
কুমিল্লা
নগরীর ২ নং ওয়ার্ড (ছোটরা) এলাকার খ্রিস্টান কবরস্থানের সামনের ডাস্টবিনের
ময়লা-আবর্জনা এখন শুধু স্থানীয়দের জনজীবনকেই অতিষ্ঠ করেনি, তা বাড়িয়ে
দিয়েছে ডেঙ্গু মহামারীর প্রকোপের ঝুঁকিও। ডাস্টবিন উপচে আবর্জনা এখন
রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ দিন পরিষ্কার না হওয়ায় এখানে
তৈরি হয়েছে মশা-মাছি ও দুর্গন্ধের এক অভয়ারণ্যন। এই পরিস্থিতি নিয়ে চরম
ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী, বাসিন্দা এবং পথচারীরা।
গতকাল
রবিবার (৭, ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার
কথা থাকলেও অধিকাংশ আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সরাসরি রাস্তার ওপরে। এমনকি পচা
মরা পশু-পাখিও ফেলা হচ্ছে এই উন্মুক্ত আবর্জনার স্তূপে।
স্থানীয়
ব্যবসায়ী বলেন, "আমার দোকানের সাথে ডাস্টবিনটা থাকায় ব্যবসার কাজে খুব
অসুবিধা হচ্ছে। মশা-মাছি এত বেশি যে কাস্টমাররা দোকানে আসতে চায় না।
পরিষ্কার করা হয় খুব অনিয়মিত—কখনও দুই-তিন দিন, কখনও চার-পাঁচ দিনও হয়ে
যায়। এভাবে চলতে থাকলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।" তিনি আরও বলেন,
অনেক কাস্টমার অভিযোগ করেন কেন ডাস্টবিনটা এখানে ছোট করে না। ব্যবসায়ী
কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ময়লা যেন ডাস্টবিনের বাইরে না ফেলা হয় এবং
ডাস্টবিনটি ছোট আকারে পশ্চিম দিকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
স্থানীয়
বাসিন্দা জানান, "বাসার পাশেই ডাস্টবিন হওয়ায় অনেক দুর্গন্ধ ছড়ায়,
মশা-মাছির উপদ্রবে চলাফেরা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।" আরও জানান, ময়লা ফেলার এই
প্রবণতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাস্তার প্রায় অর্ধেকের বেশি অংশ
আবর্জনায় ভরে গেছে, ফলে গাড়ি চলাচলে তীব্র সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন,
"এখানে মরা পশু-পাখি ফেলার কারণে দুর্গন্ধ আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। সিটি
কর্পোরেশনের লোক অনেকদিন পরিষ্কার করে না। ডেঙ্গু মশার মেইন উৎপাদন বোধয়
এখান থেকেই হয়।" তিনি অবিলম্বে ডাস্টবিনটি দূরে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।
অটো
চালক জানান, "এলাকার লোকেরা রাস্তা পর্যন্ত ময়লা ফেলায়। আজ ৬-৭ দিন যাবত
কেউ এই ময়লা পরিষ্কার করে না। রোডের আশেপাশের বাসা বাড়ি থেকে যত ময়লা
আবর্জনা আছে সব রাস্তার মধ্যে ফালাই রাখে, এগুলা ২ সপ্তাহ ৩ সপ্তাহ সাফাই
করে না। কুত্তা মরুক, বিলাই মরুক রোটে-ঘাটে ফালায় রাখে, কেউ সাফাই করে না
সিটি কর্পোরেশনের কোন উদ্যোগই নাই।" আরেকজন অটো চালক বলেন, "এখানে মশা
মাছি পোকামাকড়, ময়লা আবর্জনায় দুর্গন্ধে গাড়ি লইয়া দাঁড়ানো যায় না। সিটি
কর্পোরেশনের নিয়ম একদিন পরপর পরিষ্কার করার, কিন্তু এ পর্যন্ত এটা কেউ
কিছু করে নাই। এভাবেই আজকে ১০ দিন পড়ে আছে।"
কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত
পদক্ষেপের আহ্বান ভুক্তভোগী সকল মহল থেকে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে
উদ্দেশ্য করে একটাই দাবি জানানো হয়েছে—শহরের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায়
দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
