বিএনপির
প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা’ ঘোষণা
দেওয়ার অভিযোগে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পুনঃতদন্ত চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিবির জমা দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য তারিখ
ঠিক করা ছিল। তবে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম
মামলাটি পুনরায় তদন্তে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক এ এম জুলফিকার
হায়াত আগামী ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন রেখেছেন বলে জানিয়েছেন
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া।
জিয়াউর রহমানকে ‘জাতির পিতা’
ঘোষণার অভিযোগে দায়ের করা এ মামলায় গত ২ ডিসেম্বর সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল
করেন তদন্ত কর্মকর্তা, ডিবি পুলিশের (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম)
উপ-পরিদর্শক হাসানুজ্জামান। তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করা হয় সেখানে।
ঢাকার
অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন গত ১৭
জানুয়ারি অভিযোগপত্রে ‘দেখিলাম’ লিখে স্বাক্ষর করেন। এরপর মামলাটি বিচারের
জন্য সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ
শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
জাহিদুল ইসলাম ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় এই মামলা
দায়ের করেন।
সেখানে বলা হয়, “বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে লন্ডনে
আয়োজিত এক কর্মীসভায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্যের
একপর্যায়ে বলেন, ‘আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি
জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু
বাঙালি জাতি না, বাঙালিসহ ৫৫ হাজার ১২৬ বর্গমাইলের মধ্যে যতগুলো জাতি বাস
করে- যারা বাংলাদেশি জাতির পরিচয় বহন করে, যারা নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে
পরিচয় দেয়, সেই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জাতির পিতা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির
পিতা। আমরা কি আজ সবাই মিলে এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারি? তাহলে আজকে থেকে
সিদ্ধান্ত হল- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির
পিতা’।”
মামলায় বলা হয়, “কর্মীসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক
রহমান বাংলাদেশে চলমান স্থিতিশীল পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে এমন
মনগড়া মিথ্যা তথ্য সম্বলিত উদ্ভট যুক্তি দেন। তিনি জাতির পিতাকে নিয়ে
বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করেছেন।”
সম্পূরক
অভিযোগপত্রে বলা হয়, তারেক রহমান ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালের
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/২৫/২৯/৩১ ধারার অপরাধ করেছেন, ডিবির তদন্তে তা
‘প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত’ হয়েছে।