বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫
১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
থিওসফিক্যাল সোসাইিটও সমসাময়িক প্রেক্ষাপট
এডভোকেট গোলাম ফারুক
প্রকাশ: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ১:২৬ এএম |

 

  থিওসফিক্যাল সোসাইিটও সমসাময়িক প্রেক্ষাপট “থিওসফি” শব্দটি দুইটি গ্রীক শব্দের সমন্বয়ে গঠিত ঞযবড়’ং অর্থ ব্রহ্ম এবংঝড়ঢ়যরধ অর্থ বিদ্যা। সংস্কৃত ভাষায় ইহার নাম ব্রহ্মবিদ্যা, তত্ত্ববিদ্যা, পরাবিদ্যা, রহস্যবিদ্যা ইত্যাদি। এই বিদ্যা সনাতন বিদ্যা তাই অনাদি ও অনন্ত। যে সত্যগুলি সকল ধর্মমতের ভিত্তিস্বরুপ এবং যেগুলি কোন বিশেষ সত্যাবলম্বীর একমাত্র অধিকার বলে দাবী করতে পারে না, সেই সত্যগুলির উপর থিওসফি প্রতিষ্ঠিত। থিওসফি একটি দর্শন যা জীবনকে সহজবোধ্য করে ন্যায় ও প্রেমের পথ প্রদর্শন করে জীবনকে ক্রমবিকাশের পথে এগিয়ে নিয়ে চলে। থিওসফি মৃত্যু সম্বন্ধে ধারণা সৃষ্টি করে এবং বুঝিয়ে দেয় মৃত্যু পূর্ণতর ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ জীবনের দ্বার উম্মুক্ত করে। আত্মার বিজ্ঞানভিত্তিক ধারণা সৃষ্টি করে এবং মানুষকে বুঝিয়ে দেয় যে আত্মাই তার প্রকৃত স্বরুপ এবং দেহ ও মন তার আজ্ঞাবহ। ধর্মমত ও শাস্ত্রগ্রন্থের প্রচ্ছন্ন অর্থগুলি সম্বন্ধে সঠিক আলোকপাত করে এবং বুদ্ধির নিরিখে তাকে এমনভাবে প্রমাণিত করে যে স্বভাবিক চিন্তায় সেগুলি যেন স্বতঃপ্রমাণিত মনে হয়।
থিওসফিক্যাল সোসাইটির সদস্যরা এই সত্যগুলির অনুশীলন করেন এবং থিওসফিষ্টরা সেগুলি জীবনে প্রতিফলিত করতে সচেষ্ট হন। যারা সত্যানুশীলনে আগ্রহী, সহিষ্ণু হতে যত্নবান, উচ্চ আদর্শের দিকে দৃষ্টিসম্পন্ন, অধ্যবসায় কর্মী তাঁদের প্রত্যেককেই সাদর আহবান জানানো হয় সদস্যপদ গ্রহনের জন্য এবং একজন  প্রকৃত থিওসফিষ্ট হওয়া, সদস্যদের নিজেদের উপর নির্ভর করে।
মানুষের চিত্তে যখন ধর্মের ব্যাকুলতা প্রবল হল তখন মানুষ যে অনন্ত নেতি- সেই নেতিকে নিয়ে পরিতৃপ্ত হতে পারেন নি। সেটা অশ্চর্যের বিষয় নয়, কিন্তু মানুষ যে সেই ব্যাকুলতার বেগে সমাজের ও পরিবারের চিরসংস্কারগত অভ্যস্থ পথে, তার ব্যথিত হৃদয়কে সমর্পণ করে দিয়ে কোনমতে তার কান্নাকে থামিয়ে রাখতে চেষ্টা করে নি ........ এইটেই বিস্ময়ের বিষয়। মানুষ কাকে চায় তা ভালো করে জানবার পূর্বেই তাকে পেয়ে বসে, জ্ঞান যাকে চিরকালই পেতে থাকে। 
এইজন্য জীবনের মধ্যে কোন কোনো মানুষ সেই শক্তিমান সত্যকে গ্রহন করলেন। পরিমিত পদার্থের মত করে যাকে পাওয়া যায় না এবং শূণ্য পদার্থের মত যাকে পাওয়া যায় না- যাকে পেতে একদিকে জ্ঞানকে খর্ব করতে হয় না, অন্যদিকে প্রেমকে উপবাসী করে মরতে হয় না। যিনি বস্তু বিশেষের দ্বারা নির্দিষ্ট নন অথবা বস্তুশূণ্যতার দ্বারা অনির্দিষ্ট নন- যার সম্বন্ধে কেবল ধারনা করা যায় কিন্তু জোর দিয়ে কিছু বলা যায় না। অর্থাৎ “যে তাকে বলে আমি জানি সেও তাকে জানেনা, যে বলে আমি জানিনে সেও তাকে জানেনা”- এক কথায় যার সাধনা হচ্ছে পরিপূর্ণ সামঞ্জস্যের সাধনা।
