কুমিল্লার
দেবিদ্বারের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অভিযুক্ত
তোফায়েল হায়দারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী আন্দোলনকারী
শিক্ষার্থীরা।গত বছরের ৪ আগস্ট দেবিদ্বার পৌর সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার
শান্তিপূর্ণ মিছিলে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়।
এতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক রুবেল গুলিতে
নিহত হন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। ওইদিন
প্রকাশ্যে মহড়ায় তোফায়েল হায়দার অংশ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থী ও
স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তোফায়েল হায়দার একজন শিক্ষক হয়েও
প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং হামলাকারীদের পক্ষে
সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। হামলার পর তার একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও আন্দোলনে অংশ না নিতে কলেজের প্যাডে শিক্ষার্থীদের
উদ্দেশে বিতর্কিত নোটিশ জারি করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। শেখ
হাসিনার সরকারের পতনের পর তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে শিক্ষার্থীদের
আন্দোলনের মুখে তাকে কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
দীর্ঘদিন
আত্মগোপনে থাকলেও বর্তমানে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় মাঝে
মাঝে এলাকায় অবস্থান করতে দেখা যাচ্ছে তোফায়েল হায়দারকে—এমন অভিযোগ
স্থানীয়দের।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তানজিম রহমান ভূইয়া
বলেন, “তোফায়েল হায়দার স্যার একজন শিক্ষক হয়েও আমাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে
দেবিদ্বার নিউ মার্কেট চত্বরে প্রকাশ্যে অবস্থান নেন। দীর্ঘদিন লুকিয়ে
থাকার পর এখন তিনি আবারো নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তাকে এলাকায় ঘুরতে
দেখা গেলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আশ্রয়–প্রশ্রয়ের
কারণেই তোফায়েল হায়দার এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের অভিযোগ, কলেজের অধ্যক্ষ
পরিচয় ব্যবহার করে তিনি অতীতে বিভিন্ন ক্ষমতাসীন নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে
তুলে অবৈধভাবে সম্পদ বাড়িয়েছেন।
এ বিষয়ে তোফায়েল হায়দারের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
দেবিদ্বার
থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সংঘটিত হত্যা
মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলমান। যেসব ব্যক্তি ওই সময়
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল-ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করে
গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
