কুমিল্লার
সদর দক্ষিণ উপজেলার মধ্যম আশ্রাফপুর এলাকায় নির্মম হামলার শিকার হয়ে
মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম
(রানা)। থানায় অভিযোগের পরও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ না
নেওয়ায় গভীর ক্ষোভ ও হতাশায় দিন কাটছে তার মা পুতুল বেগমের। গত ৩ ডিসেম্বর
রাতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে মধ্যম আশ্রাফপুর সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের সামনে এফআইআরভুক্ত আসামিরা আরিফুলের পথ রোধ করে। মুহূর্তের
মধ্যে তারা চাপাতি, সুইচগিয়ার, দা-ছেনি ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়।
এতে আরিফুলের বাম হাতের কবজি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শরীরের বুকে,
পিঠে, মুখে ও বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য কোপের চিহ্ন রয়েছে। তার সঙ্গে থাকা
সহকর্মী ইকবাল হোসেনও গুরুতর আহত হন।
হামলাকারীরা আরিফুলের কাছে থাকা
সংগ্রহ করা ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে
ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক্স হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে স্থানান্তর করা
হয়।
আহত আরিফুল সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের
শিক্ষার্থী এবং ‘ইমামা কনস্ট্রাকশন’-এর মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কর্মরত
ছিলেন। প্রতিদিনের মতো ৩ ডিসেম্বর তিনি চৌয়ারা, সুয়াগাজী, লালমাই, কোটবাড়ি ও
বিজয়পুর এলাকা থেকে টাকা সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরছিলেন।
৭ ডিসেম্বর সদর
দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তার মা পুতুল বেগম (৫৫)। মামলায়
এফআইআরভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আমির হোসেন, মো. ইব্রাহিম, মো. ইকরাম,
মামুন মিয়া, হালিম মিয়া, পারভেজ, মিজান মিয়া, কাজী নয়ন, হাসান, মনু মিয়া
এবং আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে দলবদ্ধ হয়ে আরিফুলকে
হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে ১২ দিন অতিবাহিত
হলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামিরা প্রকাশ্যে এলাকায়
ঘুরে বেড়ালেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে
অভিযোগ পরিবারের।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা পুতুল বেগম বলেন,আমার ছেলের হাত
কেটে ফেলল, মেরে ফেলার চেষ্টা করল, ৫ লাখ টাকা নিয়ে গেল, তারপরও পুলিশ নড়ছে
না। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও কাউকে ধরছে না। চিকিৎসা, ওষুধ, যাতায়াত
সব মিলিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। আসামিরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর আমরা
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরিবারের দাবি দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির মাধ্যমে আরিফুলের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক।