যারা থিওসফি নিয়ে চর্চার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন তাদের গাম্ভীর্য ভক্তিরসের দীনতাজনিত নয়। তাদের প্রজ্ঞা প্রাচীন ভারতের তপোবনের ঋষির মতো, পারস্যের সৌন্দর্যকুঞ্জের বুলবুল হাফেজের মতো। তাদের জীবনের আনন্দ গুলি ছিল প্রভাতের আলো এবং হাফিজের কবিতা গুলি ছিল প্রভাতের গান। হাফিজের কবিতার মধ্যে যারা আপনার রসের সারা পেতেন তারা যে তাদের জীবনেশ^রকে নিবিড় রসবেদনাপূর্ণ মাধুর্যঘন প্রেমের সঙ্গে অন্তরে বাহিরে দেখেছিলেন।
এই সকল কারনেই থিওসফিক্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠা ত্বরাম্বিত হলো। গ্রকি আলেকজান্দ্রিয়ার নিও- প্লেটোনিক দর্শন তৃতীয় খিস্টাব্দে আবার চর্চা হতে শুরু করে। বৃহত্তর ধর্মীয় দর্শন, কাবালা সুফিবাদ যেন পূর্ব পশ্চিমে সেতুবন্ধন করে। থিওস্ দেবতা বা ডিভাইন বা ঐশ^রিক আর সোফিয়া বা জ্ঞান।
সভ্যতার সূচনার পর থেকেই ধীরে ধীরে শুরু হলো বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থা। ধনী- দরিদ্র, রাজা- প্রজা, প্রভু- দাস, উঁচু- নীচু, প্রবল- দুর্বল এই ভেদভাব থেকেই মানুষের মনের বদ্ধ দশা শুরু হয়েছিল। হাজার হাজার বছর ধরে চলতে থাকা এই ব্যবস্থা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আরো কঠিন কঠোর ও দৃঢ়বদ্ধ করে তুলল। সাম্রজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার মত সাহস ও শক্তি আর রইল না। সংখ্যার দিক থেকে কম হলেও প্রগতিশীল চিন্তাবিদগণ মানুষের মুক্তির পথের অনুসন্ধান করছিলেন। প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই মানুষের মনের মুক্তির পথ প্রশস্ত করার দিক এগিয়ে এলেন হেলেন ব্লাভটস্কি ও আলকোট নামে দুইজন মানুষ। তাঁরা ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ১৭ই নভেম্বর, আমেরিকার নিউইয়র্ক এ প্রতিষ্ঠা করেন থিওসফিক্যাল সোসাইটি। এই সোসাইটির মূল উদ্দেশ্য ছিল জগতের সকল সত্যের অনুসন্ধান করা। সৌভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করা, মানুষে মানুষে সু- সম্পর্ক স্থাপন করা।
থিওসফিক্যাল সোসাইটির উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ড ও লক্ষ হলো (১) বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, জাতি ও সম্প্রদায়ের পার্থক্য না করে মানবতার সর্বজনীন ভ্রাতৃত্বের অটুট ও অবিচ্ছেদ্য বন্দনে আবদ্ধ করা। (২) তুলনামূলক ধর্ম, দর্শন এবং বিজ্ঞানের অধ্যায়নকে উৎসাহিত  করা। (৩) প্রকৃতির অব্যক্ত আইন এবং মানুষের মধ্যে সুপ্ত ক্ষমতা অনুসন্ধান করা।
