কুমিল্লার
লালমাই উপজেলার জগতপুর গণকবরের সর্বশেষ স্মৃতি চিহ্নটিও হারিয়ে যাচ্ছে।
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক ফোর লেনে সম্প্রসারণের সময় গণকবরের উপর
দিয়েই নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়। সেই সময়ে সড়ক নির্মাণ শ্রমিকরা গণকবরের
সাইনবোর্ডটি গুড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় একাধিক মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলে
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা
ভারতীয় মিত্রবাহিনীর নেতৃত্বে ভুশ্চি থেকে উৎসবপদুয়া ও হরিশ্চর হয়ে লাকসাম
যাচ্ছিল। পথিমধ্যে মিত্রবাহিনীর কাছে খবর আসে, লাকসাম থেকে বাসযোগে
রাজাকাররা কুমিল্লার দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। মিত্রবাহিনী হরিশ্চর রেললাইনের
(ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ) পূর্ব পাশে পৌঁছতেই কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক
মহাসড়কের হরিশ্চরে একটি কুমিল্লামুখী বাস দেখতে পায়।
ওই সময়
মিত্রবাহিনীর সদস্যরা বাসটিকে লক্ষ্য করে ব্লান্ডার সাইড নিক্ষেপ করে। দগ্ধ
হয়ে সাথে সাথে বাসে থাকা সকল যাত্রী মারা যায়। মৃতদের মধ্যে কয়েকজনের
আত্মীয়স্বজনরা এসে লাশ নিয়ে গেলেও বেশিরভাগ লাশই বেওয়ারিশ ছিল। পরে ওই দিন
বিকালে স্থানীয় জগতপুর গ্রামের আইউব আলী, আনছর আলী, রুস্তম আলী, কোরবান
আলীসহ কয়েকজন মিলে সড়কের পাশে গর্ত খুঁড়ে গণকবর দেয়। স্থানীয়ভাবে প্রচার
রয়েছে, নাঙ্গলকোটসহ দক্ষিণাঞ্চলের কিছু ব্যবসায়ী দোকানের মালামাল ক্রয়ের
জন্য ওই বাসযোগে কুমিল্লা চকবাজার যাচ্ছিলেন। কিন্তু ওই ঘটনার
প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলার প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা দ্বীন
মোহাম্মদ বলেন, আমাদের কাছে খবর ছিল বাসটিতে রাজাকার ছিল। কিন্তু পরে
শুনেছি বাসটিতে সাধারন মানুষ ছিল।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে
তাহমিনা মিতু বলেন, আমি সদ্য যোগদানের পর গণকবরের স্মৃতি চিহ্ন নেই, এমন
একটি সংবাদ দেখতে পাই। আশা করি খুব শীঘ্রই গণকবরের স্থানে স্মৃতি চিহ্ন
রক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
