বাংলাদেশ
প্রাইভেট মাদ্রাসা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ বছরের জাতীয়
মেধা মূল্যায়ন ও হিফজ বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে ঈর্ষান্বিত
সাফল্য অর্জন করেছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার জনপ্রিয় দ্বীনি শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান আল-ইসরা মাদরাসা। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলাধীন বিভিন্ন উপজেলার
(লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া, মনোহরগঞ্জ) প্রাইভেট মাদরাসা থেকে বৃত্তি
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে
মাদরাসাটি।
এবছর আল-ইসরা মাদরাসা থেকে ১২০ জন শিক্ষার্থী মেধা মূল্যায়ন ও
হিফজ্ বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৫ জন
ট্যালেন্টফুলসহ সর্বমোট ৭৮ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছেন। এছাড়া হিফজ্
বিভাগ থেকে ১৭ জন অংশগ্রহণ করে ১৪ জন ট্যালেন্টফুলসহ শতভাগ শিক্ষার্থী
বৃত্তি পেয়েছেন।
বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে মাদরাসাটি।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুরস্থ
আল-ইসরা মাদরাসার মিলনায়তনে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও মাদরাসার
শিক্ষকদের অংশগ্রহণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া মাদরাসার
বার্ষিক পরীক্ষায় বিভিন্ন শ্রেণিতে ১ম,২য়, ৩য় স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ
শিক্ষার্থীদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আল-ইসরা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা
মাছুম বিল্লাহ মুহাজিরের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তব্য রাখেন লালমাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন আক্তার শিফা।
আল-ইসরা
মাদরাসার শিক্ষক মুজাম্মিল ইবনে মুসলিম ও লোকমান গাজীর যৌথ সঞ্চালনায়
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত
আক্তার, শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ইমরান মাজহার, বৃত্তি পাওয়া
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অনূভুতি প্রকাশ করেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী
নাবিলা শাহরিন রূপা প্রমুখ।
আল-ইসরা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাছুম
বিল্লাহ মুহাজির বলেন, "আল-ইসরা মাদরাসার একযুগ পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে
মাদরাসা সবচেয়ে বড় সাফল্য বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল আমার কাছে সবচেয়ে বড়
প্রাপ্তি। বৃত্তির এই ফলাফল আমি আমার শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাছে উৎসর্গ
করলাম। আমার শিক্ষকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের পরিশ্রমের ফল আল্লাহ
আপনাদের দিয়েছেন। আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য যে
আগ্রহ যে কঠোর পরিশ্রম দেখেছি সেটিই তাদেরকে সফলতা এনে দিয়েছে। ইনশাআল্লাহ
আগামীতে যতজন বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে শতভাগ সফলতা অর্জন করাই হবে
আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে আমাদের অভিভাবকদের আরও বেশি আন্তরিক হতে
হবে। আমার সকল শিক্ষার্থীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।"
লালমাই
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন আক্তার শিফা বলেন, "বৃত্তি প্রাপ্ত সকল
শিক্ষার্থীকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ১২০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৮
জন বৃত্তি পাওয়া এটি একটি অভাবনীয় সাফল্য। এই সাফল্যের পিছনের অবদান অবশ্যই
আল্লাহর রহমত, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, অভিভাবকদের সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের
কঠোর পরিশ্রম। শিক্ষার্থীদের অবদান সবচেয়ে বেশি কারণ তারা খাতায় লিখেছে।
খাতায় লিখাটা অনেক কষ্টের। আজকের এই সংবর্ধনার মাধ্যমে তোমরা ভবিষ্যতেও আরও
ভালো ফলাফল করার জন্য উৎসাহ পাবে। তোমাদের বাবা-মা তোমাদের নিয়ে গর্ব
করবে। তোমাদের জন্য মাদরাসা সুনাম আরও বাড়বে। জীবনের প্রত্যেকটি ধাপের
সফলতা আমাদের পরবর্তী ধাপকে সহজ করে দেয়। শিক্ষার্থীদের কাছে আমার আহবান
থাকবে তোমরা ইলমে দ্বীনের শিক্ষায় আলোকিত মানুষ হয়ে দেশ ও জাতীর কল্যাণে
কাজ করবে।"
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলওয়াত করেন হিফজ্
বিভাগের ছাত্রী মিলি আক্তার ও হিফজ্ বিভাগের ছাত্র হাফেজ আবদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের মধুর কন্ঠে কোরআন তিলওয়াত, ইসলামী
সঙ্গীত পরিবেশন ছিলো মনোমুগ্ধকর। অনুষ্ঠান শেষে মাদরাসার সফলতা ও
শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন
হাজতখোলা কারীয়ানা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হোসাইন আহমেদ।