সামন্ততান্ত্রিক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মানুষের মনকে দুর্বল ও পঙ্গু করে অসহায়, অক্ষম, অজ্ঞ, অন্ধ বানিয়ে রেখেছিল। সেই অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য প্রকাশ্যে সাম্রাজ্যবাদী মুক্তির সংগে সংঘর্ষের পথে না গিয়ে ভেতরে ভেতরে মানুষের মনকে আধ্যাত্মিক শক্তির উপর জোর দিয়ে আত্মশক্তি সম্পন্ন ও আত্মনির্ভর করে তোলেন। এর ফলে মানুষের চিন্তা চেতনা ও বিচার বুদ্ধির সাথে সাথে কথা বলার শক্তি ও সাহস বেড়ে গেল। এর সাথে যুক্ত হলো বিশ^ভ্রাতৃত্ব বোধ। এই সময়ে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের দাপট প্রায় বিশ^ব্যাপী। থিওসফিক্যাল সোসাইটির জন্ম আমেরিকাতে হলেও তা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ল উনবিংশ শতাব্দীর অখন্ড ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের মাদ্রাজে প্রতিষ্ঠা করেন আডিয়ার থিওসফিক্যাল সোসাইটি লজ। এর পর ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার সেন্ট্রাল এবং ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে গড়ে ওঠে থিওসফিক্যাল সোসাইটির লজ। তারপর দেখা যায় সেই ঐতিহাসিক মূহুর্ত। ১৮৮৯ খিস্টাব্দের ২৬মে তারিখের এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। এই দিনেই অখন্ড ভারত উপমহাদেশের তথা আফগানিস্তান থেকে মায়ানমার পর্যন্ত আলোড়ন ঘটিয়ে জন্ম নিল ধর্ম তত্ব জাহান চর্চা এক মহতী প্রতিষ্ঠান। আর সেই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছিল এই কুমিল্লাতেই। তখন ত্রিপুরা জেলার অন্তর্গত ছিল এই কুমিল্লা। তত্ত্বজ্ঞানে সমিতি বা কুমিল্লার থিওসফিক্যাল সোসাইটির লজ নামকরণের মধ্যেই রয়েছে ধর্ম নিরেপেক্ষতার নিদর্শন। ত্রিপুরার রাজা জ্ঞান ও গুনিদের সমাদর করতেন। তাছাড়া ত্রিপুরার কুমিল্লা নগরী যেন হাজার হাজার বছর ধরে  রাজা- প্রজা একসাথে জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য ক্রমাগত মানব কল্যাণের ব্রত পালন করে চলছে। সাব জজ নবীন চন্দ্র গাঙ্গুলী ও কালেক্টরীর সেরেস্তাদার চন্দ্রকুমার গুহর তত্ত্বাবদানে কুমিল্লা থিওসফিক্যাল সোসাইটির কাজ চলছিল। পরে ১৮৮১ খিস্টাব্দে ত্রিপুরার রাজপুত্র শ্রী শ্রী নব দ্বীপ চন্দ্র দেববর্মা বাহাদুর ঐ থিওসফিক্যাল সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করেন। কুমিল্লার থিওসফিক্যাল সোসাইটির সূচনা থেকেই বিদগ্ধ পন্ডিতেরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন ধর্ম, দর্শন ও তত্ত্বজ্ঞান বিষয়ে সপ্তাহে সপ্তাহে আলোচনার আসর বসত এবং সেই আলোচনায় মানুষের মনের বিকাশ সাধনের সাথে সাথে দেশ ও জাতিকে জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টা চলতো। কুমিল্লার মত জ্ঞান চর্চার পুরাতন পীঠস্থান, একদা যেস্থান যোগশাস্ত্র, বৌদ্ধশাস্ত্র এবং আধুনিক জ্ঞান- বিজ্ঞান চর্চার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।
