দিনব্যাপী
আন্দোলন, চেম্বারে তালা ও রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখার মধ্যে রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ডিন পদত্যাগ করেছেন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় এক
সভায় তারা দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের
জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার।
এ বিষয়ে আখতার
হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা শিক্ষার্থী ও ডিনদের সাথে আলোচনা করেছি। সেখানে
ডিনরা তাদের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে সোমবার (২২
ডিসেম্বর) হয়তোবা উপাচার্য একটা সিদ্ধান্ত জানাবেন।
পদত্যাগ করা ছয় ডিন
হলেন আইন অনুষদের অধ্যাপক ড. আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদের
অধ্যাপক ড. নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. এ এস এম
কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্লাহ,
প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক ড. বিমল কুমার প্রামাণিক ও ভূবিজ্ঞান অনুষদের
অধ্যাপক ড. এএইচএম সেলিম রেজা।
এদিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এসএম
এক্রাম উল্ল্যাহ বলেন, আজ কী হয়েছে সেটা জানি না, তবে আমরা দায়িত্ব পালন
করতে ইচ্ছুক না বলে জানিয়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও
তিনি কোনো সাড়া দেয়নি।
এর আগে আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনের পদত্যাগ দাবিতে
রোববার সকাল ১০টার দিকে ডিনস কমপ্লেক্সে যান শিক্ষার্থীরা। পরে ডিনস
কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভবনে অবস্থিত এই ডিনদের চেম্বারে তালা দেন তারা। তবে
এদিন ডিনদের কেউ বিভাগের শিক্ষক ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন না।
পরে দুপুর
আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে এসে তাদের দাবি জানান। এ সময়
শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল দাবি আদায়ের আগে রেজিস্ট্রার
ভবন ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরসহ
উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর দপ্তরেও তালা ঝুলিয়ে দেন।
প্রায় আধা ঘণ্টা
তালাবদ্ধ রাখার পর তালা খুলে দেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য,
প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভায় বসেন। সেখানে
কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাতে আরেকটি সভা ডাকা হবে বলে ওই সভা সমাপ্ত ঘোষণা
করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন,
সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হয়। এর মধ্যে ১২টি অনুষদের ডিন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি হলুদ প্যানেল থেকে
ছয় প্রার্থী নির্বাচিত হন। গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ডিনদের নির্ধারিত
মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে উপাচার্য ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী
এসব ডিনের নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত স্ব-পদে থাকার নির্দেশ দেন।
