যুগোপযোগী করতে আইন আকারে পাস ও প্রবর্তনের কসরত চলছে গত দেড় যুগ ধরে। বাংলাদেশ ও ভারতের কর ব্যবস্থা, সুবিধা, ফরম্যাট মূলত একই।
একটা বড় প্রশাসনিক পার্থক্য হলো যে, বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ড পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ কর, এক মন্ত্রণালয় এবং একজন প্রশাসনিক চেয়ারম্যানের অধীনে। ভারতে তা নয়, সেখানে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ করের প্রশাসন আলাদা। ভারতে প্রত্যক্ষ কর (আয়কর) অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরোক্ষ কর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকেও ভারতের কর বিভাগ বাস্তবায়নকারী হিসেবে স্বশাসিত। কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পলিসি প্রেসক্রিপশন ও থ্রেসহোল্ড দেওয়ার ব্যাপারে তাদের নিয়ন্ত্রণ ও একটা শক্তিশালী অবস্থান যেমন আছে তেমনি রাজ্য পর্যায়ে আছে স্থানীয় কর আইন ও ব্যবস্থাপনার সমান্তরাল প্রণয়ন ও প্রয়োগের সুযোগ। আরেকটি হলো হিসাব সংরক্ষণ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের একটা দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। বাংলাদেশেরও আছে, কিন্তু হিসাব পদ্ধতি, কোম্পানির আইন সবমিলিয়ে দেশগুলোতে একটা টেকসই সংস্কৃতি গড়ে উঠলেও সে সড়কে বাংলাদেশের ওঠার প্রয়াস প্রলম্বিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এক হাতে হয়। তাই এখানে ডিসক্রিয়েশনারি পাওয়ার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিগত বিষয়গুলো অনেক জটিল, স্বেচ্ছা ব্যাখ্যা আচারি ও নিবর্তনমূলক হয়ে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে আইনের ব্যাখ্যা ধোঁয়াশে হয়ে যায়। ভারতে, ভিয়েতনামে, মালয়েশিয়ায় ওই সমস্যা তেমন একটা নেই। তারা অনেকটা স্বচ্ছ, সংহত একটা আধুনিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়েছে। ভারতে পরোক্ষ কর ব্যবস্থাপনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। কারণ দেশটির দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আমদানি-রপ্তানির নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানই হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর সঙ্গে যেহেতু শুল্কের ও মূল্য সংযোজন করের বিষয় জড়িত। সেহেতু সে মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাখা হয়েছে শুল্ক ও ভ্যাট দপ্তরকে। ভ্যাট আইন প্রণয়ন ও প্রবর্তনে বাংলাাদেশ যথেষ্ট ধীর এবং এখনো দোটানায়। ভ্যাট মধ্যস্বত্ব ভোগকারীদের দখল থেকে সরকারি তহবিলে আনার আইনকানুন, কলাকৌশল যেন সহজে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। বাংলাদেশে আরেকটি সীমাবদ্ধতা হলো যে, মূল্য নির্ধারণ কিংবা ট্যারিফ ঠিক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্যারিফ কমিশন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন এনবিআর শুল্ক কর হার নির্ধারণ ও আরোপের সময় সেটিকে তেমন একটা আমলে নেয় না।
একইভাবে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক পরিশোধসংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা বা প্রজ্ঞাপন জারি করতে গেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি আনতে হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের মধ্যে মতামতের রশি টানাটানিতে শুল্ক আহরণ মাঠে মারা যায়। এ ঝামেলা ভারতে নেই, নেই মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায়, ভিয়েতনামের পরিস্থিতি আরও স্বচ্ছ ও সাবলিল। ভারতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ই আমদানি-রপ্তানি বিধির আলোকে শুল্ককরাদি আরোপ করে। ভারত, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়ায় শুল্কায়ন সিদ্ধান্তদানকারী টায়ার বা লেয়ার অনেক কম। অধিকাংশ দেশে ট্যারিফ কমিশন শুল্ক আরোপ থেকে শুরু করে সবকিছু দেখে। বাংলাদেশের ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে এনবিআরের সুযোগাযোগ নেই। গণশুনানি করে ট্যারিফ কমিশন। কিন্তু শুল্ক আরোপ করে এনবিআর। এ জটিলতা নিরসনে সংস্কারের কথা বলা হলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি নেই। কর ব্যবস্থাপনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে আছে ভিয়েতনাম। দেশটির করব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের মৌল পার্থক্য হলো ব্যক্তি এবং কর্পোরেট কর সম্পূর্ণ ব্যক্তি বা কোম্পানির ওপরই অর্পিত। কর