প্রকাশ: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ১:৫৪ এএম আপডেট: ২৮.০৫.২০২৫ ১১:২২ এএম |

মা
ও ভাবীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কুমিল্লায় সাইদুর রহমান সিকি (৩৭)
নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২৭ মে (মঙ্গলবার) দুপুরে
কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ
ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ সাইদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সাইদুর কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার পুজকরা পূর্ব পাড়ার আবদুল
হাইয়ের পুত্র।
২০২১ সালে সংঘটিত হওয়া চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের চার
বছরের দীর্ঘ শুনানির পর ১১ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং একমাত্র আসামি
সাইদুর রহমান সিকির জবানবন্দী থেকে জোড়া খুনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত
এই কঠোর শাস্তির আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো:
ইউসুফ আলী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার
নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের পুঁজকরা গ্রামের পূর্ব পাড়ায়
পারিবারিক কলহের জের ধরে ছায়েদুল হক সিকি তার মা নুরজাহান বেগম (৭০) এবং
ভাবিকে নুরননাহার বেগম পুষ্পাকে (৪৫) এলো পাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায়
আহত হন তার ভাতিজি আরজু আক্তার (২৮)।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে,
দণ্ডপ্রাপ্ত সাইদুরের বোনের বাড়ি থেকে নাস্তা এনে খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে
তার মায়ের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে সে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে ছায়েদুল হক সিকি বটি
দিয়ে প্রথমে তার মাকে ও পরে তার ভাবিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাদের
বাঁচাতে আরজু আক্তার এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করা হয়। এসময়স্থানীয়রা তাদের
উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত
চিকিৎসক নুরজাহান ও পুষ্পাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সাইদুরের বড় ভাই
আজিজুল হক বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার
চারবছর পর মঙ্গলবার আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলা বাদী আজিজুল
বলেন, আজকের এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমার মা ও
স্ত্রীর হত্যার ঘটনায় ন্যায় বিচার পেয়ে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায়
করছি। তিনি বিজ্ঞ আদালতের ফাঁসির আদেশের রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী
ও কুমিল্লার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক সাধারণ
সম্পাদক মো: ইউসুফ আলী জানান, এই রায় নৃশংসতার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী
বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে। যা সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধীদের
শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ন্যায়বিচারের
ক্ষেত্রে এটা একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে।