কুমিল্লার
জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার বলেছেন, দৌলতপুর এবং কুমিল্লায় কবি কাজী
নজরুল নিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টার সাথে কথা হয়েছে। কবি নজরুলের বিষয়ে বিশদ
আলোচনা করেছি। নজরুলকে নিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় যে কার্যক্রম হাতে
নিয়েছে তা জানতে পেরেছি। প্রথমত নজরুলকে আমরা আমাদের নিজেদের দেশের গন্ডির
মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। আমরা নজরুলের সৃষ্টিকে বিশে^র দরবারে ছড়িয়ে
দিতে চাই। সেই লক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় কবির সৃষ্টি রচনাগুলোকে
ইংরেজিতে অনুবাদ করার কাজ শুরু করেছে। যাতে করে বিশে^র বিভিন্ন ভাষার মানুষ
কবির সৃষ্টিকে জানতে পারে, বুঝতে পারে।
তিনি সোমবার বিকেলেকুমিল্লার
মুরাদনগর উপজেলার কবিতীর্থ দৌলতপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬ তম
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবি নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির
বক্তব্যে এসব কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহমানের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান।
অনুষ্ঠানে
আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক ড. ইয়াহিয়া
মান্নান, নজরুল গবেষক প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক, নজরুল গবেষক ড. আলী হোসেন
চৌধুরী, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন, নজরুল পত্নী
নার্গিসের ভ্রাতুষ্পুত্র বাবলু আলী খান ও নজরুল নিকেতনের সভাপতি সাইফুর
রহমান বকুল। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির
শিল্পীবৃন্দ মনমুগ্ধকর সঙ্গীত, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করে।
প্রধান
অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার আরো বলেন, শ্রোতা দেখে মনে
হয়, দৌলতপুর বাসীর আগ্রহ কিছুটা কমতি এবং কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আমি একটু
আজকের এই জাতীয় অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। এই
প্রথম দৌলতপুরে কবির জন্মজয়ন্তি জাতীয় ভাবে উদযাপিত হচ্ছে। সংস্কৃতি বিষয়ক
মন্ত্রনালয়ে এই দিবসটিসহ আমাদের আরেকজন বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
জন্মবার্ষিকী নিয়েও একই সাথে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেই সভায়
জন্ম দিনের যে অনুষ্ঠান তার প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এ আলোচনায়
রবীন্দ্রনাথের জন্ম বার্ষিকীর যে প্রতিপাদ্য বিষয় হবে, সেটি নিয়ে অনেকে
অনেক ধরণের মন্তব্য করেছিলেন। যখন কবি কাজী নজরুলের বিষয়টি আসলো তখন
প্রাসঙ্গিক ভাবেই যেহেতু তিনি আমাদের বিদ্র্ােহী কবি এবং অতিসম্প্রতি আমরা
আমাদের দেশে একটি গণঅভ্যূত্থান হয়েছে এবং সেই গণঅভ্যূত্থানের প্রেরণা
উৎসবগুলো আমাদের এই কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুবদ্ধ সৃষ্টি।
সভাবতই এই
প্রতিপাদ্যটি নির্ধারণে কোন রকমের মতানৈক্য হয়নি। সবাই একবাক্যে মেনে
নিয়েছে এটার প্রতিপাদ্য হবে গণঅভ্যূত্থান এবং কবি নজরুল। অনেকেই আলোচনা
করেছেন কবি নজরুলের অনবত সৃষ্টি দিয়ে। আমি চাকরির কারণে বিভিন্ন দেশে
যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। ওখানে গিয়ে দেখলাম তারা তাদের জন্মস্থানগুলোকে একটি
টুরিস্ট প্রেসে রুপান্তরিত করেছে এবং সারা বিশ^ থেকে মানুষ স্মরণ করে এবং
অনেকে দেখতে যায়। কিন্তু দুঃখজনক আমরা আমাদের দেশের এই ধরণের স্থান গুলো
এখনো পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারিনি। তাই বলে আমরা শুধু হতাশ হয়ে যাব তা নয়।