রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার চান্দিনায় সড়ক ও খালের কিনারায় বেড়ে উঠা সরকারি গাছ নিজের দাবি করে কেটে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনা প্রশাসনকে অবহিত করার তিন সপ্তাহেও কার্যত: কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 
উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের খিরাসার-মুইরারা থেকে এতবারপুর সাওরাতলী সড়কের খিরাসার মোহনপুর মাস্টার বাড়ী সংলগ্ন সড়কের পাশের প্রকান্ড দুইটি রেইনট্রি গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠে স্থানীয় খোরশেদ আলম ফকির নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আরও ২টি গাছ কাটারও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। 
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়-  ওই সড়ক ও সড়কের পাশের খালের কিনারায় সারি সারি অনেক গাছ রয়েছে। এর মধ্যে গত মাসের ২০ অক্টোবর প্রকান্ড ২টি রেইট্রি গাছ কেটে নেয় খোরশেদ আলম ফকির। এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর ঘটনাটি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা বন বিভাগকে অবহিত করা হয়।  পরে উপজেলা বন বিভাগের পরিদর্শক মো. শাহজাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এছাড়া চান্দিনা (পূর্ব) ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবু সাঈদও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তবে কেউই কার্যত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
উল্টো ওই দুষ্কৃতকারীকে গাছগুলো তার নিজের জায়গায় দাবি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেয় স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নিয়োজিত কর্মচারীরা। ফলে সার্ভেয়ার নিয়োগ সহ নানা অজুহাতে গাছ কাটার বিরুদ্ধে কোন পদপেক্ষপ গ্রহণ না করে কালক্ষেপণ করছেন প্রশাসন। এতে জনমনে প্রশাসনের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত খোরশেদ আলম ফকির বলেন, এই গাছগুলো আমি লাগিয়েছি। এগুলো আমার জায়গার গাছ।
কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন- ১৫ ফুট প্রস্থের সড়কের পাশে খাল।  সড়ক ও খালের মাঝে ব্যক্তির জায়গা থাকে কিভাবে? এ গাছগুলো সম্পূর্ণ সরকারি জায়গায়। খোরশেদ আলম ফকির নিজের দাবি করে গাছগুলো কেটে নেয়। 
উপজেলা বন বিভাগের পরিদর্শক মো. শাহজাহান জানান, আমি যেদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি সেদিন ২টি গাছ কাটা অবস্থায় দেখেছি। বাকী ২টি গাছ না কাটার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। রাস্তা এবং খাল এর মাঝখানে গাছগুলো ছিলো। কিন্তু খোরশেদ ফকির এগুলো তাদের জায়গার গাছ বলে দাবি করেছেন। ম্যাপ দেখে পরিমাপ করে সিন্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমি ইউএনও স্যারকে অনুরোধ জানিয়েছি।
চান্দিনা (পূর্ব) ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে, ম্যাপ ও খতিয়ান দেখে মাপতে হবে। খোরশেদ ফকির আবেদন করেছেন সার্ভেয়ার এর জন্য। 
এব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আল নুর বলেন, গাছ কেটে নিয়েছে এমনটা আমার জানা নেই। সার্ভেয়ার যাবে। সরকারি গাছ হলে আইনী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।