থিওসফিক্যাল সোসাইটির পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে দেশ ও জাতির মধ্যে চেতনা, বিবেক, সংহতি, নৈতিকবোধ, দেশাত্ববোধ, মানবপ্রেম, ধর্ম নিরেপক্ষতার জাগরণ ঘটাতে ক্ষম হচ্ছেন। সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো মানুষকে যথার্থ আলোর পথে নিয়ে যাওয়া। সারা পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্ম একটা কঠিন সত্য হয়ে বারবার সকলের সামনে প্রকট হয়ে  উঠেছে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, একদা মানব সভ্যতার ধর্ম আচরণে, কর্মকান্ড যখন প্রবল হয়ে উঠেছিল, তখন তার নিরর্থক কর্মই মানুষকে চরম রূপে অধিকার করেছিল। কেবল নানা জটিল নিয়মে, বেদি সাজিয়ে, কেবল মন্ত্র পড়ে, কেবল আহুতি ও বলি দিয়ে মানুষ সিদ্ধলাভ করতে পারে এই ধারনাই একান্ত হয়ে উঠেছিল। তখন মন্ত্র এবং অনুষ্ঠানই দেবতা এবং মানুষের হৃদয়ের চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মিশর, মায়ান, গ্রীক, রোমান, তাসমানিয়ান, পার্সিক, চৈনিক ও বৈদিক সভ্যতার ইতিহাসে এই রীতিই মানুষের মনে দৃড়বদ্ধ ছিল। মানুষের মনের এই বদ্ধ দশাটাকেই মুক্তি বলে মেনে এসেছে।
একদিন নিরর্থক কর্মই চূড়ান্ত ছিল, জ্ঞান ও হৃদয় বৃত্তিকে সে লক্ষ্য করেনি, তারপরে যখন জ্ঞান বড় হয়ে উঠল, তখন সে আপনার অধিকার থেকে হৃদয় ও কর্ম উভয়কে নির্বাসিত করে দিয়ে নিরতিশয় বিশুদ্ধ হয়ে থাকবার চেষ্টা করে।
তারপর ভক্তি যখন মাথা তুলে দাঁড়াল, তখন সে জ্ঞান কে পায়ের তলায় চেপে ও কর্মকে রসের স্রোতে ভাসিয়ে দিয়ে একমাত্র নিজেই পরম স্থানটি সম্পূর্ণ জুড়ে বসল। ভাবের আবেগকে মথিত করে তোলবার জন্য বাহিরে কৃত্রিম উত্তেজনার বাহ্যিক উপকরণ গুলিকে ও আধ্যাত্মিক সাধনার অঙ্গ করে নিল।
এইরূপ গুরুতর আত্ম বিচ্ছেদের উচ্ছৃ্খংলতার মধ্যে মানুষ চিরদিন বাস করতে পারে না। এই অবস্থায় মানুষ কেবল কিছুকাল পর্যন্ত নিজের প্রকৃতির একাংশের তৃপ্তি সাধনের নেশায় বিহব্বল থাকতে পারে। কিন্তু সর্বাংশের ক্ষুধা একদিন না জেগে উঠে থাকতে পারে না। -দেহে- প্রাণে- অন্তরে তখন জেগে উঠে আকুল আকুতি।
পৃথিবীর মানুষ তার দুর্গতি দুর্গের, যে রুদ্ধ দ্বারে, শতাব্দীর পর শতাব্দী, যাপন করেছে আপনার ধর্মকে, সমাজকে, আপনার আচার ব্যবহারকে কেবলমাত্র, আপনার কৃত্রিম গুলির মধ্যে, বেষ্টিত করে বসে রয়েছে সেই দ্বার, বাইরের পৃথিবীর  প্রবল আঘাতে আজ ভেঙ্গে পড়েছে। আজ আমার সকলের কাছে প্রকাশিত পড়েছে, সকলের সঙ্গে আজ আমাদের নানা প্রকার ব্যবহারে আসতে হয়েছে।
আজ আমাদের যেখানে চরিত্রের দীনতা, জ্ঞানে সংকীর্ণতা, হৃদয়ের সংকোচ, যেখানে মুক্তিহীন আচারের দ্বারা আমাদের শক্তি প্রয়োগের পথ পদে পদে বাধাগ্রস্ত হয়ে উঠেছে, সেখানেই লোক ব্যবহার ও প্রথম শক্তিমানের উপাসনায়, মানুষের সঙ্গে মানুষের দুর্ভেদ্য ব্যবধান আমাদের  শতখন্ড করে দিচ্ছে, সেইখানেই আমাদের আঘাতের পর আঘাত, লজ্জার পর লজ্জা পেতে হচ্ছে। ফলে, অন্তরের সঙ্গে বাহিরের, আচারের সঙ্গে ধর্মের, জ্ঞানের সঙ্গে ভক্তির, বিচারের শক্তির সঙ্গে বিশ^াসের, মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রবল বিচ্ছেদ ঘটিয়ে আমাদের মনুষ্যত্বকে শত জীর্ণ করে ফেলেছে। আমরা জাতিতে জাতিতে, 