পরিশোধ তাদের দায়-দায়িত্বে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তি যা ঘোষণা দেবে, তার ভিত্তিতেই কর আরোপ হবে। কালেভদ্রে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা দ্রুত নিরীক্ষা ও নিরসন করা হয়। নিরসনের স্বাধীনতা সেখানে দেওয়া আছে। ব্যক্তিকরের ক্ষেত্রে ইউনিভার্সাল সেলফ অ্যাসেসমেন্ট বাংলাাদেশে প্রবর্তনের সময় মনে করা হয়েছিল, ব্যক্তি করদাতাদের যদি কর অফিসে এসে রিটার্ন পূরণ করতে হয় তাতে অনেক সময় লাগে এবং জনে জনে এভাবে পরীক্ষা করে নেওয়াও সম্ভব নয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ইউনিভার্সল সেলফ ডিক্লারেশন সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না- এ অনুযোগ-অভিযোগ সন্দেহে অডিটের নামে করদাতাদের বারবার ডাকা হচ্ছে। এতেই কর প্রদানে আগ্রহ ও দায়িত্বশীলতায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছে। ব্যক্তিকে যে ঘোষণা করার অধিকার দেওয়া হলো, শেষপর্যন্ত পারস্পরিক সংশয়-সন্দেহ-হয়রানির অভিযোগের ভাগাড়ে পড়ে অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। নোটিস পেয়ে অফিসে গিয়ে ধন-সম্পদের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে করদাতারা অনেক ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে প্রায়শই অভিযোগ উঠছে। আবার করদাতারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন না বলে রাষ্ট্র ও রেভিনিউয়ের স্বার্থে তাদের ডাকতে হচ্ছে। সীমিত লোকবলসম্পন্ন কর বিভাগের মনোযোগ ও সময় বিদ্যমান করদাতাদের পেছনে ব্যয়িত হচ্ছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য এখানে। সেখানে আয়করের ক্ষেত্রে বলে দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব ব্যক্তির, কোম্পানির। কর যা দেওয়া হবে, কর অফিস তাই নেবে। এভাবেই চলছে। কোনো কোনো সময় অভিযোগ পেলে সেটি খতিয়ে দেখা হয়। বাংলাদেশের মতো গরপরতা অডিট করা হয় না সেখানে। সেখানে কর আইন বেশ সু-সংজ্ঞায়িত এবং বিস্তৃত। সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা আছে সবকিছু। ফলে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগগুলো তেমন নেই। প্রতি বছর সংস্কার ও সহজীকরণের দিকেই তাদের মনোযোগ বেশি।
বাংলাদেশে সহজীকরণের প্রয়াস চলছে তো চলছেই, পদ্ধতি সাপোর্ট করছে না। ঘুরে-ফিরে দেখা যায় একটা আন্ত-অবিশ্বাস বিরাজ করছে। পরস্পরকে এড়িয়ে যাওয়ার এবং ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টাও চলছে। এ ধরনের ঘটনা ভিয়েতনামে খুব কম। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্যও সহজ ও পদ্ধতিমাফিক করায়ন ও আহরণের এবং বিভিন্ন কর রেয়াতের ব্যবস্থাও আছে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য হলো এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক কর সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা থাকলেও রাজস্ব বিভাগের কাছে গিয়ে বাস্তবে তা আরেক রকম মনে হয়। একটার সঙ্গে আরেকটার সঙ্গতি নেই। ভিয়েতনামে এ ধরনের জটিলতা ও অসঙ্গতি খুব একটা নেই। রাজস্ব বিভাগ যা বলছে, সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানও তাই বলছে। ভিয়েতনামে বিদেশি বিনিয়োগ বেশি আসার পেছনে এই নীতিগত সংহতি একটা বড় ভূমিকা রাখছে।
কর ফাঁকি দেওয়া মানে নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছি- সবার মধ্যে এ বোধটা তৈরি করা জরুরি। এ সামাজিক উপলব্ধিতে সবাইকে আসতে হবে। আসার জন্য এনাবলিং এনভারনমেন্ট তৈরি করতে হবে। বছর দুই আগ থেকে কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্যবাধতা জুড়ে দেওয়ায় চাকরিজীবীরা সবাই কিন্তু করের আওতায় এসেছে। তেমনি ট্রেড বডি সমিতি, বাড়ির মালিক সমিতির ওপর সদস্যদের কর দেওয়ার দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে। একজন কর পরিদর্শক সুনির্দিষ্ট এলাকার নির্দিষ্টসংখ্যক বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য তলব করতে পারে। পুলিশ বিভাগ, বাড়িওয়ালা থেকে ভাড়াটে সবার তথ্য, কার বাড়িতে কারা থাকে, কয়জন থাকে, সবার তথ্য নিচ্ছে। এগুলো এখন স্থানীয় থানা নিচ্ছে। কর প্রশাসনও সহজেই এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে। এভাবে তথ্য সংগ্রহ করেই এনফোর্স করতে হবে। এনফোর্স করার দুর্বলতাতেই কিন্তু মানুষ ফাঁকি দেওয়ার ফুরসত পায়।