ধর্মে ধর্মে, বর্ণে বর্ণে, পারস্পরিক হিংসার খেলায় উন্মত হয়ে পড়েছি। চারিদিকে যুদ্ধ যুদ্ধ রব। মানুষে এই যে বিরোধিতা কেবল মানুষের সংকীর্ণতা। হিন্দু, মুসলমান, বোদ্ধ, খ্রিস্টান এবং উচ্চবর্ণে নিম্ন বর্ণে ভেদরেখা সেই সঙ্গে অস্পৃশ্যতা আমাদের মনুষ্যত্বকে বিনাশ করছে। সকল দৈনদশার অবসান ঘটিয়ে আমাদের মানবজাতিকে যথার্থ সত্য ও চেতনার দ্বারার জাগরিত করতে হবে।
সারা বিশে^ এখন এক অস্থির সংকটময় পরিস্থিতি চলছে। জাতিতে- জাতিতে, ধর্মে- ধর্মে, মানুষে- মানুষে, সংঘাত হিংসা-প্রতিহিংসায় জগৎ আজ অসহিষ্ণু। স্থিতপ্রজ্ঞ, ধী-শক্তি গুণ সম্পন্ন মানুষের আজ বড় অভাব। যারা বিশ^কে আলোকিত করে উন্নত মানবসভ্যতা গড়বে। মুক্তিবুদ্ধি, সু-বিবেচনা, আধুনিক জ্ঞান ও বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে মানুষেই পারে প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণ করতে। থিওসফিক্যাল সোসাইটি মুক্ত-বুদ্ধি ও আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র।
উচ্ছ্বঙ্খল কাল্পনিকতা ও যুক্তিবিচারহীন আচারের দ্বারা, আমাদের জ্ঞানের ও কর্মের ক্ষেত্রে, যেন স্তব্দ হয়ে পড়েছে। আমাদের মঙ্গলের পথ, সর্বত্রই একান্ত বাধাগ্রস্থ হয়ে উঠেছে। সকল প্রকার অদ্ভুত, অমূলক, অসংগত বিশ^াস অতি সহজেই আমাদের চিত্তকে জড়িয়ে ফেলেছে।
সেই জন্যে, আমরা দুর্গতির ভয়সংকুল, সুদীর্ঘ অমবস্যার রাত্রিতে, দুঃখ- দারিদ্র্য অপমানের ভিতর দিয়ে, কেবলই নিজের অন্ধতার চারিদিকে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
হে শান্ত, হে মঙ্গল, আজ আমাদের পূর্বাকাশের তোমরা অরুণরাগ দেখা দিয়াছে, আলোক বিকাশের পূর্বেই দুটি একটি করে ভক্তবিহঙ্গ জাগ্রহ হচ্ছে। আজ আমরা দেশের নব উদ্বোধনে এই শুভমুহুর্তে, মঙ্গল পরিণামের প্রতি দৃঢ় বিশ^াসকে শিরোধার্য করে, তোমার জ্যোতিময় কল্যাণসূর্যের, নবীন আশায় তোমাকে আনন্দময় অভিবাদনের দ্বারা অভিনন্দিত করি।













সর্বশেষ সংবাদ
ঈদুল আজহা ৭ জুন
কুমিল্লায় বাহার-সূচির বিরুদ্ধে আরো এক হত্যা মামলা
বাংলা একাডেমি নজরুল পুরস্কার পাওয়ায় বিশিষ্ট নজরুল গবেষক প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হককে সংবর্ধনা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
দখলে-দূষণে মিতল্লা খাল, বর্ষায় ভোগান্তির আশঙ্কা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় মা ও ভাবীকে হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লার বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুল খালেক আর নেই
কুমিল্লায় জন্মবার্ষিকীর সমাপনী অনুষ্ঠিত
শিশু মৃত্যুর এক বছর পর মরদেহ উত্তোলন
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২