আরেকটা বিষয় হলো, করের হার যৌক্তিক হওয়া উচিত। করের ভার যাতে সহনীয় থাকে, সেজন্য কর হার কমাতে হবে। যাতে মানুষ কর দিতে উৎসাহিত হয়। করের হার সুষম করে করের আওতা বাড়ানো যায়। এখন কড়াকড়ি করা হয়, তাদের ওপর যারা কর দিচ্ছে। যারা দিচ্ছে না তাদের ওপর নজরদারি নেই। কারও কারও কর দেওয়াটা অনেকটা পিকিউনারি পানিশমেন্টের মতো হওয়া ঠিক নয়। আরেকটা বিষয় আছে সেটি হলো আনুষ্ঠানিক রাজস্ব পরিশোধের বাইরে অনানুষ্ঠানিক লেনদেন বেশি হওয়ার পরিবেশে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস এবং করভার বেশি হয়। এর বিপরীতে সেই অনুপাতে সেবা পায় না মানুষ। আমরা শুধু ইনফর্মাল ট্রেড শব্দটি শুনেছি, অর্থনীতিতে ইনফর্মাল রেভিনিউ নামে একটা শব্দ বেশ মোটাতাজা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ায় বাড়তি খাইখরচের রিসিট দেওয়া হয়। স্পিড মানি বা অন্য কোনো নাম দিয়ে বলা হয়, শুল্ক যে দিয়েছেন তা ঠিক আছে, কাজটা আরেকটু গতিশীল করার জন্য কিছু অর্থ দিতে হবে। তার জন্য বিশেষ রঙের একটা স্লিপ আলাদাভাবে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সেখানে হিসাব থাকছে সবকিছুর। এ দেশে প্রায় ক্ষেত্রেই নির্ধারিত হারের বাইরে আলাদাভাবে বাড়তি অর্থ লেন দেন হয় তার কোনো হিসাবায়ন নেই। এ ধরনের অস্বচ্ছতা দূর করতে রাজস্ব প্রশাসনে অটোমেশন নিশ্চিত হওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে কিছুটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেটিকে বেগবান করা এখন সময়ের দাবি। করদাতা যখন আগের অর্থবছরের রিটার্ন জমা দিচ্ছেন তখন নতুন হারে তা দিতে হচ্ছে। এরকম বাড়তি হারের বিষয়টি তিনি আগে অবহিত ছিলেন না। বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকালে এ ব্যাপারে তার প্রস্তুতি ছিল না। এটি কর প্রয়োগ, প্রক্রিয়া ও হিসাবায়ণের ক্ষেত্রে জটিলতার অন্যতম একটি কারণ। করদাতাকে একসঙ্গে প্রশিক্ষিত, উৎসাহিত ও বারবার অবহিত করা যায় না। আয়কর পরিপত্র-১ জারিতে বিলম্ব করেও তাতে কিছু কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা নিরসনে ব্যাখ্যার অবকাশ থেকে যায়। দক্ষ লোকবল নিয়ে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও নীতি বিভাগ পরিচালিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ২০০৮ সালের দিকে রাজস্ব বোর্ডের লোকবল ও অবকাঠামোগত সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তাব রাখা হয়। লোকবল ও কাঠামো প্রায় ২-৩ গুণ বৃদ্ধি করার যে প্রস্তাব তখন রাখা হয়েছিল তার বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০১৩ সালের দিকে। সেখানে দক্ষ ও উপযুক্ত লোকবল নিয়োগ দিতে একটু সময় লেগে যাচ্ছে, যারা সেখানে নিয়োগ পাবেন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না পেয়ে তারা এই কাজ কতটুকু করতে পারবেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। বিশেষ করে রাজস্ব বিভাগে যারা কাজ করবেন তাদের মেধা ও দক্ষতা আর দশটা দপ্তর বা বিভাগের চাইতে বিশ্লেষণ ক্ষমতায়, পারঙ্গমতায় অবশ্যই বেশি হওয়া আবশ্যক। ’৮০-এর দশকে বিশেষ বিবেচনায় একটি বিশেষ পর্যায়ের কিছু কর্মচারী এ বিভাগে আত্মীকৃত হন। দুই দশক তাদের সঠিকতা নির্ণয় ও আত্মীকরণ যৌক্তিকতা প্রমাণ উপলক্ষে রজ্জুকৃত প্রায় ৮ ডজন মামলার ফেরে পড়ে রাজস্ব বিভাগে প্রারম্ভিক পর্যায়ে কর্মকুশল কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগ বন্ধ ছিল। ফলে উপযুক্ত ও দক্ষ লোকবলের অভাবে ন্যায্য রাজস্ব আহরণ শেষঅবধি কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত করতে ধকল সইতে হচ্ছে।
রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে ও পদ্ধতি প্রক্রিয়ায় আইনসংগত স্বচ্ছতার আলোকে গতিশীলকরণের স্বার্থে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আইন ও প্রক্রিয়ার যৌক্তিকতা যথা বিশ্লেষণ হওয়া উচিত। বিশেষ করে কর আহরণ প্রক্রিয়ার যেসব আইনি জটিলতা সেটা ঠিকমতো সংস্কারের মাধ্যমে স্পষ্ট করা না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে। অন্তত এ অবস্থায় রেখে ব্যাপক কর আদায়ের যে কথা চিন্তা করা হয়ে থাকে তা অর্জন স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে আইনের আর্থ-প্রশাসনিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে যদি আরও কিছু অসম্পূর্ণতা ও ফাঁকফোকর থেকে থাকে তা সংশোধন করা না গেলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর কর্তৃপক্ষের নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
লেখক: সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান